Bangladesh Unrest

শুরু আমদানি বাণিজ্য, ঝুঁকি নিয়েই চলাচল

কোচবিহার চ্যাংরাবান্ধা সীমান্ত দিয়ে প্রতি দিন প্রায় পাচঁ কোটি টাকার রফতানি বাণিজ্য হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০২৪ ০৯:২৭
Share:

Sourced by the ABP

দু’দিন ধরে আমদানি-রফতানি বন্ধ কোচবিহারের চ্যাংরাবান্ধা সীমান্তে। মঙ্গলবার সকালেও বাংলাদেশ শুল্ক দফতরের অফিস ছিল ফাঁকা। ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়াতেই অফিস ছেড়ে পালিয়ে যান শুল্ক দফতরের আধিকারিকেরা। সেই থেকে সীমান্ত পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। শেষমেশ মঙ্গলবার বেলা ১২টা নাগাদ সাধারণ পোশাকে অফিসে পৌঁছন শুল্ক দফতরের কর্মীরা। তাঁদের পাহারা দেয় বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড। তার পরে আমদানি বাণিজ্য শুরু হয়। চিকিৎসার জন্য এ দিন ঝুঁকি নিয়েই একাধিক বাংলাদেশি বাসিন্দা চ্যাংরাবান্ধা পৌঁছন। এ দিনও সীমান্তে কড়া নজরদারি। পাহারা দ্বিগুণ করে দেওয়া হয়েছে দু’দেশের মধ্যে।

Advertisement

ব্যবসায়ীরা জানান, কোচবিহার চ্যাংরাবান্ধা সীমান্ত দিয়ে প্রতি দিন প্রায় পাচঁ কোটি টাকার রফতানি বাণিজ্য হয়। তার বাইরে রয়েছে আমদানিও। চ্যাংরাবান্ধা এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মনোজ কানু বলেন, ‘‘দু'দিন ধরে বাণিজ্য পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। কয়েক কোটি টাকার লোকসান হয়েছে। এর মধ্যে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ায় আমদানি শুরু হয়েছে। আমাদের ২০৭টি ট্রাক ও পারে রয়েছে। গত কাল অধিকাংশ চালককে ফিরিয়ে আনা হয়। আজ আবার তাঁরা ট্রাক আনতে গিয়েছেন। ওই ট্রাক ফিরলে আমরা রফতানি শুরু করব।’’ চ্যাংরাবান্ধা কাস্টমস ক্লিয়ারিং এজেন্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনেরর সম্পাদক বিকাশ সাহা বলেন, ‘‘শুধু রফতানিতেই প্রতি দিন পাঁচ কোটি টাকার উপরে ব্যবসা হয়। প্রচুর মানুষ এর উপরে নির্ভরশীল। বাণিজ্য বন্ধ হওয়ায় প্ৰত্যেকে সমস্যার মুখে পড়েছে। আজকে বাংলাদেশের শুল্ক দফতরের আধিকারিকেরা ব্যবসা শুরুর কথা জানানোর পরেই উদ্যোগ নেওয়া হয়।’’
গত কাল ট্রাক নিয়ে বাংলাদেশে গিয়েছিলেন সম্পদ রায়। তিনি জানাল, ভারত থেকে ২০৭টি ট্রাক বাংলাদেশে গিয়ে আটকে পড়ে। তার মধ্যে তিনি ছিলেন। ওই ট্রাক চালকের কথায়, ‘‘পার্কিংয়ের ভিতরে গাড়ি লাগিয়ে বসেছিলাম। খুব গন্ডগোল হয়েছিল বাইরে। ভয় হচ্ছিল। পরে পুলিশ এসকর্ট করে ১৯০ জনকে দেশে ফিরিয়েছে। বাকি সতেরো জন ট্রাক না নিয়ে ফিরতে চাননি।’’ আজ ফের সম্পদেরা ট্রাক আনতে বাংলাদেশে গিয়েছেন।

বাংলাদেশ থেকে কাপড়বোঝাই ট্রাক নিয়ে এ দিন ভারতে পৌঁছন সবুজ আহমেদ। তিনি বলেন, ‘‘দেশে খুব গন্ডগোল হচ্ছে। আমরা আতঙ্কে রয়েছি। দিন তিনেক বাড়ি থেকে বেরোইনি। কিন্তু কাজ তো করতেই হবে। তাই ট্রাক নিয়ে এসেছি।’’

Advertisement

চিকিৎসার জন্যও এ দিন বেশ কয়েক জন বাংলাদেশের বাসিন্দা ভারতে এসেছেন। রংপুরের বাসিন্দা মহম্মদ মঞ্জুর কবীর চিকিৎসার জন্য ভেলোর যাচ্ছেন। রাহেদুল ইসলাম ও সামা পারভীন দুই সন্তানকে নিয়ে চিকিৎসার জন্য দিন পনেরো আগে বেঙ্গালুরু গিয়েছিলেন। তাঁরা উদ্বেগ নিয়ে দেশে ফিরছেন। তাঁরা বলেন, ‘‘সংবাদে সব জেনেছি। পরিবারের লোকের সঙ্গেও ভাল ভাবে যোগাযোগ করতে পারছি না। আমরা চাই দেশে শান্তি ফিরুক। ছাত্ররা পড়াশুনো করুক। আর কারও যেন মৃত্যু না হয়।’’ বাংলাদেশের আর এক বাসিন্দা আজিজুল হক এ দিন চ্যাংরাবান্ধা হয়ে বাংলাদেশে ফিরেছেন। তিনি জানান, তিনি বিএনপি নেতা। বাংলাদেশের সরকার বিরোধী আন্দোলন তিনি সমর্থন করেছিলেন। সে জন্য তাঁর বাড়ি-ঘর ভাঙচুর হয়। জীবন বাঁচাতে তিনি কার্যত ভারতে পালিয়ে এসেছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘আমরা খুব খুশি হয়েছি। স্বৈরাচারী শাসকের পরাজয় হয়েছে। আমি নিজে আত্মগোপন করে ছিলাম। এখন দেশ স্বাধীন হয়েছে। স্বাধীন দেশে ফিরছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement