প্রতীকী ছবি।
আশপাশে কোথাও মাটির প্রদীপ, তো কোথাও বৈদ্যুতিক আলোর দোকান। কোথাও আবার পান-মশলা তৈরির দোকান।
চোখ-কান খোলা রেখে একটু উঁকিঝুঁকি দিলেই মিলে যাবে কাঙ্খিত জিনিস। ছোট্ট দোকানের গুদামের ভিতরে আতশবাজি, চকলেট বোমা সাজিয়ে রাখা থরে থরে। অর্ডার মতো মিলবে সব। দোকানি ফিসফিস করে বললেন, “আশেপাশে একটু অপেক্ষা করুন। আমি ঠিক সময়ে ইশারা করলেই আসবেন।” কোচবিহারে এ বার এমন ভাবেই চলছে বাজির গোপন ব্যবসা।
অবশ্য পুলিশও বসে নেই। খবর পৌঁছে গিয়েছে তাদের কানেও। সাদা পোশাকের পুলিশ ওঁৎ পেতে বসে রয়েছে গলির মুখে মুখে। পুলিশ জানিয়েছে, তাদের নজর চারদিকে রয়েছে। কোচবিহারের পুলিশ সুপার সানা আকতার বলেন, “আইন মেনেই সবাইকে চলতে হবে। না হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” কোচবিহার জেলা ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক চাঁদমোহন সাহা এ দিন বলেন, “সবাইকে পুলিশ-প্রশাসনের নির্দেশ মেনে চলতে হবে। আমরাও সচেতনতার বার্তা দিচ্ছি।”
কয়েক বছর ধরে শব্দবাজির উপর এমনিতেই নিষেধাজ্ঞা আছে আদালতের। এ বার করোনা আবহে দূষণ রুখতে সেই নিষেধাজ্ঞার সঙ্গে আতশবাজি যোগ হয়েছে। পুলিশ জানতে পেরেছে, অনেক দোকানেই আতশবাজি মজুত রয়েছে। কেউ কেউ আগেভাগেই শব্দবাজিও মজুত করেছিলেন। আদালতের রায়ের পর গুদাম খালি করতে বিক্রির চেষ্টা শুরু হয়েছে। গ্রামাঞ্চল এবং সীমান্ত এলাকা থেকে অনেকেই বাজি কিনতে ভিড় করতে শুরু করেছেন বাজারে। অনেকটা কম দামেই বাজারে ছাড়া হচ্ছে। চোরাপথে তা পৌঁছে যাচ্ছে গ্রামের দিকেও।
পুলিশ অফিসারেরা অবশ্য জানিয়েছেন, সারা বছর ধরে নানা অনুষ্ঠানে আতশবাজি পোড়ানোর চল রয়েছে কোচবিহারে। তাই অনেকের কাছেই সেই বাজি মজুত থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এ বার কোভিড পরিস্থিতিতে ওই বাজি ব্যবহারে করোনা আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে সমস্যা বাড়বে।
জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক এ দিন বলেন, “এ বারে পরিস্থিতি অন্যরকম। বেঁচে থাকতে হলে সবাইকে মিলে লড়াই করতে হবে। তাই কেউই যাতে বাজি না বিক্রি করেন এবং কেউ যাতে না কেনেন সে আবেদন রাখা হচ্ছে।”