ফাইল চিত্র।
বিমল গুরুং-কে ছেড়ে টানা চার বছর একসঙ্গে পথ চলার পর এ বার বিনয় তামাং ও অনীত থাপার মধ্যে দূরত্ব বাড়ছে বলে দার্জিলিং পাহাড়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছে।
গত এক মাসে তা আরও তীব্র হয়েছে বলে মোর্চা সূত্রে খবর। অভিযোগ, বিনয়ের একা সিদ্ধান্ত নেওয়া নিয়ে দলে ক্ষোভ বেড়েছে। এতে দল ছাড়ার ঘটনাও শুরু হয়েছে বলে মোর্চারেই একাংশের দাবি। তেমনিই, শীর্ষ নেতাদের প্রকাশ্যে কথা বলার ক্ষেত্রেও বিনয়ের আপত্তি দলে অসন্তোষ বাড়িয়েছে। মোর্চা সূত্রে খবর, এই সব নানা কারণে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছের মানুষ হয়ে উঠেছেন অনীত। তিনি আবার জিটিএ-র চেয়ারম্যান হতে পারেন বলেও মোর্চায় জোর জল্পনা।
শুক্রবার দুপুরে দার্জিলিঙের এইচডি লামা রোডের একটি হোটেলে বিনয়কে ছাড়াই সতীশ পোখরেল, অমর সিংহ রাই, অলককান্তমণি থুলুংদের নিয়ে বৈঠক করেছেন অনীত। তিনি অবশ্য বলেছেন, ‘‘দলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বৈঠক। দার্জিলিং সদরে দলকে আরও মজবুত করতেই হবে। নেতাদের থেকে রিপোর্ট নিচ্ছি।’’ বিনয়ের অনুপস্থিতি নিয়ে অনীতের বক্তব্য, ‘‘ভোটের পর সাংগঠনিক রিপোর্ট তৈরি করছি। সভাপতি তা করতে বলেছিলেন। ওঁকে পরে জানাব।’’ বিনয়ের দাবি, তাঁর নির্দেশেই দার্জিলিঙের ওই বৈঠক হয়েছে। অনীতের সঙ্গে দূরত্ব বাড়াটা পুরোটাই গুজব।
মোর্চা সূত্রের আরও খবর, এর মধ্যেই বিনয়পন্থী শীর্ষ নেতাদের কেউ কেউ শাসকদল তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ করে দলে যোগ দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন বলে শোনা যাচ্ছে। যদিও শাসকদলের তরফে সবুজ সঙ্কেত দেওয়া হয়নি। যা নিয়ে বিনয় বলেছেন, ‘‘এ সব তো জানা নেই। কারা তাঁরা! সব গুজব।’’
যদিও বিনয়পন্থীদের ‘একলা চলো’ নীতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিশেষ করে, পাহাড়ের তৃণমূলের একটা অংশ গুরুং-র পাশে চলে গিয়েছেন। আবার দলের বিভিন্ন মহকুমা, সমষ্টি, ব্লক কমিটি বিনয় নিজেই ভেঙে দেন। বিভিন্ন বৈঠকে অনীত ছিলেন না। দলের নেতারা জানান, অনীত তরুণ এবং প্রবীণদের মধ্যে সমন্বয় করে চলার পক্ষপাতী হলেও বিনয় নিজের মতো দল চালাচ্ছেন। কালিম্পং, তিস্তাবাজারে ভোট জিতলেও দলের সাংগঠনিক সমস্যা প্রকট হয়েছে। দার্জিলিং সদরে তা ঠেকাতেই অনীত আগেভাবে সবাইকে ডেকে বৈঠকে বসে পরিস্থিতি সামাল দেন বলে মোর্চা সূত্রের দাবি।
মোর্চা সূত্রে বলা হচ্ছে, এই সব নিয়েই ‘বিরক্ত’ শাসকদলের শীর্ষ নেতৃত্ব। তাঁরা চেয়েছিলেন, ভোটের আগে বিনয় ও বিমলের মধ্যে অন্তত আসন সমঝোতা হোক। কিন্তু দুই নেতাই অনড় থাকায় তা হয়নি। এখন জয়ের পরেও বিনয়পন্থী মোর্চা ভেঙে যেতে বসেছে। তাই অনীতের প্রতি বেশি করে আস্থাবান হতে পারেন প্রশাসনিক শীর্ষ নেতৃত্ব। পাহাড়ে এখন প্রশ্ন, অনীতের এই পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার বৈঠক কি তারই ইঙ্গিত?