শহরে পথের পাশে ফ্লেক্স। নিজস্ব চিত্র
রাম মন্দিরের ভূমি পুজোর দিন বাড়িতে রাম নাম জপ করতে বলেছিল বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। কিন্তু এ দিন রাস্তায় দাপিয়ে হল বাইক মিছিল। গেরুয়া পতাকা নিয়ে লকডাউন উপেক্ষা করে শহর জুড়ে ঘুরলেন গেরুয়া সমর্থকরা। এক একটি বাইকে ২-৩ জন নিয়ে রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে শ্লোগান। অনেকের মুখেই ছিল না মাস্ক। বুধবার শিলিগুড়ি শহরের নানা জায়গায় দেখা গেল এমনই ছবি। বুধবার সকাল থেকে শিলিগুড়ির বিভিন্ন মন্দিরে রামের পুজো হয়েছে। সন্ধ্যা নামতেই ফাটানো শুরু হয় বাজি। কোথাও বিধি ভেঙে জমায়েত করে শ্লোগান দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সঙ্ঘ এবং বিজেপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে।
লকডাউনের বিধি ভাঙা হচ্ছে দেখলেই পদক্ষেপ করেছে পুলিশ। শিলিগুড়ি থানার পুলিশ বাঘা যতীন পার্ক এবং হাসপাতাল মোড়ে মিছিল আটক করে মিছিল করা নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার করে। তখন পুলিশের সঙ্গে তাঁদের ধস্তাধস্তি হয় বলে অভিযোগ। শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের এক কর্তা জানান, লকডাউন বিধি ভেঙে অনুমতি না নিয়ে মিছিল করার জন্য গ্রেফতার করা হয়েছে। রাত অবধি ২০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এ দিন শহরের বেশকিছু মন্দিরে যজ্ঞ, পুজোর মাধ্যমে দিনটি পালিত হয়েছে। সন্ধ্যায় প্রদীপ জ্বালানো এবং নাম সংকীর্তনও হয়েছে বেশকিছু মন্দির এবং বাড়িতে। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের দাবি, নিয়ম মেনে পুজো করলেও পুলিশ অন্যায় ভাবে অনেক জায়গায় পুজো বন্ধ করে দিয়েছে। গেরুয়া পতাকা লাগাতে দেয়নি। এর প্রতিবাদে মানুষ পথে নামলে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ তার দায় নেবে না বলেও জানানো হয়েছে। সংগঠনের উত্তরবঙ্গ প্রান্তের সম্পাদক অনুপকুমার মণ্ডল বলেন, ‘‘আমরা কাউকে লকডাউন বিধি ভেঙে মিছিল করতে বলিনি। প্রশাসনের ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।’’ লকডাউন মেনেই মানুষ ঘরে বসেই নিয়ম পালন করেছেন তাঁর দাবি।
এ দিন ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের সুকান্তপল্লি এলাকায় স্থানীয় কিছু বিজেপি নেতা নিয়ম বিধি না মেনে গেরুয়া পতাকা লাগিয়ে মিছিল করছিলেন বলে অভিযোগ। বাধা দিলে তৃণমূলের সঙ্গে ঝামেলা শুরু হয়ে যায় তাঁদের। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। প্রধাননগরে একটি মন্দিরে মাইক লাগিয়ে শ্লোগান এবং নিয়ম বিধি না মেনে জড়ো হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বিজেপি এবং সঙ্ঘ নেতা-কর্মীদের গ্রেফতারের প্রতিবাদে দার্জিলিং জেলা শাসক এবং শিলিগুড়ির সিপিকে স্মারকলিপি দিয়েছে শিলিগুড়ি সাংগঠনিক জেলা বিজেপি। সভাপতি প্রবীন আগরওয়াল বলেন, ‘‘অন্যায়ভাবে পুলিশ গ্রেফতার করছে।’’ শিলিগুড়ির তৃণমূল নেতাদের দাবি, জোর করে নিয়ম ভাঙতে চাইছেন সঙ্ঘ নেতারা। এসব করে সংক্রমণ বৃদ্ধি পাবে।