গন্ডারের ছানা।
মা-কে দেখতে না পেয়ে মনটা একটু খারাপ। তার মধ্যেই অবশ্য বনকর্মীদের কড়া পর্যবেক্ষণে মালঙ্গি বিটের বিশেষ ঘেরাটোপে দিন কাটছে তার। সময়ে সময়ে প্যাকেটজাত দুধ বোতলে ভরে খাওয়ানো হচ্ছে তাকে। শারীরিক কোনও সমস্যা হচ্ছে কিনা বুঝতে প্রতি মুহূর্তে চলছে নজরদারি। কিন্তু মানুষের এতো কাছাকাছি থাকার ফলে পরে জঙ্গলে ফিরতে তার অসুবিধা হবে না তো? সেই আশঙ্কা থেকেই জলদাপাড়ার মা-হারা শাবকটিকে নিয়ে বিকল্প ভাবনা শুরু হয়ে গেল বন দফতরের অন্দরে।
কী সেই বিকল্প ভাবনা? অনেকদিন মানুষের কাছাকাছি থাকার কারণে জলদাপাড়ার বাকি গন্ডাররা তাকে গ্রহণ করতে না চাইলে কোনও চিড়িয়াখানা বা বেঙ্গল সাফারির মতো কোথাও গন্ডার শাবকটিকে রাখা হতে পারে বলে বন দফতর সূত্রের খবর। এ বিষয়ে বনকর্তারা প্রাথমিক চিন্তাভাবনাও শুরু করে দিয়েছেন। দফতর সূত্রের খবর, ১৯৯৩ সালে এই জলদাপাড়ার জঙ্গলেই অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত হয়ে একটি গন্ডারের মৃত্যু হয়েছিল। সেই সময় এই জাতীয় উদ্যানের একটি গন্ডারকে কলকাতার আলিপুর চিড়িয়াখানায় নিয়ে যাওয়া হয়। তবে জঙ্গলে ফেরানোই তাদের অগ্রাধিকার বলে কর্তারা জানান। তাতে সমস্যা হলে তবেই বিকল্প সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বনকর্তাদের কথায়, আপাতত ২০ দিন গন্ডার শাবকটিকে কড়া পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। তারপরও আরও অন্তত দুই-আড়াই মাস নিজেদের তত্ত্বাবধানে রাখার ভাবনা বনকর্তাদের। এক বনকর্তা বলেন, ‘‘ঘাস খাওয়া শুরু করতে শাবকটির আরও দুই-তিনমাস সময় লাগবে। তার আগে তাকে এ ভাবেই দুধ খাইয়ে যেতে হবে।’’ কিন্তু জঙ্গলে বাকি গন্ডারটা আদৌ তখন তাকে গ্রহণ করবে কিনা তা নিয়ে চিন্তা রয়েছে। রাজ্যের প্রধান মুখ্য বনপাল রবিকান্ত সিংহ বলেন, ‘‘ঘাস খাওয়া শুরু করলে শাবকটিকতে জঙ্গলেই ছেড়ে দেওয়ার আমাদের চেষ্টা থাকবে। সমস্যা হলে চিড়িয়াখানায় রাখতে হবে। পরিস্থিতি অনুযায়ী সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।