ভুটানের টাকাতেই চলছে বিকিকিনি। ছবি: নারায়ণ দে
জয়গাঁর বউবাজার থেকে ফল কিনলেন এক ক্রেতা। দু’শো পঁয়তাল্লিশ টাকা দামও মেটালেন।
দু’টি একশো টাকা, দু’টি কুড়ি টাকা ও একটি পাঁচ টাকার নোট দিয়ে। সমস্যা হল না বিশেষ। সারা দেশে খুচরোর আকাল চললেও ভারত ভুটান সীমান্ত শহর জয়গাঁয় এই সমস্যা তেমন নেই। কারণ একটাই। জয়গাঁর বাজার চলছে ভুটানের টাকার উপর। মাছ, ফল, শাক সবজি বা নিত্য প্রয়োজনীয় সমস্ত জিনিসের কেনাকাটা চলছে ভুটানের টাকায়।
সরকারি ভাবে এ দেশে ভুটানের টাকা নিষিদ্ধ। কিন্তু এই মুহূর্তে ভূটানের নোটের ভরসাতেই চলছে জয়গাঁর সাধারণ মানুষের দিন। দৈনন্দিন কেনাবেচা সবই হচ্ছে সে দেশের নোটে।
পাঁচশো ও হাজার টাকার নোট বাতিলের পর ভুটানের একশো, পঞ্চাশ, কুড়ি, দশ ও পাঁচ টাকার নোট চলছে দেদার। আলিপুরদুয়ারের জেলার ব্যবসায়ী সংগঠনগুলির বক্তব্য, হাজার ও পাঁচশো টাকার নোট বাতিলের পরে যে সমস্যা তৈরি হয়েছে তারপরে ভারতীয় একশো টাকার নোট যাদের কাছে আছে তাঁরাও বুঝে শুনে কম খরচ করছেন। ফলে গত সাত দিনে প্রায় ২০০ কোটি টাকার ব্যবসা মার খেয়েছে আলিপুরদুয়ার জেলায়। আর সীমান্ত শহর বীরপাড়া, বানারহাট, জয়গাঁয় ধীরে ধীরে বাড়ছে ভুটানে নোটে কেনাবেচা।
আলিপুরদুয়ার জেলার বিভিন্ন ব্যাঙ্কের সমন্বয়ের দায়িত্বে থাকা লিড ডিস্ট্রিক ম্যানেজার তুষারকান্তি রায় জানান, বিষয়টি তাঁদেরও নজরে এসেছে। তিনি বলেন, ‘‘সরকারি ভাবে ভারতে ভুটানের নোট নিষিদ্ধ। কিন্তু আমাদের কাছেও খবর রয়েছে ভারত ভুটান সীমান্তের বাজার গুলিতে খুচরো সমস্যা মেটাতে ভুটানের নোটে কেনাবেচা চলছে।’’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জয়গাঁয় এক ক্রেতা বলেন, ‘‘ভুটানের খুচরো নোট নিয়ে সব্জি ফল মাছ কিনতে হচ্ছে। ব্যাঙ্কে দীর্ঘ লাইন, পাঁচশো ও হাজারের নোট চলছে না। তাই ভুটানের নোটই ভরসা।’’
আলিপুরদুয়ার চেম্বার অফ কর্মাস অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রিজের সাধারণ সম্পাদক প্রসেনজিৎ দে জানান, গত কয়েক দিনে আলিপুরদুয়ার জেলায় প্রায় দুশো কোটি টাকার ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনি বলেন,‘‘অসম থেকে বহু ক্রেতা এসে কেনাকাটা করতে পারেননি। শুধু মাত্র বাণিজ্য শহর জয়গাঁয় ২০-২৫ কোটি টাকা ব্যবসা মার খেয়েছে।
ইর্স্টান ডুয়ার্স রির্সট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের কার্যকরী সভাপতি পার্থসারথি রায় বলেন ‘‘পর্যটকরা নভেম্বরের বুকিং বাতিল শুরু করেছেন। যাদের ডিসেম্বরে বুকিং তাঁরাও ফোনে খোঁজখবর নিচ্ছেন।’’ তাই পর্যটনেও আঘাত আসতে পারে বলে আশঙ্কা তাঁদের।