Sourced by the ABP
রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘অডিট’ শুরু করেছে কেন্দ্রীয় সংস্থা ‘সিএজি’ (কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল)। সম্প্রতি কলকাতা থেকে ‘সিএজি’র চার সদস্য বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাপ্ত সরকারি বরাদ্দ, আয়-ব্যয়, নিয়োগ প্রক্রিয়া, প্রশাসনিক ও পঠনপাঠন সংক্রান্ত বিষয় খতিয়ে দেখছেন তাঁরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দীপককুমার রায়ের দাবি, ‘সিএজি’ সময় দিতে না পারায় এত দিন বিশ্ববিদ্যালয়ে অডিট হয়নি। উপাচার্য বলেন, “অডিটের রিপোর্টে বিশ্ববিদ্যালয়ে অসঙ্গতি, খামতি বা দুর্নীতি ধরা পড়লে, স্বশাসিত সংস্থা হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক আধিকারিকের দাবি, অডিটের রিপোর্ট রাজ্য শিক্ষা দফতরেও জমা পড়বে।
২০১৫ সালে রায়গঞ্জ ইউনিভার্সিটি কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত হয়। ২০২২ সালে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় গ্রেফতার হওয়ার পরে, শিক্ষামন্ত্রী ও তাঁর গবেষণার ‘গাইড’ অনিল ভুঁইমালির বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য থাকাকালীন শিক্ষক ও আধিকারিক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সরব হন বিরোধীরা। অনিল বর্তমানে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতির শিক্ষকের পদে কর্মরত। তিনি বলেন, “রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ে অডিট শুরু হয়েছে জানি। আমাকেও মাঝে মাঝে ফোন করা হয়।” অনিলের দাবি, উপাচার্য থাকাকালীন তিনি সরকারি নির্দেশ ও নিয়ম মেনে স্বচ্ছ ভাবে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করেছেন।
গত কয়েক বছরে বিজেপি প্রভাবিত ছাত্র সংগঠন এবিভিপি, বিজেপি, কংগ্রেস ও বামেরা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ, পিএইচ ডি-র যোগ্যতা দেওয়া ও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশের পদোন্নতি প্রক্রিয়া-সহ নানা বিষয়ে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সরব হন। রায়গঞ্জের বিদায়ী বিজেপি সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরীর নেতৃত্বে বিক্ষোভও হয়। দিন কয়েক আগে, এবিভিপির তরফে রেজিস্ট্রার দুর্লভ সরকারের যোগ্যতা ও নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন তুলে তাঁর অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ হয়। যদিও দুর্লভের দাবি, ‘ভিত্তিহীন’ অভিযোগ তুলে তাঁকে বদনাম করার চেষ্টা হচ্ছে। তিনি আইনের পথে যাওয়ার চিন্তাভাবনা করছেন।”
উত্তর দিনাজপুর জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোহিত সেনগুপ্তের দাবি, “নিরপেক্ষ ভাবে ‘সিএজি’-কে অডিট করতে দেওয়া হলে ও নথি বিকৃত করা না হলে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ, আর্থিক তছরুপ, পিএইচডি-সহ নানা দুর্নীতির অভিযোগে রাঘব বোয়াল ধরা পড়বেন।” বিজেপির জেলা সভাপতি বাসুদেব সরকারের দাবি বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ ছাড়াও, বাংলাদেশি নাগরিরকে বেআইনি এইচ ডি দেওয়া, জমি সংক্রান্ত, ভবন তৈরির কাজে আর্থিক দুর্নীতি হয়েছে। তিনি বলেন, “দুর্নীতি প্রমাণ করতে ‘সিএজি’ নথি সংগ্রহ ও তদন্ত করবে বলে আমরা আশাবাদী।”