৭২ ঘণ্টা পরে জেলায় উঠেছিল ভারতের পতাকা

গৌরব দিবস পালনে গেরুয়া উদ্যোগ

১৯৪৭ সালের ১৫ অগস্ট দেশের স্বাধীনতা ঘোষণার তিন দিন পর ১৮ অগস্ট স্বাধীনতা পেয়েছিল বালুরঘাট।

Advertisement

অনুপরতন মোহান্ত

বালুরঘাট শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০১৯ ০৫:০৫
Share:

পতাকা উত্তোলন: ডাঙিতে শহিদ বেদীতে রবিবার। নিজস্ব চিত্র

মাত্র দু’দিনের ব্যবধানে জোড়া স্বাধীনতা উৎসবে মাতল বালুরঘাট। ১৫ অগস্ট দেশের স্বাধীনতা দিবস পালনের পর রবিবার সকালে ফের নিস্তরঙ্গ আত্রেয়ী পাড় ঢেউয়ে কেঁপে উঠল। সেদিনের বালুরঘাটের বিজয়গাথা শুনে আন্দোলিত হল তরুণ প্রজন্ম। জাতীয় পতাকা উত্তোলন থেকে জাতীয়সঙ্গীতে ভেসে সে দিনের ভারত ছাড়ো আন্দোলনের স্মৃতি বয়ে উঠে এল সে দিনের সংগ্রামের কাহিনি। প্রবীণদের পাশে দাঁড়িয়ে নতুন প্রজন্মের তরুণরা জানাল—তারা ভোলেনি বীর সংগ্রামীদের আত্মত্যাগে অর্জিত স্বাধীন বালুরঘাটের অবদান।

Advertisement

১৯৪৭ সালের ১৫ অগস্ট দেশের স্বাধীনতা ঘোষণার তিন দিন পর ১৮ অগস্ট স্বাধীনতা পেয়েছিল বালুরঘাট। রবিবার দিনটির স্মরণে পালিত অনুষ্ঠানে শামিল হন সাংসদ থেকে প্রবীণ নাগরিক ও তরুণ প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা। শহরের ঐতিহ্যবাহী হাইস্কুল মাঠের মূল উৎসবটি বিজেপির উদ্যোগে গৌরব দিবস হিসাবে পালিত হয়।

এ দিন সকাল ১১টা নাগাদ সেখানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন সাংসদ সুকান্ত মজুমদার। উপস্থিত ছিলেন দলের জেলা সভাপতি শুভেন্দু সরকার, সাধারণ সম্পাদক বাপি সরকার প্রমুখ। পতাকা উত্তোলনের পর সাংসদের নেতৃত্বে উপস্থিত জনতা গেয়ে ওঠেন জাতীয়সঙ্গীত। পাশাপাশি আত্রেয়ীর কল্যাণীঘাটের তীরে পরিবেশপ্রেমীরা সমবেত হয়ে জাতীয় পতাকা তুলে দিনটিকে স্মরণ করেন। সেখানে শহরের প্রবীণ বাসিন্দাদের সঙ্গে স্কুলের ছাত্রছাত্রীরাও শামিল হয়েছিল।

Advertisement

১৯৪৭ সালের ১৪ অগস্ট পাকিস্তান এবং ১৫ অগস্ট ভারত স্বাধীন বলে ঘোষিত হয়। কিন্তু র‌্যাডক্লিফের প্রস্তাব অনুসারে ওই সময় দু’টি দেশের যে সীমানা নির্দেশ হয়েছিল, তা প্রয়োগের ক্ষেত্রে সমস্যার সৃষ্টি হয়। যে কারণে বালুরঘাট ও তার আশপাশের এলাকা ১৫ অগস্টের পরেও পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত ছিল। কারণ ওই এলাকাগুলিকে নোশোন্যাল এলাকা অর্থাৎ ধারণাগত বা প্রমাণের উপর নির্ভরশীল নয় এমন এলাকা বলে প্রাথমিক ভাবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। সে দিন বালুরঘাটে উঠেছিল পাকিস্তানের পতাকা।

তিন দিন পর ১৮ অগস্ট বালুরঘাট, রায়গঞ্জ, গোয়ালপোখর সহ বেশ কিছু এলাকা স্বাধীন ভারতের অংশ হিসাবে ঘোষিত হলে বালুরঘাট হাইস্কুল মাঠে প্রথম স্বাধীনতার মহাসমারোহ উৎসবে মেতে ওঠেন শহরবাসী। ১৯৪২-য়ের ভারত ছাড়ো আন্দোলনে ১৪ সেপ্টেম্বর স্বাধীনতা যোদ্ধাদের বালুরঘাট অভিযানের মধ্যে দিয়ে ব্রিটিশ শাসন ব্যবস্থাকে পরাস্ত করার গৌরবময় অধ্যায় তুলে ধরে প্রয়াত সরোজরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়, রাধামোহন মোহান্ত, কানু সেন, শুটকা বাগচি সহ বিশিষ্ট স্বাধীনতা সংগ্রামীদের অবদান উল্লেখ করে বক্তব্য রাখেন সাংসদ সুকান্ত মজুমদার। শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের অবদানও স্মরণ করেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement