আস্তানায়: সাফারি পার্কের খাঁচায় সচিন। শনিবার। নিজস্ব চিত্র
বেঙ্গল সাফারি পার্কে নিজের ঘেরাটোপ থেকে কী ভাবে পালাল চিতাবাঘ সচিন। তা নিয়ে কাটাছেঁড়া করতে গিয়ে নজরদারির গাফিলতির ছবিই উঠে এল শনিবার। পর্যাপ্ত নজরদারি ক্যামেরা নেই এনক্লোজারগুলোর আশেপাশে। নিয়মিত গাছের ডাল ছাঁটার ব্যবস্থাও নেই। এ দিন বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মন সেগুলো দ্রুত চালুর আশ্বাস দিয়েছেন।
সচিনের পালানোর ঘটনা নিয়ে বেশ কিছু সমীক্ষা শুরু করেছে সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষ। লোহার বেড়া লাগানো এনক্লোজারের মধ্যে বড় গাছগুলোর ডালপালা এতটাই বেড়ে গিয়েছিল যে সেটির একটিতে ভর করেই সচিন লাফ দিয়েছে। আপাতত এমনটাই বেরিয়ে এসেছে পার্ক কর্তৃপক্ষের তদন্তে।
মন্ত্রী বিনয় বর্মন বলেন, ‘‘১ জানুয়ারি গাছে উঠেই বেড়ার বাইরে ঝাঁপ মারে সচিন। গাছের ডালপালা ছোট করার কাজ শীঘ্রই শুরু করা হবে। স্থায়ী কর্মী নিয়োগ হবে। নজরদারি বাড়ানো হবে।’’
কী ভাবে বাড়বে নজরদারি? বনকর্তারা জানান, এনক্লোজারের ভিতরে এখন কিছু সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো রয়েছে। কিন্তু সচিন কাণ্ডের পরে সেগুলো পর্যাপ্ত নয় বলেইমনে করছে পার্ক কর্তৃপক্ষ। কারণ ওই সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো এনক্লোজারের চারদিকে ৩৬০ডিগ্রি নজর রাখার মতো সক্ষম নয়। এ বার এনক্লোজারের মধ্যে ও তার বাইরে লোহার দেওয়াল বরাবর আরও সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হবে। বেঙ্গল সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত অধিকর্তা রাজেন্দ্র জাখর বলেন, ‘‘আমরা ঘটনার পর থেকেই বেশ কিছু সমীক্ষা করতে শুরু করেছি। আর কোন কোন জায়গায় সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হবে, সেগুলো যাচাই করে দেখা হচ্ছে।’’ এতদিন বেঙ্গল সাফারি পার্কে স্থায়ী কর্মী ছিল না। মন্ত্রী জানান, ১ জন রেঞ্জার, ৩ জন বিট অফিসার এবং ১০ জন ফরেস্ট গার্ডকে শীঘ্র স্থায়ী করা হবে।
কেন এগুলো আগে করা গেল না? রাজ্য চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ সদস্য সচিব বিনোদ যাদব বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের বলা রাস্তাতেই এনক্লোজারের লোহার বেড়ার উচ্চতা ঠিক হয়েছে। তাতে রিফ্লেক্টর এবং বৈদ্যুতিক তারের ঘেরা লাগানো হয়েছে। দীর্ঘ দিন ধরে চিতাবাঘ নিয়ে কাজ করার পরেও তা যে এরকম কাণ্ড ঘটাবে তা কারই বা জানা ছিল।’’
আপাতত চিকিৎসাধীন রয়েছে সচিন। সাফারির কর্তারা জানান, চোখের নিচে এবং পায়ে চোট রয়েছে। সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত তাকে সাফারিতে নামানো হবে না। গতকাল রাতেই ৩ কেজি এবং এ দিন সকালে ১ কেজি মাংস খেয়েছে সে।