প্রতীকী ছবি।
নয়া নাগরিকত্ব আইন (সিএএ), জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) নিয়ে তোলপাড় হচ্ছে দেশ। কেন্দ্রের এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে পথে নেমেছে একাধিক বিরোধী রাজনৈতিক দল ও গণসংগঠনগুলো। তাদের এনআরসি ও সিএএ বিরোধী প্রচারের মোকাবিলা করতে রাস্তায় নেমেছে বিজেপিও। সম্প্রতি সিএএ-এর সমর্থনে শিলিগগুড়িতে মিছিল করে বিজেপি। ৩ জানুয়ারি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে শিলিগুড়িতেই এনআরসি-সিএএ বিরোধী মিছিল করে তৃণমূল। এ বার শিলিগুড়িতেই বাড়ি বাড়ি গিয়ে সিএএ ও এনআরসির বিষয়ে বোঝানোর সিদ্ধান্ত নিল বিজেপির মহিলা মোর্চা। শনিবার এই কাজের জন্য মোর্চার পুর এলাকার কর্মীদের নিয়ে কর্মশালাও হয়েছে। শিলিগুড়ির চার্চ রোডে একটি ভবনে হয় ওই কর্মশালা।
শুক্রবার শিলিগুড়িতে মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে যে মিছিল হয়েছে তাতে পাহাড়ের বাসিন্দাদের ভিড় বেশ ভালভাবেই চোখে পড়েছে। শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি থেকেও ভাল জমায়েত হয়েছিল, যার মধ্যে পড়ুয়াদের সংখ্যা ছিল চোখে পড়ার মতো। এছাড়া পাহাড়-তরাইয়ের বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর মানুষও হেঁটেছিলেন ওই মিছিলে। ওই মিছিল বিজেপির অন্দরে অস্বস্তি বাড়িয়েছে বলে দলেরই একটি সূত্রে জানা গিয়েছে। এ দিন মহিলা মোর্চার সভায় তাই পুর এলাকার প্রত্যেক বুথে বাড়ি-বাড়ি গিয়ে সিএএ নিয়ে বাড়ির মহিলাদের বোঝানোর নির্দেশ দেয় নেতৃত্ব। লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে শিলিগুড়ির সবক’টি ওয়ার্ডেই এগিয়ে ছিল বিজেপি। সব কিছু ঠিক থাকলে সামনেই শিলিগুড়ির পুরভোট। তার আগে সিএএ-এনআরসি নিয়ে বাসিন্দাদের ভয় কাটানো বিশেষ জরুরি বলে মনে করছে বিজেপি নেতৃত্ব।
এ দিনের কর্মশালায় ছিলেন মহিলা মোর্চার রাজ্য সাধারণ সম্পাদক শশী অগ্নিহোত্রী। তিনি জানান, আগামী ১৬-৩১ জানুয়ারি এই কর্মসূচি চলবে। তাঁর অভিযোগ, ‘‘সিএএ নিয়ে মানুষকে ভুল বোঝাচ্ছে তৃণমূল। সেজন্য দলের মহিলাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে মানুষকে বোঝানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বাড়ির অন্দরে একমাত্র মহিলারাই মহিলাদের বোঝাতে পারেবেন। কী ভাবে বিষয়টি বোঝাবেন তা নিয়ে কর্মশালা হল।’’ নেতৃত্বের আশা সিএএ নিয়ে মানুষের মধ্যে যে আতঙ্ক ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে তা কাটাতে দলের মহিলারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবেন।
তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা সভাপতি রঞ্জন সরকার বলেন, ‘‘সিএএ নিয়ে মানুষ বিজেপিকে প্রত্যাখ্যান করেছে। ওদের মহিলা মোর্চা যাই বোঝাক তাতে কোনও লাভ হবে না।’’ তৃণমূলের নেতাদের কথায়, মানুষ কতটা সিএএ’র বিরুদ্ধে তা শুক্রবারের মিছিলে বুঝিয়ে দিয়েছেন। বিজেপি’র কর্মসূচি নিয়ে তারা ভাবতে রাজি নন। প্রতিদিন মিছিল মিটিং করলেও এখন আর দলের কর্মীদের ধরে রাখতে পারবে না বিজেপি।
পুরভোটকে সামনে রেখে তৃণমূল, সিপিএমের মতো দলগুলো আসরে নেমে পড়েছে। তাই বসে থাকতে রাজি নয় বিজেপিও। তারাও প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে বলে জানিয়েছে। সপ্তাহখানেক আগেই কেন্দ্রীয় নেতাদের এনে শিলিগুড়িতে বড় মিছিল করে বিজেপি। মুখ্যমন্ত্রীর ডাকে তারই পাল্টা মিছিল হয়। এর আগে দলীয় কর্মীদের নিয়ে বিজেপি সভা করছে। এ বার মহিলা মোর্চাকেও প্রচারে নামাতে চাইছে। পুরভোট নিয়েও এ দিন বিজেপি নেতৃত্ব আলোচনা করেছেন বলে জানান। মহিলা মোর্চার শিলিগুড়ি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি মাধবী মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই মুহূর্তে আমাদের প্রধান কাজ সিএএ নিয়ে মানুষকে ঠিকটা বোঝান। আর মহিলারা এই কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারবেন।’’