ভরসন্ধ্যায় লুঠ, আতঙ্কিত শহর

জলপাইগুড়িতে ভর সন্ধ্যায় ব্যাঙ্ক ম্যানেজারকে গাড়িতে তুলে নিয়ে গিয়ে লুঠের অভিযোগে শহর জুড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে৷ ঘটনায় পুলিশের ভূমিকায় রীতিমতো ক্ষুব্ধ তৃণমূলের পুর চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে সাংসদ৷

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০১৬ ০২:৩৬
Share:

জলপাইগুড়িতে ভর সন্ধ্যায় ব্যাঙ্ক ম্যানেজারকে গাড়িতে তুলে নিয়ে গিয়ে লুঠের অভিযোগে শহর জুড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে৷ ঘটনায় পুলিশের ভূমিকায় রীতিমতো ক্ষুব্ধ তৃণমূলের পুর চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে সাংসদ৷ তবে ঘটনার পর চব্বিশ ঘণ্টা কেটে গেলেও এখনও এর কোনও কিনারা করতে পারেনি পুলিশ৷ যদিও গোটা ঘটনায় মুখে কুলুপ এঁটেছেন জেলার পুলিশকর্তারা ৷

Advertisement

শুক্রবার ভর সন্ধ্যায় জলপাইগুড়ি শহরের নতুনপাড়া এলাকা দিয়ে থেকে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ম্যানেজার অভিজিৎ বড়ুয়াকে অস্ত্র দেখিয়ে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায় দুস্কৃতীরা৷ রংধামালিতে নিয়ে গিয়ে তাঁকে মারধর করা হয়। লুঠ করে নেওয়া হয় সর্বস্ব। দুষ্কৃতীদের হাত থেকে কোনও মতে ছাড়া পেয়ে তিনি ছুটে যান জলপাইগুড়ির কোতোয়ালি থানায়। থানায় তাঁকেই এক দফা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তার পরে রাতেই তাঁকে নিয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ৷

শনিবার অভিজিৎবাবু সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে চাননি। তবে তাঁর এক সহকর্মী জানান, এফআইআরে অভিজিৎবাবু অভিযোগ করেছেন, শুক্রবার সন্ধ্যায় অন্য দিনের মতোই স্কুটি চালিয়ে ব্যাঙ্ক থেকে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি৷ নতুনপাড়া এলাকায় দুষ্কৃতীরা তাঁকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়৷ তাঁর কাছে ছিল হাজার চারেক টাকা। রংধামালিতে নিয়ে গিয়ে সেই টাকা তাঁর কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয়। কিন্তু এটিএম কার্ড নেয়নি দুষ্কৃতীরা। যেমন নেয়নি স্কুটিটিও। বরং তাঁকে তুলে নিয়ে যাওয়ার সময় তাঁরই স্কু়টি চেপে দুই দুষ্কৃতী পিছন পিছন আসে। সেটি আবার পরে তাঁকে ফিরিয়েও দেওয়া হয়!

Advertisement

পুলিশ এ দিনও অভিজিৎবাবুকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। দুপুরের দিকে কোতোয়ালি থানায় যান জেলার পুলিশ সুপার আকাশ মেঘারিয়াও৷ তবে বিষয়টি নিয়ে তিনিও মুখ খুলতে চাননি। পুলিশ সূত্রের খবর, যে এলাকা থেকে অভিজিৎবাবুকে গাড়িতে তোলা হয়েছে, বা যেখানে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, সেখানে কোনও ভাবে সিসিটিভি-র ফুটেজ পাওয়া যায় কি না, তাও হন্যে হয়ে খুঁজছে পুলিশ৷

পুলিশের কাছে সব থেকে বড় প্রশ্ন, অভিজিৎবাবুকে গাড়িতে তোলার পর দুষ্কৃতীরা কেন তাঁর স্কুটিটি গাড়ির পেছন পেছন নিয়ে গেল? কেনই বা এটিএম কার্ডটি হাতে পাওয়ার পরও তা অভিজিৎবাবুকে ফিরিয়ে দিল তারা? জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, দুষ্কৃতীদের খোঁজার পাশাপাশি এই বিষয়গুলিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে ৷

তবে ভর সন্ধ্যায় এমন ঘটনায় শহরের অনেকেই চিন্তিত। সেই দলে রয়েছেন অভিজিৎবাবু যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে কাজ করেন, তার জলপাইগুড়ির রিজিওনাল ম্যানেজার হেমন্ত রাইও ঘটনায় চিন্তিত। তিনি বলেন, ‘‘আমার সব সহকর্মীরা সন্ধ্যার পর ব্যাঙ্ক থেকে বাড়ি ফেরেন৷ এই ঘটনার পর তাঁদের সবার জন্যই চিন্তা হচ্ছে৷’’

এ দিকে যে এলাকা থেকে অভিজিৎবাবুকে গাড়িতে তোলা হয়েছে বলে অভিযোগ, সেই নতুনপাড়ার একটি আবাসনের কেয়ারটেকার রাধারমণ সাহা বলেন, “গত কাল সন্ধ্যায় খানিকক্ষণের জন্য আবাসনের ওপরে গিয়েছিলাম৷ নীচে নামার পর দেখি, রাস্তা দিয়ে কয়েকটি বাচ্চা ছেলে নিজেদের মধ্যেই হেটে যেতে যেতে বলছে, দেখলি ওই লোকটাকে কয়েক জন কী ভাবে গাড়িতে তুলে নিয়ে গেল!” রাধারমণবাবুর কথায়, “প্রথমে বিষয়টি আঁচ করতে পারিনি৷ পরে বুঝলাম কি হয়েছে ৷”

এই সব শুনেটুনে চিন্তিত পুরসভার চেয়ারম্যান মোহন বসু এবং সাংসদ বিজয় বর্মনও। তাঁদের দাবি, রাত পর্যন্ত রাস্তায় রাস্তায় পুলিশি টহল বাড়ানো উচিত।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement