কিছু দিন আগে বিয়ে হয়েছিল সিদ্ধান্ত ছেত্রীর। স্বামীর মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছেন স্ত্রী। —নিজস্ব চিত্র।
কাশ্মীরে জঙ্গি হামলায় প্রাণ হারানো বাংলার জওয়ানের দেহ ফিরল দার্জিলিঙে। শনিবার দুপুরে বাগডোগরার সেনা ছাউনিতে এসে যখন সিদ্ধান্ত ছেত্রীর কফিনবন্দি দেহ এসে পৌঁছয়, তখন চোখে জল পরিবারের সকলের। তাঁরা একসঙ্গে গর্বিত এবং ব্যথিত। বার বার কান্নায় ভেঙে পড়ছিলেন নববিবাহিতা স্ত্রী। পরিবারের উপস্থিতিতে সেনার তরফে সম্মান প্রদান করা হল শহিদ সিদ্ধান্তকে।
পারিবারিক সূত্রে খবর, গত দু’মাস আগে শেষ বার বাড়ি ফিরেছিলেন সিদ্ধান্ত। স্বামীর কফিনবন্দি দেহ দেখে ডুকরে কেঁদে উঠলেন পরিবারের সকলে। সিদ্ধান্তের জামাইবাবু বিক্রম থাপার কথায়, ‘‘বাড়িতে সিদ্ধান্ত এবং তার দিদি, দুই ভাইবোন এবং বাবা-মা। এই ছিল সংসার। বাড়ির একমাত্র ছেলেটি চলে গেল। ওর জন্য গর্ব হচ্ছে ঠিকই। কিন্তু আমরা মর্মাহত। সদ্য ওর বিয়ে হয়েছিল। পরিবারের সবার মনোবল ভেঙে গিয়েছে৷’’
সেনা সূত্রে খবর, শুক্রবার সকালে রাজৌরি সেক্টরের অন্তর্ভুক্ত কান্দি জঙ্গলে সন্ত্রাসদমন অভিযান চালানো হচ্ছিল। আশপাশের এলাকায় চলছিল তল্লাশি। সেই সময়েই সেনা জওয়ানদের লক্ষ্য করে বোমা ছোড়া হয়। বিস্ফোরণের অভিঘাতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় দু’জনের। তাঁদের মধ্যে ছিলেন সিদ্ধান্তও। বাংলার জওয়ানের মৃত্যুতে শোকজ্ঞাপন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শুক্রবার সকালে রাজৌরি সেক্টরের অন্তর্ভুক্ত কান্দি জঙ্গলে সন্ত্রাসদমন অভিযান চালানো হচ্ছিল। আশপাশের এলাকায় চলছিল তল্লাশি। সে সময়ই সেনা জওয়ানদের লক্ষ্য করে বোমা ছোড়া হয়। মৃত্যু হয় সিদ্ধান্তের। —নিজস্ব চিত্র।
২০১৯ সালে প্যারাকমান্ডোতে যোগ দিয়েছিলেন ডাকাবুকো সিদ্ধান্ত। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই সেনাবাহিনীতে নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করে ২০২১ সালে প্যারা এসএফ-এ নিযুক্ত হন ২৫ বছরের ওই যুবক। সন্ধ্যায় বিজনবাড়ির কিজম বস্তিতে সিদ্ধান্তের মৃত্যুর খবর আসার পর থেকেই শোকস্তব্ধ ওই এলাকা। বাড়ির ছেলেকে শেষ বার চোখের দেখা দেখতে চাইছেন প্রতিবেশী এবং বন্ধুবান্ধবরা।