তৃণমূল নেতার বাড়িতে গিয়ে বিষপান করেন বিজেপি কর্মীর স্ত্রী। প্রতীকী চিত্র।
তৃণমূলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অত্যাচারের অভিযোগ করে তাঁদের বুথ সভাপতির বাড়িতে গিয়ে কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করলেন বিজেপি কর্মীর স্ত্রী। শুক্রবার ঘটনাটি ঘটেছে কোচবিহারের তুফানগঞ্জ ২ নম্বর ব্লকের রামপুর ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়।
অভিযোগ, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে ভোট পরবর্তী ‘হিংসা’র কারণে বাড়িছাড়া ছিলেন বিজেপি কর্মী রাখাল দাস। প্রতিবেশী রাজ্য অসমে আশ্রয় নিয়েছিলেন ওই বিজেপি কর্মী। দিন কয়েক আগে তিনি বাড়ি ফেরেন। কিন্তু তাঁর উপর আবার হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ। এমনকি, নিজের জমিতে চাষ করতে দেওয়া হয়নি রাখালকে। বিজেপির অভিযোগ, শুক্রবার সন্ধ্যায় আবার রাখালের বাড়িতে হামলা চালায় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। দুর্ব্যবহার করা হয় রাখালের স্ত্রী রুপা দাসের সঙ্গে। এর পরই বাজারে গিয়ে কীটনাশক কেনেন রূপা। সেই কীটনাশকের বোতল নিয়ে উপস্থিত হন তৃণমূলের স্থানীয় বুথ সভাপতির বাড়িতে। তাঁর সামনেই ওই কীটনাশক খেয়ে ফেলেন তিনি। শুক্রবার রাতে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রূপাকে তুফানগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্য দিকে, রাখাল জানান, বিধানসভা ভোটের পর থেকেই তিনি বাড়িছাড়া ছিলেন। কয়েক দিন আগে বাড়ি ফেরেন। কিন্তু তৃণমূল কর্মীরা বার বার তাঁর বাড়িতে এসে হামলা করছে। রাস্তায় বেরোলেও তাঁকে মারধর করা হচ্ছে। বাড়িতে গিয়েও হামলা চালাচ্ছে তৃণমূলের গুন্ডাবাহিনী। দিনের পর দিন এই হামলা এবং অপমান সহ্য করতে না পেরে তাঁর স্ত্রী আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন।
রাতেই রূপাকে দেখতে হাসপাতালে যান তুফানগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক মালতি রাভা রায়। সেখানে বিজেপি বিধায়ক বলেন, ‘‘বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বলে কিছু নেই। গত বিধানসভা নির্বাচনের পর তৃণমূলের সন্ত্রাসের কারণে রাখাল বাড়ি ছেড়ে অসমে গিয়ে আশ্রয় নেন। তাঁকে তাঁর নিজের চাষের জমিতে চাষ করতে দেওয়া হয়নি। রাখালের স্ত্রী একটা ছোট্ট বাচ্চা নিয়ে দীর্ঘ দিন একা সংসার চালাচ্ছেন। তৃণমূলের এই সন্ত্রাস এই অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে ওই বিজেপি কর্মী স্ত্রী আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন।’’ বিজেপি বিধায়কের আরও দাবি, এ নিয়ে তিন বার পুলিশকে অভিযোগ জানানোর পরেও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। ঘুরিয়ে বিজেপি কর্মীদেরই দোষী সাব্যস্ত করার চেষ্টা করেছে পুলিশ।
যদিও এই সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। তুফানগঞ্জ ২ নম্বর ব্লকের তৃণমূল ব্লক সহ-সভাপতি নিরঞ্জন সরকার বলেন, ‘‘রাখাল দাস ভোট পরবর্তী হিংসার কারণে বাড়িছাড়া হননি। তিনি বহু মানুষের কাছ থেকে টাকা নিয়েছিলেন। সেই টাকা শোধ করতে না পেরে অসমে গিয়ে লুকিয়ে ছিলেন। শুক্রবার প্রতিবেশীদের সঙ্গে ব্যক্তিগত ঝামেলার কারণেই এই ঘটনা ঘটেছে।’’ তাঁর সংযুক্তি, ‘‘রাখালের স্ত্রী তৃণমূলকে বদনাম করার জন্য আমাদের দলের বুথ সভাপতির বাড়িতে গিয়ে কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।’’