নিজস্ব চিত্র।
জটিল স্নায়ুরোগে আক্রান্ত সাত বছরের ছেলে। বেঁকে গিয়েছে হাত, পা। দাঁড়ানোর ক্ষমতা নেই। ভাই-বোন, বন্ধুরা পাশে বসে খেলনাবাটি নিয়ে খেলছে আর সে মেঝেতে শুয়ে হাত,পা ছুড়ছে। সঠিক চিকিৎসা হলে ওই একরত্তি শিশু হয়তো সুস্থ হয়ে উঠবে। কিন্তু খরচ জোগাবে কে? সরকারি সাহায্যের আশায় দিন গুনছে মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর-১ নম্বর ব্লকের মহেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের গাঙ্গনদিয়া গ্রামের বাসিন্দা হেদাতুল ইসলামের হতদরিদ্র পরিবার।
হেদাতুল পেশায় দিনমজুর। ছেলে মহম্মদ মুসাব্বিরের চিকিৎসার খরচ জোগাবার সামর্থ্য তাঁর নেই। তিনি জানান, এখনও স্বাস্থ্যসাথী কার্ড পায়নি তাঁর পরিবার। প্রতিবন্ধী সার্টিফিকেট থাকলেও ভাতা মেলে না। পরিবারের এই অনুযোগ প্রকাশ্যে আসতেই তৃণমূলকে বিঁধতে শুরু করেছে কংগ্রেস। তবে স্থানীয় প্রশাসনের তরফে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের ব্যবস্থা করে দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
স্বাভাবিক জন্মই হয়েছিল মুসাব্বিরের। কিন্তু এক বছরের মাথায় ডায়ারিয়া রোগে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে সে। ওই রোগ থেকে সুস্থ হয়ে উঠলেও শরীরে অন্যান্য জটিল ব্যাধি বাসা বাঁধতে শুরু করে। সরু হয়ে যেতে থাকে হাত, পা। স্বাভাবিকের তুলনায় বড়ো হতে থাকে মাথা। তখন থেকেই একেবারে শয্যাশায়ী তাঁর ছেলে, জানাচ্ছেন মা আজমেরী বিবি। তিনি বলেন, ছেলেকে সুস্থ করে তুলতে কলকাতাতেও নিয়ে এসেছিলেন তাঁরা। কিন্তু চিকিৎসা করাতে অনেক টাকার খরচ। তাঁর দিনমজুর স্বামীর পক্ষে অত টাকা এক সঙ্গে জোগাড় করা সম্ভব নয়। তাই সরকারের কাছেই কাতর আর্জি জানাচ্ছেন তাঁরা।
এই ঘটনার কথা জানতে পেরে হরিশ্চন্দ্রপুর ১ ব্লক বিডিও অনির্বাণ বসু বলেন, ‘‘বিষয়টি খুব দুঃখজনক। আমাদের কাছে আবেদন করলে আমরা সব ব্যবস্থা করে দেব। শিশুটির দ্রুত আরোগ্য এবং সুস্বাস্থ্য কামনা করছি।’’
তীব্র কটাক্ষের সুর চড়িয়ে কংগ্রেসের অঞ্চল সভাপতি আব্দুস শোভান বলেন, ‘‘যাঁরা কাটমানি দিতে পারে, শুধু তাঁদেরই কাজ হবে এই সরকারের আমলে। রাজ্যের নেতা-মন্ত্রীদের স্বাস্থ্যসাথী কার্ড আছে। অথচ,গরিব মানুষের নেই। ওই পরিবারের পাশে থাকার চেষ্টা করব।’’
পাল্টা তৃণমূল নেতা সঞ্জীব গুপ্ত বলেন, ‘‘দুয়ারে সরকার প্রকল্পে যাঁরা আবেদন করেছিলেন, তাঁরা প্রত্যেকেই কার্ড পেয়েছেন। এই পরিবারটি না পেয়ে থাকলে তার ব্যবস্থা করা হবে। মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীর আমলে সকল রাজ্যবাসী এই সুবিধা পাচ্ছেন। এই পরিবারও পাবে।’’