হাজির: কলকাতায় সল্টলেকের গোর্খা ভবনের সামনে গুরুং। নিজস্ব চিত্র
পঞ্চমীর সন্ধ্যায় কলকাতায় তাঁর আত্মপ্রকাশ। পাহাড়ে কবে ফিরবেন, তা এখনও পরিষ্কার নয়। কিন্তু রাজনৈতিক বিন্যাস বদলের ফলে প্রশ্ন উঠেছে, বিমল গুরুংয়ের উপস্থিতি উত্তরের ভোটে কতটা প্রভাব ফেলবে?
লোকসভা ভোটের আগে গুরুংয়ের পাতলেবাসের বাড়ি, অফিস, দরবার ঘরের সামনে যে নিঃঝুম পরিবেশ ছিল, তাতেই লুকিয়ে ছিল তাঁর প্রতি নীরব সমর্থন। তাঁর দরবার ঘরের ঠিক উল্টো দিকের বাড়িতে যে মানুষজনেরা থাকেন, তাঁরাও এক বাক্যে বলেছিলেন, ফিরে এলে ঘরের ছেলে গুরুংয়ের পাশে দাঁড়াবেন তাঁরা। তার ঠিক দেড় বছর পরে, বুধবার সন্ধ্যায়, তিন বছর ধরে ফেরার গুরুং কলকাতায় বসে বললেন, ‘‘এই ফেরার জীবনে রাজনীতিকে ভাল করে বুঝছি। রাজ্যের এক রকম রাজনীতি। দিল্লির আর এক রকম। কিন্তু দেখলাম, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কথা রাখেন, দিল্লিতে মোদী-অমিত শাহেরা রাখেন না।’’
পর্যবেক্ষকদের একাংশের দাবি, গুরুংকে পাশে পেলে শুধু পাহাড়ই নয়, সংলগ্ন তরাই, ডুয়ার্সেও প্রভাব বিস্তার করতে পারবে তৃণমূল। বিশেষ করে গুরুং যেখানে পরিষ্কার বলেছেন, ‘‘আলাদা রাজ্য, রাজনৈতিক সমাধানের দাবি আমাদের থাকবে। ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে যে দল কাজ করবে, আমরা তাঁদের পাশে থাকব। এখন ২০২১ সালে আমরা তৃণমূলকে জেতাব।’’
গুরুং ঘাসফুল শিবিরে থাকলে পাহাড়ের দার্জিলিং, কালিম্পং, কার্শিয়াং, সমতলের ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি, নাগরাকাটা, আলিপুদুয়ারের গোর্খা অধ্যুষিত এলাকা মিলিয়ে গোটা দশেক আসনে প্রভাব পড়তে পারে। বিশেষ করে চা বাগান অঞ্চলে।
প্রশ্ন হল, বিমলের সঙ্গে অনীত থাপা, বিনয় তামাংদের সমীকরণ কী হবে? শুধু তাঁর ডাকেই ২০০৯ সাল থেকে পাহাড়ে বিজেপি জিতে আসছে। কিন্তু ইতিহাস বলছে, এর আগে দিল্লি থেকে ফিরে আর পাহাড়ে উঠতে পারেননি সুবাস ঘিসিং। বাধা দিয়েছিলেন বিমলই। এ বারেও কি তেমন কিছু ঘটবে? নাকি বিনয়-অনীতের সঙ্গে নতুন সমীকরণ তৈরি হবে বিমলের? বিমল নিজে এই নিয়ে বলেছেন, ‘‘দেখুন না, কী হয়!’’
পাহাড়ের নেতারা এ দিন রাত অবধি মন্তব্য করতে চাননি। বিনয়পন্থীর অবশ্য এখনও উল্টো সুরেই কথা বলছেন। তাঁদের কেন্দ্রীয় কমিটির মুখপাত্র সতীশ পোখরেল বলেছেন, ‘‘বিমল চেয়ারের রাজনীতি করেন। সেটা করতেই পাহাড়ে আসতে চাইছেন।’’ আরেক মুখপাত্র কেশবরাজ পোখরেলের কথায়, ‘‘পাহাড়ের মানুষ বিশ্বাসঘাতককে চিনুক। মানুষের মৃত্যু, রক্ত নিয়ে বিমল, রোশনেরা রাজনীতি করল।’’