প্রতীকী ছবি
সাধারণ মানুষের মধ্যে যে এনআরসি আতঙ্ক জাঁকিয়ে বসেছে, তা মানছেন বিজেপি নেতারা। সেই আতঙ্ক যে ভোটে প্রভাব ফেলতে পারে, তা কার্যত মেনে নিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। গত বুধবার জলপাইগুড়ির ক্লাব রোডে জেলার ২২ জন পদাধিকারীর সঙ্গে বৈঠকে তাঁর নির্দেশ, বাড়ি বাড়ি যেতে হবে নেতাদের। এনআরসি-সিএএ নিয়ে কোণঠাসা বিজেপির পুরভোটে প্রার্থী পেতেও সমস্যা হচ্ছে বলে দলীয় সূত্রের খবর। সেই কারণেই জলপাইগুড়ি লোকসভা কেন্দ্রের অর্ন্তগত চারটি পুরসভায় প্রার্থী বাছাই করতে কে আগে থেকে দল করেন, কে পরে দলে এসেছেন, সে সব দেখার প্রয়োজন নেই বলেই দিলীপের নির্দেশ।
গত বুধবার সিএএ নিয়ে জলপাইগুড়িতে অভিনন্দন যাত্রা করেছে বিজেপি। মিছিলের পরে ক্লাব রোডের বৈঠকে অসমের প্রসঙ্গও তুলেছেন দিলীপ। সূত্রের খবর, কিছু সমস্যা হওয়ায় গোটা এনআরসি প্রক্রিয়া নিয়েই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। অসমে যে এনআরসিতে বিরূপ প্রতিক্রিয়া হয়েছে, রাজ্য সভাপতি সেটাই বোঝাতে চেয়েছেন বলে দলের নেতাদের দাবি। তাঁদের বক্তব্য, এ রাজ্যে এনআরসি নিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠের ভোট কোনও ভাবে হাতছাড়া করতে চাইছে দল। এক বিজেপি নেতার কথায়, “রাজ্য সভাপতি বলেছেন, বাড়ি বাড়ি গিয়ে সহজ ভাষায় বুঝিয়ে দিতে যে, সাদা কাগজে লিখে দিলেও সংখ্যাগরিষ্ঠেরা দেশের নাগরিক থাকবেন।”
মাসখানেক বাদেই জলপাইগুড়ি, মালবাজার, হলদিবাড়ি এবং মেখলিগঞ্জে পুরভোট। চারটি পুরসভাই জলপাইগুড়ি লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে পড়ছে। লোকসভা ভোটে জয়ের পরে দলের সাংগঠনিক কমিটি গড়ার সময় দলে নবাগতদের গুরুত্ব দেয়নি বিজেপি। তিন বছরের পুরনো নেতাদেরই সক্রিয় সদস্য করা হয়েছিল। যে নীতি থেকে এখন পুরো উল্টো দিকে দল ঘুরছে বলেই মনে করছেন নেতারাই। চার পুরসভাতেই প্রার্থী করার উপযুক্ত মুখ গেরুয়া শিবির খুঁজে পাচ্ছে না বলেই দলীয় সূত্রের খবর। দলের নেতাদের বক্তব্য, এই কারণেই রাজ্য সভাপতির নির্দেশ, কে কবে দলে এসেছেন, তা দেখার প্রয়োজন নেই এবং প্রার্থীপদের উপযুক্ত মনে হলেই টিকিট দেওয়া হবে। তবে বিজেপির জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামীর মন্তব্য, ‘‘রাজ্য সভাপতির বৈঠক নিয়ে একটি কথাও বলব না।”