ধৃত বিজেপি নেতা বিশ্বরাজ বিশ্বাস। —নিজস্ব চিত্র।
এক তৃণমূল নেতাকে মারধর করার ঘটনায় জামিন অযোগ্য ধারায় গ্রেফতার বিজেপির উত্তর দিনাজপুরের জেলা সম্পাদক বিশ্বরাজ বিশ্বাস ওরফে ছোটন। সোমবার এ নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতর উত্তর দিনাজপুর জেলার চাকুলিয়া থানার কানকি এলাকায়। বিজেপির অভিযোগ, ছোটনকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে গ্রেফতার করা হয়েছে। এমনকি, অনেক অনুরোধ সত্ত্বেও বিজেপি নেতাকে বাবার শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের আগেই পাকড়াও করেছে পুলিশ। অন্য দিকে, তৃণমূল বলছে, আইন তো আইনের পথে চলবে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, গত ১৩ জুন তৃণমূল নেতা ভোলানাথ রায়ের সঙ্গে বচসায় জড়ান বিজেপি নেতা ছোটন। ভোলানাথ তাঁকে মারধরের করা হয়েছে বলে জেলা বিজেপি সম্পাদকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ওই বিজেপি নেতা। অন্য দিকে, এই ঘটনার পর চাকুলিয়া থানায় বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন তৃণমূল নেতা ভোলানাথ। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে রবিবার রাতে বিজেপি নেতাকে গ্রেফতার করে চাকুলিয়া থানার পুলিশ। সোমবার অভিযুক্তকে ইসলামপুর মহকুমা আদালতে তোলে পুলিশ। আদালতে যাওয়ার পথে ছোটন বলেন, ‘‘আমি নিজেই বুঝতে পারছি না, কেন এই গ্রেফতারি।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘আমাদের এলাকার তৃণমূল নেতা ভোলানাথ রায় আমার বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার অভিযোগ করেছেন বলে শুনেছি। আমার বাবা গত হয়েছেন। তাঁর শ্রাদ্ধানুষ্ঠান এখনও হয়নি। তার আগে আমাকে গ্রেফতার করা হল।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘ভোটের পর যেভাবে রাজ্যব্যাপী বিরোধী রাজনৈতিক দলের কর্মীদের উপর ষড়যন্ত্রমূলক পদক্ষেপ করা হচ্ছে। এটাও তেমনই।’’
জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি সুরজিৎ সেন এ নিয়ে বলেন, ‘‘পুলিশের অমানবিক ব্যবহার দেখতে পাচ্ছি আমরা। চাকুলিয়ার আমাদের নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ওঁর বাবা কয়েক দিন আগে গত হয়েছেন। ওঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে তৃণমূল নেতার সঙ্গে বচসায় জড়িয়েছিল বলে। সে জন্য পুলিশ জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দিয়েছে!’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা বার বার অনুরোধ করলাম, ওর বাবার শ্রাদ্ধানুষ্ঠান আছে। কিন্তু তবু পুলিশ শুনল না। তৃণমূল নেতাদের কথায় পুলিশ চলছে।’’
অন্য দিকে, তৃণমূলের জেলা কমিটির সম্পাদক ভোলানাথ বলেন, ‘‘এই ঘটনার সঙ্গে প্রাথমিক ভাবে কোনও রাজনৈতিক রং ছিল না। আমার সামনে দু’জনের মধ্যে বচসা চলছিল। হঠাৎ সেটা হাতাহাতিতে পৌঁছায়। আমি বাধা দিতে গিয়েছিলাম। তখন বিজেপি নেতা বিশ্বরাজ আমাকে আক্রমণ করেন। আমি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি। পুলিশ পুলিশের কাজ করেছে। আমি বলেছি, আমাকে প্রাণে মেরে ফেলার জন্যই আক্রমণ করেছিলেন বিশ্বরাজ।’’