প্রতীকী ছবি।
সারা দেশেই নয়া নাগরিত্ব আইন ও এনআরসি নিয়ে প্রবল বিরোধের মুখে পড়তে হয়েছে বিজেপিকে। জলপাইগুড়িতেও সিএএ ও এনআরসির বিরুদ্ধে পথে নেমেছে নাগরিক সমাজ। আন্দোলন করছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলও। এ বার তার মোকাবিলা করতে মাসোহারা দিয়ে কর্মী রাখতে চলেছে বিজেপি। দল সূত্রের খবর, বুথে বুথে রাখা হবে এমন কর্মী। তাঁদের একমাত্র কাজ হবে বাড়ি বাড়ি গিয়ে সাধারণ বাসিন্দাদের নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসির বিষয়ে বোঝানো।
দল সূত্রে খবর, আট-দশটি বুথ বেছে নিয়ে একজন করে হোলটাইমার রাখছে বিজেপি। দলের পরিভাষায় যার নাম ‘পূর্ণসময়ের বিস্তারক’। জলপাইগুড়ি জেলায় ১৯০ জন হোলটাইমারের নামের তালিকা তৈরি করেছে বিজেপি। বেশ কিছু বুথে শুরু হয়ে গিয়েছে কাজও।
এতদিন বিজেপির জেলা পার্টি অফিসে দুই বা তিনজন হোলটাইমার থাকতেন। তাঁরা মাসোহারা পেতেন। প্রতি বুথে হোলটাইমার থাকার এমন ব্যবস্থা বিজেপিতে আগে ছিল না। মাসখানেক বাদেই জলপাইগুড়িতে পুরভোট। জলপাইগুড়ি শহর এলাকার জন্য ১৫ জন হোলটাইমার নিয়োগ করেছে বিজেপি। হোলটাইমারদের বাইকের তেল খরচ, মোবাইলের কার্ড সবই দেবে দল। সঙ্গে চা-জলখাবারের টাকা এবং হাতখরচ দেওয়া হবে। সব মিলিয়ে একজন হোলটাইমার মাসে ৬-৭ হাজার টাকা পাবেন বলে দল সূত্রের খবর। কাজ শেষ করে রাতেও নিজের বাড়ি ফিরতে পারবেন না হোলটাইমাররা। দলের নির্দেশ, রাতে থাকতে হবে এলাকারই কোনও বাড়িতে।
বিজেপির জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামী বলেন, “নয়া নাগরিকত্ব আইন নিয়ে আমাদের কর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার চালাবেন। প্রতি বুথ পিছু দায়িত্ব ভাগ করা হয়েছে। বিরোধীরা যে অপ্রচার করছে তার মোকাবিলা করা হবে। কিন্তু মাইনে করে লোক রাখা হচ্ছে এমন কথা ঠিক নয়।” যদিও জলপাইগুড়ি শহরের এক নেতার কথায়, “একজন কর্মী সারাদিন দলের হয়ে প্রচার করবেন। তাঁর হাতে তো কিছু টাকা দিতেই হয়। দলের অন্য কর্মীরাই চাঁদা তুলে তা জোগাড় করবেন।”
সম্প্রতি ময়নাগুড়িতে জেলা কমিটির সভা হয়েছে। সেই সভাতেই হোলটাইমার রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। কারা কাজ করবেন তার তালিকা করে রাজ্য কমিটির কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে খবর। সূত্রের খবর, ন্যূনতম স্নাতক স্তর পর্যন্ত পড়াশোনা রয়েছে অথচ বেকার এমন কর্মীদেরই হোলটাইমারের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আপাতত তিন মাস প্রচার চালানোর কথা বলা হয়েছে তাঁদের। ইতিমধ্যেই দলের অনেক বিস্তারক নাগরিক আইন নিয়ে প্রচার চালাচ্ছেন। তাঁরা কতটা প্রচার করলেন, সব বাড়ি যাওয়া হল কিনা তারও হিসেব রাখবেন পূর্ণসময়ের বিস্তারক তথা হোলটাইমাররা।
জেলা তৃণমূল সভাপতি কৃষ্ণকুমার কল্যাণীর কটাক্ষ, “বিজেপির অনেক টাকা। ওরা মাইনে করে কর্মী রাখতেই পারে। তবে বাড়ি বাড়ি একজন করে কর্মী রাখলেও মানুষের বিশ্বাস ওরা আর পাবে না।”