নতুন বছরের শুরুতেই বাগডোগরা বিমানবন্দরের সম্প্রসারণের জন্য নতুন জমির ব্যবস্থার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেল। গত বছরের শেষেই এয়ারপোর্ট অথারিটি অব ইন্ডিয়া (এএআই) বোর্ডের তরফে নতুন ১০৪ একরের জমির জন্য ২৫ কোটি টাকা বরাদ্দের ঘোষণা করা হয়। বিমানবন্দর সূত্রের খবর, সম্প্রতি রাজ্য সরকারের তরফে এএআই-এর কাছে নতুন টার্মিনালের নকশা, পরিকল্পনার রিপোর্ট চেয়ে পাঠানো হয়। কয়েক দিন আগে তা পাঠানোর পর সরকারের তরফে পরিকল্পনা খতিয়ে দেখার পাশাপাশি, প্রস্তাবিত টার্মিনালের জন্য জমির, এএআই-এর প্রতিনিধি এবং জেলা প্রশাসনের যৌথ পরিদর্শনের পরিকল্পনা তৈরি হয়েছে। আগামী মাসের মধ্যে তা সম্পূর্ণ হলে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের পছন্দের জমি কী ভাবে অধিগ্রহণ করে এএআই-কে হস্তান্তর করা যায়, তা ঠিক হয়ে যাবে।
৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের এক পাশ ধরে একটি চা বাগানের সরকারি লিজের জমি আপাতত এএআই-র পছন্দের তালিকার প্রথমে রয়েছে। বাগডোগরা বিমানবন্দর অধিকর্তা সুব্রমণী পি বলেন, ‘‘নতুন জমি কী ভাবে কেনা হবে, তার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। সরকার আমাদের কাছে নতুন নকশা-সহ বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়েছিল, আমরা তা দিয়ে দিয়েছে। এ বার যৌথ পরিদর্শনের বিষয়টি চূড়ান্ত হতে চলেছে।’’
বাগডোগরায় বিমান ও সেই সঙ্গে যাত্রীদের ভিড় বাড়তে থাকায় বর্তমান টার্মিনালে ‘পিক আওয়ারে’ স্থান সঙ্কুলান প্রায় অসম্ভব। ২০১৮ সালে মার্চে যাত্রী সংখ্যা সাড়ে ২২ লক্ষ ছাড়িয়েছে। এখন রোজ গড়ে ৩৩ জোড়া বিমান যাতায়াত করলেও আগামী তিন মাসের মধ্যে তা ৩৫ জোড়া পার করবে। এতে রোজ ৭০টি বিমানের যাত্রীদের পরিষেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে কর্তৃপক্ষকে। টার্মিনালে ঘণ্টায় কমবেশি ৭০০ যাত্রীকে রাখার ব্যবস্থা করা গেলেও সংখ্যাটা বর্তমানে ঘণ্টায় ৩ হাজার ছাড়িয়ে যাচ্ছে। তাতেই দেখা দিয়েছে বিপত্তি। বিমান সংস্থাগুলি নিয়মিত নতুন নতুন রুটের প্রস্তাব নিয়ে আসলেও বর্তমানে সকালে এবং সন্ধ্যা ছাড়া তাদের সময়সূচি দেওয়া যাচ্ছে না। এ ভাবে গত কয়েক মাসে মুম্বই, বেঙ্গালুরু, হায়দরাবাদ, আমদাবাদের সরাসরি বিমান চালু হয়েছে ও হচ্ছে। আগামী তিন মাসের মধ্যে চালু হবে চেন্নাই ও জয়পুরের সরাসরি বিমান।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, ২০১৭ সালে আইএলএস চালু করার জন্য রাজ্য ইতিমধ্যে এএআই-কে ২৩ একর জমি দিয়েছিল। তার পরে আবার সম্প্রসারণের ১১০ একরের জমি চেয়ে আবেদন করে এএআই। এই জমি কিনতে ক্ষতিপূরণবাবদ টাকা রাজ্য দিতে পারবে না বলে বিষয়টি কিছু দিন ঝুলে থাকে। শেষ অবধি এএআই জমির জন্য ২৫ কোটি জন্য বরাদ্দ করায় জট কাটে।
দার্জিলিঙের জেলাশাসক জয়সী দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘সরকারিস্তরে এএআই-র সঙ্গে কথাবার্তা চলছে। কোথায় কী জমি আছে, তা আমরা রাজ্য সরকারকে জানিয়ে দিয়েছি। কলকাতা থেকে নির্দেশ এলেই পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।’’