North Bengal

রক্তের সঙ্কটে ধুঁকছে ব্লাডব্যাঙ্ক 

রোগীদের পরিবারের অভিযোগ, গত প্রায় এক মাস ধরেই ব্লাডব্যাঙ্কে রক্তের সঙ্কট চলছে। বুধবার তা চরমে পৌঁছয়।

Advertisement

অর্জুন ভট্টাচার্য

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০২০ ০৩:৪৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা করতে আসা রোগীদের রক্ত প্রয়োজন হলে ভরসা করতে হয় সদর হাসপাতালের ব্লাডব্যাঙ্কের উপর। ওই ব্যাঙ্কের উপর ভরসা করেন জেলা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের রোগীরাও। সেই ব্লাডব্যাঙ্কই বুধবার সকালে ছিল রক্তশূন্য। রোগীকে দেওয়ার মতো এক ইউনিট রক্তও সেখানে ছিল না। এই ঘটনার বিপাকে পড়েন রোগীরা। সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়তে হয় থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত রোগীদের। রক্তের এই আকালের সুযোগে ব্লাডব্যাঙ্ক চত্বরে দালাল চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ করছেন ভুক্তভোগীরা।

Advertisement

রোগীদের পরিবারের অভিযোগ, গত প্রায় এক মাস ধরেই ব্লাডব্যাঙ্কে রক্তের সঙ্কট চলছে। বুধবার তা চরমে পৌঁছয়। করোনা পরিস্থিতিতে রক্তদান শিবির অনেকটাই কমে যাওয়ায় এমন হয়েছে বলে মনে করছেন স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশ। হাতেগোনা কয়েকটি শিবির বসলেও তা পর্যাপ্ত নয় বলে জানাচ্ছেন তাঁরা।

এ দিন বেলাকোবা থেকে হাসপাতালে এসেছিলেন সায়নী দত্ত। তাঁর বাবা ক্যানসারে আক্রান্ত। সায়নী বলেন, ‘‘বাবার কেমো চলছে। এখন রক্ত প্রয়োজন। দু’দিন ধরে ঘুরেও রক্ত জোগাড় করতে পারিনি। আজ পরিচিত একজন রক্ত দিতে এগিয়ে এসেছেন।’’ একই ঘটনার কথা জানিয়েছেন আরও একাধিক রোগীর পরিজনরা। পরিচিত ব্যক্তিদের সাহায্যে কোনওরকমে রক্ত জোগাড় করা যাচ্ছে। রক্ত সঙ্কট মেটাতে শহরের বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মীরা প্রায় প্রতিদিনই আশঙ্কাজনক রোগীদের জন্য ব্লাড ব্যাঙ্কে গিয়ে রক্ত দিচ্ছেন বলেও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলির তরফে জানানো হয়েছে। শহরের এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পক্ষে নব্যেন্দু মৌলিক বলেন, ‘‘ব্লাডব্যাঙ্কে রক্তের সঙ্কট দেখা দেওয়ায় আমরা সরাসরি রোগীদের জন্য রক্ত দিচ্ছি। করোনা পরিস্থিতিতে শিবিরগুলিতে রক্তদাতাদের উপস্থিতি এখন অনেকটাই কমে গিয়েছে।’’

Advertisement

চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্তের বিভাজন কেন্দ্র চালু না হওয়ায় এই সঙ্কট বাড়ছে প্রতিদিনই। দ্রুত এই কেন্দ্র চালু করলে কিছুটা হলেও রক্তসঙ্কট সামাল দেওয়া যাবে বলে তাঁদের মত।

এ দিন থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত এক শিশুর পরিবারের লোকেরা জানান, তিন বছর বয়সী শিশুর জন্য রক্ত প্রয়োজন। ব্লাড ব্যাঙ্ক চত্বরে একজন রক্ত দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি রক্ত দেওয়ার জন্য দশ হাজার টাকা দাবি করেন বলে তাঁদের অভিযোগ। রোগীদের একাংশ জানাচ্ছেন, জেলা সদর হাসপাতাল এবং সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের কর্মীদের একটি অংশ রক্তের দালালচক্রের সঙ্গে যুক্ত। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রমেন্দ্রনাথ প্রামাণিক বলেন, ‘‘রক্তদান শিবির করার আবেদন জানানো হয়েছে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, ক্লাব ও রাজনৈতিক দলগুলির কাছে। রক্তের দালালচক্র সম্পর্কে লিখিত অভিযোগ পাইনি। খোঁজ নিয়ে দেখব।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement