কলকাতা হাইকোর্ট।
আগামী মাস থেকেই জলপাইগুড়িতে চালু হচ্ছে কলকাতা হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চের কাজ। তার আগে বাগডোগরা বিমানবন্দর থেকে শিলিগুড়ি হয়ে জলপাইগুড়ি পর্যন্ত পৌঁছতে ২৭ নম্বর জাতীয় সড়কের কাজ যুদ্ধকালীন তৎপরতায় শেষ করতে নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বিশ্বনাথ সমাদ্দার ও বিচারপতি অরিন্দম মুখোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ শুক্রবার এই নির্দেশ দিয়েছে।
বহরমপুর থেকে ডালখোলার মধ্যে বিভিন্ন জায়গায় ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কাজ আটকে রয়েছে— এই প্রশ্ন তুলে হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিলেন আইনজীবী কল্যাণ চক্রবর্তী। এ দিন সেই মামলার শুনানির সময় কেন্দ্রের প্রজেক্ট ডিরেক্টরকে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ শেষ করার নির্দেশ দেয় ডিভিশন বেঞ্চ। একই সঙ্গে ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, ওই রাস্তা সম্প্রসারণের কাজে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে (এনএইচএআই) সাহায্য করুক রাজ্য। এই ক্ষেত্রে যদি জমি হস্তান্তর নিয়ে কোনও সমস্যা তৈরি হয়, তা হলে এনএইচএআই যেন সরাসরি রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে, নির্দেশ ডিভিশন বেঞ্চের।
বারাসত থেকে শিলিগুড়ি পর্যন্ত জাতীয় সড়ক সংস্কার ও সম্প্রসারণের কাজ শুরু হয় ২০০৬ সালে। ১৩ বছর হতে চলল, এখনও মুর্শিদাবাদের ফরাক্কা থেকে উত্তর দিনাজপুরের ডালখোলা পর্যন্ত ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কাজ সম্পূর্ণ হয়নি। অথচ ২০১১ সালের মধ্যে তা শেষ হওয়ার কথা ছিল। কেন এই দেরি? রাস্তার অবস্থাও বেহাল। তা নিয়েই এই জনস্বার্থ মামলা করেন কল্যাণ। ডিভিশন বেঞ্চ এ দিন এনএইচএআই-এর প্রজেক্ট ডিরেক্টর দীনেশ আনসারিকে আদালতে হাজির হয়ে জানাতে বলেছিল, রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ কী পরিস্থিতিতে রয়েছে।
তাঁর হয়ে কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল কৌশিক চন্দ এ দিন আদালতে জানান, রাস্তা সম্প্রসারণের মূল কাজ হয়ে গিয়েছে। কয়েকটি জায়গায় কাজ আটকে রয়েছে। কৌশিকবাবু জানান, ফরাক্কায় চার লেনের রাস্তার কাজ ২০২১ সালে শেষ হয়ে যাবে। ফরাক্কা ব্যারাজের ভিতরে ২.৬১ কিলোমিটারের কাজ চলতি বছরের মে-জুন মাসে শেষ হয়ে যাবে। ব্যারাজ কর্তৃপক্ষ ভিতরের ওই রাস্তার সংস্কার করবেন।
কৌশিকবাবু এ দিন আদালতে জানান, দীর্ঘদিন জমি জটে আটকে ছিল সম্প্রসারণের কাজ। রাজ্যের সহযোগিতায় জমি জট কাটলেও ফের কয়েকটি জায়গায় জমিতে বসেছে দখলদারেরা। বহরমপুর বাইপাসের দু’কিলোমিটার অংশের কাজ শেষ করতে দখলদারেরা বাধা দিচ্ছে। তাই কাজ আটকে যাচ্ছে। তা শুনে রাজ্যের কৌঁসুলি জিষ্ণু চৌধুরীকে ডিভিশন বেঞ্চের প্রশ্ন, কাদের জন্য রাস্তার কাজ শেষ হচ্ছে না? রাজ্যের হাতেই আইন-শৃঙ্খলার ভার রয়েছে। রাজ্য যদি দখলমুক্ত করতে না পারে, তা হলে আদালত সিআরপিএফ-কে দখলমুক্ত করতে নির্দেশ দেবে কি না, ডিভিশন বেঞ্চ তা-ও জানতে চায় সরকারি কৌঁসুলির কাছে। সরকারি কৌঁসুলি আদালতে আশ্বাস দেন, রাজ্য পরিস্থিতি সামলে দেবে।