মুখোমুখি নীলাঞ্জন রায় ও বিশ্বনাথ চৌধুরী। ছবি: অমিত মোহান্ত।
দক্ষিণ দিনাজপুরে জোটের যৌথ প্রচার কর্মসূচি চূড়ান্ত করলো আরএসপি ও কংগ্রেস। শনিবার বালুরঘাট এবং তপন বিধানসভা এলাকায় আরএসপি এবং কংগ্রেসের তরফে জেলা নেতৃত্ব বৈঠক করে যৌথ প্রচার কর্মসূচি চূড়ান্ত করেন। বুথস্তর থেকে যৌথ মিছিল, পাড়াবৈঠক, পথসভা ও জনসভার মাধ্যমে দিনক্ষণ ঠিক করে প্রশাসনিক অনুমতির জন্য প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। তপনে আরএসপি-র জেলা নেতা আনিসুর রহমান, বিমল তরফদারেরা কংগ্রেস নেতৃত্বকে নিয়ে বৈঠক করেন। বালুরঘাটে বিশ্বনাথবাবু একাই কংগ্রেস ভবনে হাজির হয়ে যান।
এ দিন, বেলা ১১টা নাগাদ আরএসপি-র জেলা সম্পাদক তথা জোট প্রার্থী বিশ্বনাথ চৌধুরী একা ট্যাক্সিতে চেপে শহরের মঙ্গলপুরের কংগ্রেস ভবনে পৌঁছে যান। সে সময় জেলা কংগ্রেস সভাপতি নীলাঞ্জন রায় সেখানে ছিলেন না। নীলাঞ্জনকে ফোনে ডেকে পাশে বসিয়ে উপস্থিত কংগ্রেস কর্মীদের সঙ্গে বিশ্বনাথবাবুকে মিশে যেতে দেখে কে বলবে, কংগ্রেসের বাড়িতে তিনি অতিথি! যেন নিজ দলের পার্টি অফিসে বসে কর্মী নেতাদের সঙ্গে একাত্ম হয়ে গেলেন পোড়খাওয়া রাজনীতিবিদ বিশ্বনাথবাবু। নীলাঞ্জনকে পাশে নিয়ে কাছাকাছি নিচু স্বরে কথা বলতেও দেখা যায় তাঁকে।
আসন বন্টন নিয়ে এ জেলায় সিপিএম, কংগ্রেসকে আগেই একটি আসন ছাড়তে রাজি হলেও আরএসপি তাদের ভাগের একটি আসন না ছাড়ায় কংগ্রেসের সঙ্গে মনোমালিন্য তৈরি হয়েছিল। তবে বাস্তব পরিস্থিতি এবং রাজ্য নেতৃত্বের হস্তক্ষেপে শুক্রবার মনোনয়ন প্রত্যাহারের মধ্যে দিয়ে দক্ষিণ দিনাজপুরে কংগ্রেস জোটকে দৃঢ করে। ফলে কংগ্রেসের ওই উদ্যোগকে সম্মান দিতেই স্বতঃফুর্ত হয়ে এদিন বিশ্বনাথবাবুর কংগ্রেস ভবনে প্রবেশ বলে দল সূত্রের খবর।
এ দিন, কংগ্রেস ভবনে বসে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে জোট প্রার্থী বিশ্বনাথবাবু বলেন, ‘‘বালুরঘাটে কংগ্রেসের সঙ্গে সব সময় আমাদের সুসম্পর্ক রয়েছে। কার বাড়িতে আগুন লেগেছে, তার রাজনৈতিক রং না দেখে এখানে আমরা আগুন নেভাতে সকলে নেমে পড়ি।’’ বিশ্বনাথবাবুর অভিযোগ, ‘‘বর্তমান শাসক দলের কারণে রাজ্যে আগুন জ্বলছে। সকলে মিলে জোটবদ্ধ ভাবে ওই আগুন নেভাতে ঝাঁপাতে হবে।’’ তিনি জানান, গঙ্গারামপুরে যেমন কংগ্রেসকে সামনে রেখে তৃণমূলের বিরুদ্ধে জোটের লড়াই। তপন, কুশমন্ডি এবং বালুরঘাটে আরএসপি এবং হরিরামপুর ও কুমারগঞ্জ কেন্দ্রে সিপিএম প্রার্থীর হয়ে বাম-কংগ্রেস সহ গণতান্ত্রিক জোটের মিলিত লড়াই জোরদার করতে হবে।
ইতিমধ্যে জেলা কমিটির বৈঠক করে বুথস্তরে জোটের বার্তা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে বলে বিশ্বনাথবাবুকে আশ্বস্ত করে কংগ্রেসের নীলাঞ্জনবাবু। তিনি বলেন, ‘‘ইতিমধ্যে যৌথ প্রচার মিছিল শুরু হয়েছে। কুশমন্ডি, হরিরামপুর ও গঙ্গারামপুরে বৈঠক করে জোটের প্রার্থীর হয়ে মিছিল, সভা পরিচালনার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।’’ বিরোধী জোট প্রার্থীর হয়ে প্রচারে প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব এবং রাজ্য বামফ্রন্ট নেতৃবৃন্দ জেলায় আসবেন বলে জানা গিয়েছে।