চা বাগানে জল দেওয়া। — ফাইল চিত্র।
উত্তরবঙ্গের ছয় জেলার চা বাগানের শ্রমিকদের জমির বসতি পাট্টা দেওয়ার ঘোষণার সঙ্গে রাজনীতি যোগের অভিযোগ ওঠা শুরু হয়েছে। আগামী বছরের লোকসভা ভোট মাথায় রেখে, উত্তরবঙ্গে চা বাগানের পাট্টার বিষয়টি সামনে আনা হচ্ছে বলে বিজেপির অভিযোগ। মঙ্গলবার রাজ্যের ভূমি সংস্কার দফতরের তরফে আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি এবং উত্তর দিনাজপুরের জেলাশাসকদের লিখিত নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। তাতে জেলাশাসকদের চা বাগানের অতিরিক্ত, অব্যবহৃত জমির পরিমাণ জানতে সমীক্ষা করতে বলা হয়েছে। বাগানে উপভোক্তাদের তালিকা তৈরি করতেও বলা হয়েছে।
বিজেপির জলপাইগুড়ির সাংসদ জয়ন্ত রায় বলেন, ‘‘২০১৯ ও ২০২১ দেখলে বোঝা যাবে, চা বাগান শ্রমিকেরা বিজেপির সঙ্গেই রয়েছেন। তৃণমূলের ২১ জুলাইয়ের কর্মসূচিতে খুব বেশি লোক চা বাগান থেকে যাননি বলেই শুনেছি। ভোটের কথা মাথায় রেখে আশ্বাস দিয়েছে। বাস্তবে জমি পাবেন না কেউই। জমি বিলির নামে ফের কাটমানি-কেলেঙ্কারি হবে।’’
যদিও সমতলে শাসক তৃণমূল এবং পাহাড়ে প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার তরফে পাট্টা নিয়ে প্রচার শুরু হয়ে গিয়েছে। তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি-র রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘লোকসভা ভোটের আগে এসে উত্তরবঙ্গের সাতটি চা বাগান অধিগ্রহণ, এক হাজার কোটি টাকা বাগানের জন্য কেন্দ্রের বরাদ্দ করার কথা হয়। এ সব কোন জেলায়, কোন বাগানে হয়েছে তা বিজেপি জানালে ভাল হয়। আসলে মিথ্যা কথাটা বিজেপির ডিএনএ-তে। ভোটের রাজনীতি ছাড়া ওরা কিছুই বোঝে না।’’ তিনি জানান, চা বাগানের পাট্টা বা মজুরি বৃদ্ধি থেকে চা সুন্দরী, ক্রেশ, রেশন, স্বাস্থ্যের বন্দোবস্ত সবই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় করেছেন।
গত মঙ্গলবারের নির্দেশিকায় জেলাশাসকদের বিস্তারিত সমীক্ষার কথা বলা হয়েছে। সেখানে বাগানের খালি বা অব্যবহৃত জমি সমীক্ষা করে তা লিজ় ফেরত নিয়ে পাট্টা দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে। পরিবারের প্রধান মহিলা সদস্যের নামে এবং তা সম্ভব না হলে, পুরুষ ও মহিলা যুগ্ম নামে পাট্টা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। পাঁচ ডেসিমেল জমি পরিবারের মধ্যে হস্তান্তরযোগ্য হলেও, বিক্রি বা অন্য কাউকে দেওয়া যাবে না বলে ঠিক রয়েছে। প্রশাসনিক অফিসারেরা জানান, বাগানে খালি জমি ‘প্ল্যান্টেশনের’ কথা বলে বাগান মালিকেরা কেউ একবারে দিতে না চাইলে, সমস্যা তৈরি হতে পারে। সেখানে সরকারকেও আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।