কৌশিক রায়।
‘সমস্ত রাজনৈতিক কর্মসূচি থেকে’ নিজেকে সরিয়ে রাখার কথা ঘোষণা করলেন ময়নাগুড়ির বিজেপি বিধায়ক কৌশিক রায়। সোমবার ফেসবুকে এ কথা জানিয়ে বিধায়ক দাবি করেছেন, এই সিদ্ধান্ত নিতে তিনি ‘বাধ্য’ হয়েছেন। প্রথমে একাধিক বিধায়কের দলত্যাগ। তার পরে একের পর এক বিধায়ক, সাংসদ দলের বিভিন্ন হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকে সরে যাওয়ায় এমনিতেই রাজ্য বিজেপির বেসামাল অবস্থা। এ বার উত্তরবঙ্গের আরও এক বিধায়কও ‘বিদ্রোহী’ হলেন। কেন এই সিদ্ধান্ত, তার কোনও ইঙ্গিত বিধায়ক ফেসবুকে না দিলেও তাঁর ঘোষণা, ‘সমাধান না হওয়া পর্যন্ত’ তিনি বিরত থাকবেন। ঘোষণার শুরুতে একটি হিন্দি প্রবাদেরও উল্লেখ করেছেন বিধায়ক। সেটি হল, ‘মু মে রাম নাম, বগল মে তিনকা’। যার ভাবার্থ হল কোনও ব্যক্তির মুখে ভাল কথা বলছেন, বাস্তবে কুকাজ করছেন।
কাকে উদ্দেশ্য করে বিধায়কের এই ক্ষোভ? কেনই বা এই সিদ্ধান্ত?
দলের অন্দরের খবর, সম্প্রতি ঘোষণা হওয়া রাজ্য কমিটিতে কৌশিক গুরুত্ব পাননি। দ্বিতীয়ত, দলের জেলা নেতৃত্বের সঙ্গেও তাঁর বনিবনা নেই বলে অভিযোগ। বিধায়ক অনুগামীদের দাবি, এলাকার কর্মসূচি বিধায়কের মতামত ছাড়াই ঠিক করেন জেলা নেতারা। সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠানে গান গেয়ে ভাইরাল হন বিধায়ক কৌশিক রায়। বিরোধীরা অভিযোগ তুলেছিলেন, তিনি মত্ত অবস্থায় কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে মঞ্চে ওঠেন। বিধায়ক অনুগামীদের অভিযোগ, তখন দলের জেলা নেতারা বিধায়কের পাশে দাঁড়ানোর পরিবর্তে তাঁকে কোণঠাসা করতে উঠেপড়ে লাগেন।
কয়েক মাস আগে যখন বিজেপির পরিষদীয় দলে ভাঙন হয়, তখন দলবদলের চর্চায় কৌশিকের নামও ছিল। যদিও এ দিন কৌশিক বলেন, ‘‘আমার ফেসবুক পোস্ট সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক। ওমিক্রন বা করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। তাই সব রাজনৈতিক কর্মসূচি থেকে সরে থাকব বলেছি। রোগ সারলে আবার সক্রিয় হব।’’ দলের অন্দরের কোনও ‘রোগ’ দেখছেন নাকি? কৌশিক বলেন, ‘‘যা বলার তা তো বলেই দিলাম।’’
জেলা বিজেপি সভাপতি বাপি গোস্বামী বলেন, ‘‘দলের কর্মীরাই সম্পদ। যাঁরা হাজার বিপদের মাঝে মার খেয়ে, পুলিশের মামলা খেয়ে দলের পতাকা কাঁধে ধরে রেখেছে, সেই কর্মীরাই দলকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।’’ তাঁর এই বক্তব্যেও কোথাও কৌশিকের প্রতি সহানুভূতি নেই বলেই মনে করছেন দলের একাংশ।