প্রতীকী ছবি
তৃণমূল, বামফ্রন্ট, কংগ্রেস—এনআরসি, নতুন নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে তিন রাজনৈতিক দল লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে মালদহ, বালুরঘাট, রায়গঞ্জে।
তবে এনআরসি, নতুন নাগরিকত্ব আইনের সমর্থনে তিন জেলায় প্রকাশ্যে নামতে দেখা যায়নি গেরুয়া শিবিরকে। বিজেপি সূত্রে খবর, তা নিয়ে কর্মসূচি শুরুর আগে দলীয় নেতা-কর্মীদের ‘ক্লাস’ করানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। দলের অন্দরমহলের খবর, জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই গৌড়বঙ্গের তিন জেলার নেতা-কর্মীদের নিয়ে মালদহে শুরু হবে সেই প্রশিক্ষণ।
গৌড়বঙ্গের তিন জেলার চারটি লোকসভা আসনের মধ্যে তিনটিতেই জয় পেয়েছিল গেরুয়া শিবির। দক্ষিণ মালদহে জেতে কংগ্রেস। রাজনৈতিক শিবিরের খবর, ওই ফলে স্পষ্ট ছিল মালদহ, বালুরঘাট, রায়গঞ্জে গেরুয়া শিবির শক্তি বাড়িয়েছে। তবে কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা উপ-নির্বাচনে ধাক্কা খায় বিজেপি। জয়ী হয় তৃণমূল। কালিয়াগঞ্জ বিধানসভার উপ-নির্বাচনে এনআরসিকে হাতিয়ার করেছিলেন তৃণমূল নেতারা। রাজবংশী ভাষায় প্রচার করার পাশাপাশি বাড়ি বাড়ি ঘুরে প্রচার করেন তাঁরা।
তৃণমূল নেতাদের একাংশের দাবি, এনআরসি নিয়ে বাড়ি বাড়ি প্রচারেই মিলেছে সাফল্য। তাই সেই সাফল্য ধরে রাখতে তিন জেলাতেই এনআরসি, নতুন নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় সুর চড়িয়েছে তৃণমূল। বাম-কংগ্রেসও যৌথ ভাবে এনআরসি, নতুন নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় আন্দোলন শুরু করেছে।
জেলাবাসীর একাংশের বক্তব্য, এমন অবস্থায় কার্যত ময়দানেই দেখা মিলছে না বিজেপির। এনআরসির সমর্থনে সঙ্ঘ পরিবার পুস্তিকা নিয়ে বাড়ি বাড়ি ছুটছে। বিজেপি নেতাদের একাংশের দাবি, বুথ স্তরের অনেক নেতাদেরই এনআরসি, নতুন নাগরিকত্ব আইনের বিষয়ে তেমন ধারণা নেই। ফলে বিজেপি কর্মীরা বাড়ি বাড়ি প্রচার করতে পারছেন না।
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মালদহ, বালুরঘাট, রায়গঞ্জের জেলা, মণ্ডল এবং বুথ স্তরের নেতাদের এনআরসি, নতুন নাগরিকত্ব আইনের বিষয়ে জানাতে কেন্দ্রীয় নেতাদের দিয়ে ‘ক্লাস’ করানোর পরিকল্পনা হয়েছে। ৩ জানুয়ারি মালদহে দলের জেলা কার্যালয়ে একটি বৈঠক করা হবে। সে দিনই হবে ওই ‘ক্লাস’ও।
বিজেপির মালদহ জেলা সভাপতি গোবিন্দ মণ্ডল বলেন, ‘‘এনআরসি, নতুন নাগরিকত্ব আইন নিয়ে আন্দোলন কী ভাবে হবে তা নিয়ে রাজ্য ও কেন্দ্রের নেতারা বৈঠক করবেন। বৈঠকে জেলার নেতারাও থাকবেন।’’ তিনি জানান, বৈঠকে পরবর্তী নির্বাচনের কৌশল নিয়েও আলোচনা করা হবে। এ সব নিয়ে হবে ক্লাস-ও। তবে তা করেও লাভ হবে না বলে কটাক্ষ করেছেন জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি দুলাল সরকার। তিনি বলেন, ‘‘বিজেপির সঙ্গে মানুষ আর নেই। তাই নেতারা ক্লাস করেও কিছু করতে পারবেন না।’’
‘‘সময়ই শেষ কথা বলবে’’, বলে পাল্টা দাবি করেছেন গোবিন্দ।