উৎসুক: সুপ্রিম কোর্টেও মিলল না রথযাত্রার অনুমতি। টিভিতে নজর কর্মীদের। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কোচবিহারে বিজেপির জেলা দফতরে। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব
হাইকোর্টের নির্দেশে রথযাত্রা স্থগিত হওয়ার পরেও হাল ছাড়েননি বিজেপি কর্মীরা। নেতাদের আশ্বাস ছিল, দেরি হলেও রথযাত্রা হবেই। কিন্তু মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টেও রথযাত্রার অনুমতি পায়নি বিজেিপ। শীর্ষ আদালতের ওই নির্দেশের পরে অনেক নেতা-কর্মী কার্যত মুষড়ে প়ড়েছেন বলে বিজেপি সূত্রে খবর। নেতারা অবশ্য সে কথা অস্বীকার করেছেন।
বিজেপি সূত্রে খবর, লোকসভা ভোটের মুখে আর রথের আশায় বসে না থেকে কর্মসূচি তৈরি করে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ার নির্দেশ এসেছে জেলার নেতাদের কাছে। দল সূত্রে খবর, রথযাত্রার বিকল্প কর্মসূচি কী হতে পারে তা নিয়ে জোর-আলোচনা হচ্ছে জেলা বিজেপি নেতাদের মধ্যেও। মঙ্গলবারই সন্ধ্যায় বিজেপির কোচবিহার জেলার নেতারা দলীয় অফিসে একটি বৈঠক রেন। সেখানে কী কী কর্মসূচি নেওয়া যেতে পারে তা নিয়ে আলোচনা হয়।
জেলা বিজেপি নেতৃত্বের একাংশের দাবি, রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে জেলায় জেলায় আইন অমান্য, পদযাত্রার মতো কর্মসূচি নেওয়ার কথা ভেবেছেন তাঁরা। দলের কোচবিহার জেলার সভানেত্রী মালতি রাভা বলেন, “আমরা গণতন্ত্র বাঁচাও যাত্রার জন্য অপেক্ষা করে ছিলাম। এ বারে একাধিক কর্মসূচি নেওয়া হবে। শীঘ্রই তা ঘোষণা করা হবে। তবে দলের কর্মীদের মুষড়ে পড়ার কোনও বিষয় নেই।”
গত লোকসভা উপনির্বাচনে কোচবিহারে বামেদের পিছনে ফেলে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে বিজেপি। তার পর থেকে জেলায় বিজেপির সংগঠন অনেকটাই শক্তিশালী হয় বলে নেতাদের দাবি। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে কোচবিহার আসনকে পাখির চোখ করে এগোতে শুরু করে বিজেপি নেতৃত্ব। রাজ্য নেতৃত্ব তো বটেই কেন্দ্রীয় নেতারাও কোচবিহারে একাধিক বৈঠক করেছেন। অমিত শাহের রথযাত্রাও কোচবিহার থেকেই শুরু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বিজেপি সূত্রের খবর, ৭ ডিসেম্বরের রথযাত্রায় অমিত শাহকে এনে কোচবিহারে লোকসভা ভোটের মুখে প্রবল হাওয়া তোলার চেষ্টায় ছিল বিজেপি। অনুমতি না থাকায় শেষ পর্যন্ত ওই অনুষ্ঠান হয়নি। এ দিন শীর্ষ আদালতের রায়ের পর ওই হাওয়া অনেকটাই ধাক্কা খেতে পারে বলে একান্তে স্বীকার করছেন বিজেপি কর্মীদের অনেকেই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিজেপির এক নেতার কথায়, “যে ভাবে কর্মীরা এগিয়ে আসছিলেন, তা অনেকটাই ধাক্কা খেয়েছে। এখন আন্দোলনের মাধ্যমে কর্মীদের উদ্বুদ্ধ করতে সময় লাগবে।”
তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ অবশ্য দাবি করেছেন, বিজেপির কোনও সংগঠনই কোচবিহারে নেই। রবীন্দ্রনাথবাবুু বলেন, “মানুষের পাশে বিজেপিকে কখনও দেখা যায়নি। তাদের কোনও সংগঠন নেই। শুধু প্রচারে থেকেই নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছে বিজেপি। তাই হাজার আন্দোলন করেও লাভ নেই।”