West Bengal Post Poll Violence

কোচবিহারে ‘আক্রান্ত’দের দেখতে বিজেপির কেন্দ্রীয় দল, ভিডিয়ো তোলা নিয়ে বিশৃঙ্খলা

সোমবার সকালে কোচবিহারে এসে পৌঁছয় বিজেপির প্রতিনিধি দলের সদস্যেরা। সেখানে বিজেপির দলীয় কার্যালয়ে ‘আক্রান্ত’দের সঙ্গে দেখা করে কথা বলেন তাঁরা।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০২৪ ১৮:৪৪
Share:

কোচবিহারে বিজেপির কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল। — নিজস্ব চিত্র।

ভোট পরবর্তী ‘হিংসা’ পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে সোমবার কোচবিহারে আসে বিজেপি একটি প্রতিনিধি দল। ‘আক্রান্ত’ বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে দেখা করে তারা। তবে সে সময়ই বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। অভিযোগ, বিজেপির দলীয় কার্যালয়ে ‘আক্রান্ত’দের সঙ্গে কথা বলার সময় এক সিভিক ভলান্টিয়ার ভিডিয়ো তুলছিলেন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। ওই সিভিক ভলান্টিয়ারকে মারধরও করা হয়েছে বলে অভিযোগ।

Advertisement

লোকসভা ভোটের ফলপ্রকাশের পর থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় অশান্তির ঘটনার প্রকাশ্যে আসছে। কোথাও আক্রান্ত হচ্ছেন শাসকদল তৃণমূলের কর্মীরা, কোথাও আবার বিরোধীরা। বিজেপির অভিযোগ, তাদের কর্মী-সমর্থকদের উপর হামলা করছে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা। ভোট পরবর্তী এই ‘হিংসা’র পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে বিজেপির একটি প্রতিনিধি দল রবিবারই রাজ্যে এসে পৌঁছয়। সেই দলে রয়েছেন ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা সাংসদ বিপ্লব দেব, বিজেপি সাংসদ রবিশঙ্কর প্রসাদ।

সোমবার সকালে কোচবিহারে এসে পৌঁছয় বিজেপির প্রতিনিধি দলের সদস্যেরা। সেখানে বিজেপির দলীয় কার্যালয়ে ‘আক্রান্ত’দের সঙ্গে দেখা করে কথা বলেন তাঁরা। অভিযোগ, সে সময় এক জন সিভিক ভলান্টিয়ার মোবাইল দিয়ে ভিডিয়ো তুলছিলেন। বিষয়টি নজরে আসতেই ওই ভলান্টিয়ারের মোবাইল কেড়ে নেন বিজেপি নেত্রী অগ্নিমিত্রা পাল। ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন উপস্থিত বিজেপি কর্মীরাও। মারধর করে তাঁকে দলীয় কার্যালয় থেকে বার করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে খবর, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসার পরই ‘আক্রান্ত’ বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন প্রতিনিধি দলের সদস্যেরা। তার পরই তাঁরা কোচবিহারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ‘আক্রান্ত’দের সঙ্গেও দেখা করেন। তাঁদের সঙ্গে কথা বলার পর রাজ্য সরকারের কড়া ভাষায় সমালোচনা করেছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর। তিনি বলেন, ‘‘বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক জন মহিলা। সেখানে এক জন মহিলা প্রধানের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয় এবং তাঁর শাড়ি ছিঁড়ে ফেলার চেষ্টা হয়।’’ তার পরই রবিশঙ্কর বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে সংবিধান নেই। বিজেপি করার অপরাধে বিজেপি কর্মীদের জমি থেকে ধান কাটতে দেওয়া হচ্ছে না। বিজেপি কর্মীরা বাড়ি ফিরতে পারছেন না। তাঁদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। বিজেপি কর্মীদের বাড়িঘর ভাঙচুর করা হচ্ছে। এসব কি চলছে পশ্চিমবঙ্গে?’’

সেই একই সুরে ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব বলেন, ‘‘সিতাই বিধানসভা কেন্দ্রে একজন মহিলাকে তৃণমূলের গুন্ডাবাহিনী ধর্ষণ করে। দীর্ঘক্ষণ তিনি পড়ে ছিলেন। পুলিশের কাছে তাঁরা অভিযোগ পর্যন্ত জানাতে পারেনি। পুলিশ অভিযোগ নিচ্ছে না। হিম্মত থাকলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এসে দেখে যাক মহিলার কী অবস্থা?’’

বিজেপির কেন্দ্রীয় কমিটির এই কোচবিহারে আসা প্রসঙ্গে তৃণমূলে মুখপাত্র পার্থপ্রতিম রায় বলেন, ‘‘ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল পশ্চিমবঙ্গের সন্ত্রাস কবলিত এলাকা পরিদর্শনে এসেছে। এর থেকে লজ্জার বিষয় আর কিছু নেই। বিগত দিনে আমরা দেখেছি ২০২১ সালের নির্বাচনে সময় আমরা যখন ত্রিপুরায় নির্বাচনী প্রচারে গিয়েছিলাম সেই সময় আমাদের উপর এবং আমাদের কর্মীদের উপর জঘন্য ভাবে আক্রমণ চালিয়েছিল তারা। বহু তৃণমূল কর্মী আহত হয়েছিলেন। নিজেরর রাজ্যকে ঠিক না করে তাঁরা পশ্চিমবঙ্গে এসেছে সন্ত্রাস কবলিত এলাকা পরিদর্শনে। তিনি আগে ত্রিপুরাকে শান্ত করুক। ত্রিপুরার যে সন্ত্রাস সেই সন্ত্রাসকে বন্ধ করুক। কোচবিহারে যাঁরা ঘর ছাড়া আছে তাঁরা নিজেরাই আতঙ্কিত হয়ে শুধুমাত্র রাজনীতি করার জন্য দলীয় কার্যালয় আশ্রয় নিচ্ছেন। কোচবিহারে কোথাও কেমন সন্ত্রাস হয়নি যে তাদের রাজনীতি করতে আসতে হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement