লিখন: তৃণমূল কাউন্সিলর শম্পা ছেত্রী বাড়ির দেওয়ালে ‘চোর’ লিখছেন সৌম্যরূপ। ছবি: অভিজিৎ পাল
এক তৃণমূল কাউন্সিলরের বাড়ির দেওয়ালে কালি দিয়ে ‘চোর’ লেখা হচ্ছে। যিনি লিখছেন, তিনি ইসলামপুর কেন্দ্রের উপনির্বাচনের বিজেপি প্রার্থী সৌম্যরূপ মণ্ডল। কাটমানি নেওয়ার অভিযোগে বৃহস্পতিবার ইসলামপুর পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শম্পা ছেত্রীর বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি। সেখানেই এই ছবি দেখা গেল এ দিন। তৃণমূলের একাংশের বক্তব্য, অভিযোগ থাকলে প্রশাসনের কাছে জানান। কিন্তু এ ভাবে বাড়ির দেওয়ালে ‘চোর’ লিখে অপবাদ দেওয়াটা রাজনীতি ছাড়া আর কিছুই নয়। প্রশাসনও জানিয়েছে, তারা এ রকম কোনও অভিযোগ পায়নি।
এ দিন শম্পার বাড়ির গেটে রীতিমতো প্ল্যাকার্ড গুঁজে দিয়ে বিক্ষোভে সামিল হয় বিজেপি। সেখানে উপস্থিত ছিলেন দলের ইসলামপুর টাউন সভাপতি সৌম্যরূপ এবং এলাকার বিজেপি নেতা-কর্মীরা। তাঁদের দাবি, কাটমানিতে ভুক্তভোগীদের সামনে রেখে আন্দোলনে নেমেছেন তাঁরা। যত দিন না পর্যন্ত সেই টাকা ফেরত পাচ্ছেন ভুক্তভোগীরা, তাঁদের আন্দোলন চলতে থাকবে।
শম্পাকে একাধিক বার ফোন করা হলেও তাঁর ফোন বেজেই গিয়েছে। তবে পুরসভার চেয়ারম্যান কানাইয়ালাল আগরওয়াল বলেন, ‘‘এর আগে কাউন্সিলরদের সতর্ক করেছি। কারও বিরুদ্ধে এখনও অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ এলে অবশ্যই সেই কাউন্সিলরকে বলব টাকা ফেরত দিয়ে যেন পুরসভায় আসেন।’’
রাজ্য জুড়ে কাটমানি নিয়ে একের পর এক অভিযোগ উঠেছে শাসক দলের নেতা ও জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে। ইসলামপুরেও একের পর এক কাউন্সিলরের বাড়ির সামনে বিক্ষোভে সামিল হচ্ছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলি। এ দিন বিকেল ৪টে নাগাদ কাউন্সিলর শম্পার বাড়ির সামনে বিক্ষোভে সামিল হন এলাকার বিজেপির নেতৃত্ব। তাঁদের অভিযোগ, এলাকার গরিব মানুষকে ঘর পাইয়ে দেওয়ার নাম করে প্রায় ২৫ হাজার টাকা করে নিয়েছেন ওই কাউন্সিলর। শুধু তাঁর গেটে প্ল্যাকার্ড লাগিয়েই থেমে থাকেননি বিক্ষোভকারীরা। তাঁর বাড়ির দেওয়ালে কালি দিয়ে ‘চোর’ লিখতে দেখা গিয়েছে সৌম্যরূপকে। কাটমানি নিয়ে ওই কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হবে বলে জানিয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব।
পুরসভা নির্বাচনে শম্পা বিজেপির টিকিটে জয়ী হয়েছিলেন। পরে তিনি তৃণমূলে যোগ দেন। এ দিন বেশ কিছুক্ষণ তাঁর বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি। তবে সেখানে কাউন্সিলর বা তাঁর পরিবারের কাউকে দেখা যায়নি। সৌম্যরূপ বলেন, ‘‘এলাকার গরিব মানুষের টাকা মেরে তিনতলা বাড়ি তৈরি করেছেন এই কাউন্সিলর। তার প্রমাণও রয়েছে। এ দিন প্রমাণ-সহ তাঁর বাড়ির সামনে আমরা উপস্থিত হয়েছিলাম। ওই কাউন্সিলর এমন একজনের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন যিনি পরিচারিকার কাজ করে সংসার চালান। আমরা মামলা রুজু করব।’’
অন্য দিকে, ঘরের টাকা অন্য জনকে পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল দাসপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। এ দিন বিডিও সেখানে যাওয়ায় তাঁর কাছে সেই অভিযোগ দায়ের করে ভুক্তভোগী ওই ব্যক্তিসহ যুব কংগ্রেসের সদস্যরা। তাঁদের অভিযোগ, কাটমানির বিনিময় সেই টাকা অন্য জনকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
যুব কংগ্রেসের অভিযোগ, এ দিন একাধিক দাবিতে দাসপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়েছিলেন তারা। সেখানে বিডিও থাকায় তার কাছে উমেদ আলি নামে এক গ্রামবাসীর ঘরের টাকা অন্য জনের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন।