সাবেক পুজো এ বার পা দিচ্ছে থিমে

কোনও এক কালে পাটকাঠি জুড়ে মণ্ডপ তৈরি করে শুরু হয়েছিল দুর্গাপুজো। পূর্বপুরুষের আমল থেকে শুরু হওয়া সেই ঐতিহ্য থেকে এই ৭২তম বছরে প্রথম ঝুঁকছেন ওঁরা। সামসিংয়ের পাহাড়ি এলাকা থেকে আনা হয়েছে মোটা ফাঁপা বাশ।

Advertisement

রাজা বন্দ্যোপাধ্যায়

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০১৬ ০২:৫৫
Share:

কোনও এক কালে পাটকাঠি জুড়ে মণ্ডপ তৈরি করে শুরু হয়েছিল দুর্গাপুজো। পূর্বপুরুষের আমল থেকে শুরু হওয়া সেই ঐতিহ্য থেকে এই ৭২তম বছরে প্রথম ঝুঁকছেন ওঁরা। সামসিংয়ের পাহাড়ি এলাকা থেকে আনা হয়েছে মোটা ফাঁপা বাশ। বোদাগঞ্জের বনাঞ্চল থেকে কেউ সরবরাহ করেছেন হোগলাপাতার পাটি। আরও রয়েছে চালন ও কুলো। এই সব উপকরণেই তৈরি হবে এ বারের থিম বনের মোড়লের বাড়ি। তার মধ্যেই দুর্গা থাকবেন সপরিবার।

Advertisement

এই পরিকল্পনা এবং তা বাস্তবায়িত করার উদ্যোগ পোড়াপাড়া সর্বজনীন দুর্গাপুজো কমিটির। পুজো কমিটির সম্পাদক দেবজিৎ দেব বলেন, “প্রতিবার একই ধরনের পুজো হয়। এ বারই প্রথম গ্রামের সাধারণ বাসিন্দারা একটু ভিন্ন স্বাদের পুজোর আনন্দ উপভোগ করবেন।”

জলপাইগুড়ি শহরের পান্ডাপাড়া কালীবাড়ি থেকে দক্ষিণে একটা রাস্তা হলদিবাড়ি বাইপাস রাস্তার ওপর দিয়ে চলে গিয়েছে। তারই লাগোয়া পোড়াপাড়া খরিয়া পঞ্চায়েতের একটা গ্রাম। এলাকায় চাকুরিজীবী, ছোট ব্যবসায়ী, টোটোচালক, দিনমজুরদের বাসস্থান। এত বড় পরিকল্পনা করে পুজো করবেন তা কোনও দিন তাঁরা স্বপ্নেও ভাবেননি। এ বার তাঁরাই ‘দশে মিলি করি কাজ, হারি জিতি নাহি লাজ’ এই আপ্তবাক্য সামনে রেখে একটা অনন্যসাধারণ পুজো করার চেষ্টা চালাচ্ছেন।

Advertisement

পোড়াপাড়া প্রাথমিক স্কুলের মাঠে এলাকার দিনমজুররা মিলে তৈরি করছেন বনাঞ্চলের বাসিন্দা প্রাচীন মোড়লের একটা চারচালা গোলাকৃতি বাড়ি। মোটা ফাঁপা বাশ দিয়ে বাড়ির খুঁটি পোঁতা হচ্ছে। আনা হচ্ছে একশোটি হোগলাপাতার পাটি। সামনে পিছনে সব দিক সেই হোগলাপাতার পাটি দিয়ে ঘিরে দেওয়া হচ্ছে। মনে হবে যেন শুকনো পাতা দিয়ে ঘেরা বাড়ি। ভেতরে এবং বাইরে বাহারি চালন এবং কুলো আটকে দেওয়া হবে। ভেতরে কাপড়েরও কিছু কাজ থাকবে। তার মধ্যে থাকবে ডাকের সাজের প্রতিমা। তৈরি করছেন শহরের একজন মৃৎশিল্পী।

পুজোর পরিকল্পনা যাঁর মস্তিষ্ক প্রসূত, সেই সৌমেন দাস বলেন, “শহরের পুজোর সঙ্গে পাল্লা দিতে পারব কি না জানি না। চেষ্টা করছি।”

নবমীর দিন সন্ধ্যায় একটা বড় আকারের ধুনুচি নাচের ব্যবস্থা করেছেন উদ্যোক্তারা। পুজো কমিটি আরও একটি ভাল কাজ করে থাকেন। পুজোর উদ্বৃত্ত টাকা দিয়ে এরা প্রতি বছর এলাকার দুঃস্থ মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের সাহায্য করে থাকেন। সেই ধারা এ বারও বজায় থাকবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement