প্রতীকী ছবি
জলপাইগুড়িতে পানশালা কাণ্ডে এক গায়িকাকে বাংলাদেশি নাগরিক বলে দাবি করেছিল পুলিশ। এ বার পুলিশের দাবি, ওই গায়িকার ভারতীয় রেসিডেন্সিয়াল সার্টিফিকেট তৈরি করে দিয়েছে জি রবিকুমার নামে এক ব্যক্তি। বিজেপির কর্মী রবি কুমারের বাড়ি খড়্গপুর শহরের নিউ সেটলমেন্ট এলাকায়। মঙ্গলবার রাতে মেদিনীপুরের একটি পানশালা থেকে তাঁকে জলপাইগুড়ি থানার পুলিশ গিয়ে গ্রেফতার করে বলে খবর। যদিও বিষয়টি নিয়ে বিজেপির পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সহ-সভাপতি গৌতম ভট্টাচার্য বলেন, “উপ-নির্বাচনের সময়ে মিথ্যা মামলায় আমাদের অনেককেই ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে।’’ তবে তাঁর কথায়, ‘‘রবি আমাদের দলের সাধারণ কর্মী, যদিও রবি কুমারের সঙ্গে অনেক দিন ধরে দলের যোগাযোগ কমে গিয়েছিল। এ ক্ষেত্রে আইন আইনের পথে চলবে।”
এই ঘটনায় নাম জড়িয়েছে খড়্গপুরের সাংসদ, বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষেরও। ওই গায়িকার প্রমাণপত্রে দিলীপবাবুর শংসাপত্রও রয়েছে বলে দাবি পুলিশের। জলপাইগুড়ির জেলা পুলিশ সুপার অভিষেক মোদী বলেন, “জাল শংসাপত্র তৈরির অভিযোগে এক জনকে পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এক গায়িকার জাল নথি তৈরি করা হয়েছিল। ওই গায়িকা বাংলাদেশের নাগরিক। এ দেশে বিভিন্ন ভুয়ো নথি জমা দিয়ে প্রমাণপত্র বানানো হয়েছে। দিলীপ ঘোষের দেওয়া শংসাপত্রও রয়েছে। সেগুলি যাচাই করছি, নোটিস করা হচ্ছে।” দিলীপবাবুর ফোন বেজে গিয়েছে, এই প্রসঙ্গে তাঁর কোনও বক্তব্য মেলেনি।
ওই গায়িকা বর্তমানে জামিনে মুক্ত। তবে জলপাইগুড়ির পানশালা কাণ্ডে এখনও জেলে রয়েছে পানশালার মালিক তৃণমূল নেতা ধর্ম পাসোয়ান। জলপাইগুড়ি সদরের সার্কেল ইন্সপেক্টর দীপোজ্জ্বল ভৌমিকের নেতৃত্বে বিশেষ তদন্তকারী দল তথা সিট গঠন করে পানশালা কাণ্ডের তদন্ত চলছে। গত ১৬ জুলাই জলপাইগুড়ির থানা মোড়ে তৃণমূল নেতা ধর্ম পাসোয়ানের পানশালায় অভিযান চালিয়েছিল পুলিশ। পুলিশের দাবি, ওই গায়িকাই অভিযোগ করেন, পানশালায় দেহ ব্যবসা করতে বাধ্য করানো হয়। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই অভিযান হয়। পরে অবশ্য ওই গায়িকার আইনজীবীরা দাবি করেন, পুলিশ জোর করে গায়িকাকে দিয়ে সাদা কাগজে সই করিয়েছে। গায়িকা নিজে কোনও অভিযোগ করেননি বলে তাঁর আইনজীবীর দাবি। তা নিয়ে হাইকোর্টে মামলাও হয়েছিল। হাইকোর্টের নির্দেশেই এখন পুলিশ তদন্ত চালাচ্ছে।
বুধবার জলপাইগুড়ি জেলা আদালতের মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট সুতীর্থ বন্দ্যোপাধ্যায় রবি কুমারকে সাত দিনের পুলিশি হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। ধৃতের আইনজীবী অভিজিৎ সরকার বলেন, ‘‘মূল মামলায় পুলিশ এক মাস ধরে কেস ডায়েরি দিতে পারেনি। সব অভিযোগ ভিত্তিহীন।’’