দূরত্ব ভেঙে, মাস্ক খুলে শঙ্খ ও উলুধ্বনি বালুরঘাটে। ছবি: অমিত মোহান্ত
মালদহ
ইংরেজবাজার শহরের অতুল মার্কেট এলাকার লক্ষ্মীনারায়ণ মন্দিরে মাইকে সকাল থেকেই বাজছে ‘জয় শ্রীরাম’ গান। রটে যায়, মন্দির থেকেই মিছিল বের হয়ে পুরো শহর পরিক্রমা করবেন গেরুয়া শিবিরের অনেকে। বুধবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ মন্দিরে হাজির হন বিজেপির মহিলা মোর্চার জেলা সভাপতি সুতপা মুখ্যোপাধ্যায়, জেলা নেতা অজয় গঙ্গোপাধ্যায় এবং অন্য নেতা-কর্মীরা। উলুধ্বনি, শঙ্খ বাজিয়ে পুজো দিয়ে চলে যান তাঁরা। তার পরেই বিশাল পুলিশ বাহিনী পৌঁছয় এলাকায়। কোনও মিছিল, জমায়েত করা যাবে না বলে মন্দির কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেয় পুলিশ। পুরাতন মালদহের ছাতিয়ান মোড়ের একটি মন্দিরে রাম-পুজোয় যোগ দেন উত্তর মালদহের সাংসদ খগেন মুর্মু। পুরাতন মালদহ শহরের একাধিক এলাকায় চলে কীর্তন। মিছিল না হলেও জেলার বিভিন্ন প্রান্তে মন্দিরে হয় পুজো। বিকেল থেকেই প্রদীপ জ্বালানো হয় জেলার একাধিক বাড়িতে।
উত্তর দিনাজপুর
রায়গঞ্জের মহাত্মা গাঁধী রোডে বিজেপির জেলা কার্যালয়। রাম-পুজো, যজ্ঞ, কীর্তন, লাঠিখেলা ও প্রসাদ বিতরণের আয়োজন করা হয় কার্যালয় সংলগ্ন মাঠে। সেখানে ছিলেন জেলা বিজেপি সভাপতি বিশ্বজিৎ লাহিড়ী, দলের রাজ্য কমিটির সদস্য প্রদীপ সরকার। অভিযোগ, পুজো ঘিরে শিকেয় ওঠে সামাজিক দুরত্ববিধিও। এমনকী অনেকের মুখে মাস্কও ছিল না। কালিয়াগঞ্জের ডালিমগাঁও নেহালিপাড়ায় রাসমেলার মাঠে যজ্ঞ ও রাম-পুজোর আয়োজন করা হয়েছিল। তবে লকডাউন বিধি না মানায় পুলিশ তা বন্ধ করে দেয়। তবে অভিযোগ, কালিয়াগঞ্জের মতো পুলিশি তৎপরতা দেখা যায়নি জেলার অন্য প্রান্তে। বিজেপির জেলা সভাপতি বিশ্বজিৎ বলেন, জেলার প্রতিটি এলাকায় সামাজিক দূরত্ববিধি মেনে ও মাস্ক পরেই সকলে পুজোয় শামিল হয়েছিলেন।
দক্ষিণ দিনাজপুর
বুধবার সকালেই বালুরঘাটের রঘুনাথপুরে রামমন্দিরে হাজির হন বিজেপির নেতা-কর্মীরা। পুজো দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার পরে সেখানে হাজির হয় পুলিশ। পুলিশের এক কর্তার দাবি, লকডাউন সামলে আসতে সময়ের একটু হেরফের হয়ে গেল। অযোধ্যায় রামমন্দিরের শিলান্যাস হতেই বালুরঘাটের কল্যাণী মোড়ে আতসবাজি, পটকা ফাটিয়ে উল্লাসে মেতে ওঠেন বিজেপির নেতা-কর্মীরা। সেই মোড় থেকে বালুরঘাট থানার দূরত্ব মাত্র একশো মিটার। অভিযোগ, পুলিশের দেখা মেলেনি। স্থানীয়দের একাংশের বক্তব্য, কর্মসূচি শেষ হওয়ার পরে ঘটনাস্থলে হাজির হয় পুলিশ। বিজেপির জেলা কার্যালয়ের সামনে কল্যাণী মোড়ে মহিলা কর্মীরা শাঁখ বাজান ও উলুধ্বনি দেন। সেখানে ছিলেন সাংসদ সুকান্ত মজুমদার। তিনি বলেন ‘‘আমরা চোর-পুলিশ খেলছি না। রামমন্দির প্রতিষ্ঠার যে স্বপ্ন, তা পূরণ হওয়ায় আজ সকলে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে কর্মসূচিতে শামিল হন।’’
(তথ্য সহায়তা: অভিজিৎ সাহা, গৌর আচার্য, অনুপরতন মোহান্ত)