প্রতীকী ছবি।
সচেতনতা নিয়ে প্রচার চালাতে গিয়েই কী উল্টো ফল হল— গণপিটুনিতে এক বহুরূপী মৃত্যুর পরে এমনই প্রশ্ন উঠেছে নাগরাকাটায়। গত বুধবার নাগরাকাটায় ছেলেধরা নিয়ে গুজবে কাউকে কান না দেওয়ার আর্জি জানিয়ে প্রশাসনের তরফে মাইকে ঘোষণা করা হয়। নাগরাকাটার বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, এর পর থেকেই এলাকায় ছেলেধরা রয়েছে বলে চর্চা শুরু হয়। সম্প্রতি আলিপুরদুয়ারে ছেলেধরা গুজব ছড়ানোর আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তা আটকাতেই আলিপুরদুয়ারের লাগোয়া জলপাইগুড়ির ডুয়ার্সের থানাগুলিতে সচেতনতা প্রচার শুরুর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তাতেই হিতে বিপরীত কিনা, এখন এই প্রশ্ন বড় হয়ে দেখা দিয়েছে।
আলিপুরদুয়ায়ের সাংসদ জন বার্লা এই ঘটনায় পুলিশকে আরও সতর্ক থাকতে হবে বলে পরামর্শ দিয়েছেন। জন বলেন, “শুধু মাইকে দায়সারা প্রচার চালালে চলবে না। বরং সমাজমূলক কাজ করে যে সব সংগঠন, পুলিশকে তাদেরও কাজে লাগাতে হবে।’’ জনের কথায়, ‘‘মাইকে প্রচার করলে উল্টে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বেড়ে যেতে পারে।”
নাগরাকাটার বিধায়ক শুক্রা মুন্ডা বলেন, “একদম দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। গ্রামের গলিতে গলিতে দাঁড়িয়ে পঞ্চায়েতের সদস্যদের নিয়ে পুলিশকে প্রচার করতে হবে। প্রয়োজনে আমরাও পথে নামব।”
আদিবাসী বিকাশ পরিষদের তরফে চা বাগান নেতা অমরদান বাক্সলা বলেন, “সন্দেহজনক কাউকে দেখলে পুলিশকে ডাকতে হবে, আইন হাতে তুলে নেওয়া সমর্থন করা যায় না। আমরাও মানুষকে বোঝাব।” কিন্তু ছেলেধরা সন্দেহে জনতা যাকে পেটাচ্ছে, তাকে পুলিশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে গেলেও যে বিপত্তি ঘটবে না, সেই নিশ্চয়তা কেউ দিতে পারছেন না। বরং অনেকেই মনে করছেন, থানাও আক্রান্ত হতে পারে। যুক্তি হিসেবে গত বছর ক্রান্তির ঘটনা স্মরণ করাচ্ছেন তাঁরা। ছেলেধরা গুজব এবং গণরোষ থেকে বাঁচাতে দুই ফেরিওয়ালাকে উদ্ধার করে ক্রান্তি ফাঁড়িতে নিয়ে এসেছিল পুলিশ। কিন্তু এর পর উত্তেজিত জনতা ফাঁড়িতেই চড়াও হয়। তাই কোন পথে এগোলে মিলবে পরিত্রাণ, আপাতত সেই পথই এখনও হাতড়ে বেড়াচ্ছে পুলিশ।
মালবাজারের এসডিপিও দেবাশিস চক্রবর্তী বলেন, “আমরা সাধ্যমতো মাইকে প্রচার করে মানুষকে বিরত থাকতে অনুরোধ করেছিলাম। তবুও ফল হল না।” শীঘ্রই কিছু না কিছু পথ বেরোবে, আশা পুলিশের।