আবেদন করার দিন দশেকের মধ্যেই নতুন শ্রমিক সংগঠন গড়ার অনুমোদন পেলেন হরকা বাহাদুর ছেত্রী।
ছেড়ে আসা দলের ওপর চাপ বাড়াতে নতুন শ্রমিক সংগঠন তৈরি করছেন কালিম্পঙের প্রাক্তন বিধায়ক। আবেদন করার দিন দশেকের মধ্যে হরকাকে নতুন সংগঠন গড়ার অনুমোদন দিয়েছে রাজ্যের শ্রম দফতর।
মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি বলেন, সব কিছুই পদ্ধতি মেনে হয়। তাই হওয়া উচিৎ। এ ক্ষেত্রে বোঝাই যাচ্ছে রাজ্য সরকার বিশেষ উদ্দেশ্যেই হরকা বাহাদুরের পাশে দাঁড়িয়েছে। তবে তাতে মোর্চার কিছুই যাবে আসবে না।’’
কালিম্পঙের বিধায়ক থাকাকালীনই গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিলেন হরকা। তৈরি করেন জন আন্দোলন পার্টি। এবার শ্রমিক সংগঠনেও মোর্চার একাধিপত্যে খর্ব করতে হরকা ঘুটি সাজাচ্ছেন বলে মনে করছে পাহাড়ের রাজনৈতিক মহল। দার্জিলিং জেলা চিয়া সিঙ্কোনা জন শ্রমিক সংগঠন নামে সংগঠনটির রেজিস্ট্রেশনও হয়ে গিয়েছে। সাধারণ ভাবে কোনও নতুন কোনও শ্রমিক সংগঠনের রেজিস্ট্রেশন পেতে অন্তত দু’মাস সময় লাগে। কিন্তু, দিন দশেকের মধ্যেই হরকাবাবুর দলের যাবতীয় নথিপত্র তৈরি হয়ে গিয়েছে।
কিছুদিন আগেই পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে আন্দোলন করার কথা জানিয়ে জিটিএ ছাড়ার হুমকি দিয়েছেন বিমল গুরুঙ্গ। মোর্চা প্রধান গুরুঙ্গ দাবি করেছেন জিটিএ-এর চিফের পদ ছেড়ে জঙ্গলে গিয়ে গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে আন্দোলন করবেন। সশস্ত্র আন্দোলন নিয়ে আলোচনা করারও পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। মোর্চা সূত্রের খবর, সবই রাজ্যের ওপর চাপ বাড়ানোর কৌশল। পাল্টা চাপের নীতি নিয়েছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলও। অস্ত্র আন্দোলনের হুমকি দেওয়ার অভিযোগে গুরুঙ্গদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। কিছুদিন আগে কার্শিয়াঙের মোর্চা নেতা তথা জিটিএ-এর প্রাক্তন চেয়ারম্যান প্রদীপ প্রধানকে দলে টেনেছে তৃণমূল। হরকার দলের নতুন শ্রমিক সংগঠন খোলাও সেই চাপেরই অংশ বলে দাবি।
শিলিগুড়ির যুগ্ম শ্রম কমিশনার সমীর বসু বলেন, ‘‘জন আন্দোলন পার্টির অনুমোদিত চা শ্রমিক সংগঠন খোলার আবেদন জমা পড়েছিল। সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হয়েছে। নথিভূক্তিকরণ প্রক্রিয়াও শেষ হয়েছে।’’
নতুন সংগঠন কী ভাবে চাপ বাড়াবে মোর্চার ওপরে?
পাহাড়ের ৮৭ টি চা বাগানের মধ্যে তৃণমূল এবং জিএনএলএফের স্বীকৃত সংগঠন রয়েছে অন্তত ২০টি চা বাগানে। সিঙ্কোনা শ্রমিকদের মধ্যে মোর্চা ছাড়া অন্য কোনও দলের সংগঠন নেই। তার জেরে শ্রমিক বিষয় যে কোনও ত্রিপাক্ষিক বৈঠকেই কথা বলার সুযোগ পেত মোর্চা প্রতিনিধিরাই। স্বীকৃত সংগঠন না হওয়ায় অনেক বাগানে বিরোধীরা থাকলেও সরকারি সভায় ডাক পেত না। তার ফলে মোর্চা নেতারা যেমন স্থির করতো সরকারি সভাতে তেমনই সিদ্ধান্ত হতো।
এই প্রবণতা বন্ধ করতে উদ্যোগী হয়েছে হরকার দল। হরকা এ দিন বলেন, ‘‘শ্রম দফতর থেকে যোগাযোগ করেছিল। রেজিস্ট্রেশনের নথি সম্ভবত আজ-কালই হাতে পেয়ে যাব। এতদিন মোর্চা নেতারা যেমন ইচ্ছে তেমন সিদ্ধান্ত নিতো। এবার আর তা হচ্ছে না।’