ফুটপাত দখলমুক্ত করতে অভিযান। শনিবার কোচবিহারের স্টেশন মোড় এলাকায়। ছবি: মুক্তাঙ্কন বর্মণ।
ফুটপাত থেকে সরে যাওয়ার জন্য বার বার প্রচার করা হয়েছে। বেঁধে দেওয়া হয়েছিল নির্দিষ্ট সময়সীমা। তা শেষ হতেই শনিবার সকাল ৮টা থেকে বুলডোজ়ার নিয়ে পথে নামল কোচবিহারের পুলিশ-প্রশাসন ও পুরসভা। উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয় সার্কিট হাউসের সামনের রাস্তা থেকে। স্টেশন মোড়, মরাপাড়া হয়ে উচ্ছেদ অভিযান চলে রাসমেলার মাঠ পর্যন্ত। সাড়ে ১২টা পর্যন্ত অভিযান চলে। সঙ্গে জানিয়ে দেওয়া হয়, ধারাবাহিক ভাবে ওই অভিযান চলবে। ওই অভিযানের সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন কিছু দোকানদার। স্টেশন মোড়ে পানের দোকান করতেন এক মহিলা। ভাঙচুরের সময় কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন, ‘‘এই দোকানের উপরেই আমাদের সংসার চলে। দোকান ভেঙে দেওয়া হল। এখন কী করে চলবে সংসার।’’
বিজেপি অভিযোগ করেছে, এ বারের লোকসভা নির্বাচনে পুরসভা এলাকায় পিছিয়ে রয়েছে তৃণমূল। সে জন্যেই কোনও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না করে, উচ্ছেদ অভিযান শুরু করা হয়। ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে নিয়ে আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দিয়েছে বিজেপি। কোচবিহার জেলা ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকেও উচ্ছেদ করা ব্যবসায়ীদের জন্য পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করার দাবি জানানো হয়েছে।
কোচবিহার পুরসভার পুরপ্রধান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, ‘‘বিজেপি যে কোনও বিষয় নিয়েই রাজনীতি করছে। ফুটপাত দখল নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন। এ ছাড়া, কোচবিহার হেরিটেজ় শহর হিসেবে গড়ে উঠছে। সে জন্য প্রশাসনের তরফে ফুটপাত দখলমুক্ত করার কাজ করা হয়েছে। যাতে সাধারণ মানুষের চলাচলে সুবিধা হয়।’’
কোচবিহার জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক বিরাজ বসু জানিয়েছেন, ওই ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনের দাবিতে প্রয়োজনে, তাঁরা রাস্তায় নামবেন। তিনি বলেন, ‘‘শহর পরিচ্ছন্ন থাকুক, এটা আমরাও চাই। তা বলে খামখেয়ালি ভাবে কিছু মানুষকে কর্মহীন করে দেওয়া যায় না। উচ্ছেদের আগে রাজ্য সরকারের উচিত ছিল, ফুটপাতের সব ব্যবসায়ীর পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা।’’
কোচবিহার জেলা ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক সূরজ ঘোষ বলেন, ‘‘ফুটপাত দখলের বিরুদ্ধে আমরা। কিন্তু বহু মানুষ সেখানে ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ করেন। এক ধাক্কায় সে সব পরিবারের রোজগার বন্ধ হয়ে যাবে। যা মানা, খুব কঠিন। আমরা চাই, প্রত্যেকের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হোক।’’