সিন্ডিকেটের কার্ড নিয়ে বিডিও অফিসে অভিযোগ দায়ের স্থানীয়দের। নিজস্ব চিত্র।
তুফানগঞ্জ-২ নম্বর ব্লকের ভানুকুমারী-২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় পাথরবোঝাই ওভারলোড ট্রাক থেকে সিন্ডিকেট করে তোলাবাজির অভিযোগ উঠল স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের বিরুদ্ধে। ‘সৌজন্যে’ নেটমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি ফোনালাপের অডিয়ো টেপ। ওই অডিয়োর সত্যতা আনন্দবাজার অনলাইন যাচাই করেনি।
স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই ফোনের এক প্রান্তে রয়েছেন ভানুকুমারী-২ অঞ্চল তৃণমূলের আহ্বায়ক বিশ্বজিৎ সরকারের বিরুদ্ধে। অন্য প্রান্তে মদন নামে এক তৃণমূল কর্মী। টেলিফোন কথোপকথনে উঠে এসেছে ব্লক তৃণমূল সভাপতি ধনেশ্বর বর্মনের নামও। তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর বিবাদের জেরেই ওই অডিয়ো ফাঁস হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
তোলাবাজি বন্ধের দাবিতে তুফানগঞ্জ-২ ব্লকের ব্লক উন্নয়ন আধিকারিকের কাছে স্মারকলিপি দেন স্থানীয় বাসিন্দারা। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে এই তোলাবাজিকে কেন্দ্র করে প্রায় দিনই উত্তেজনা ছড়ায় ওই এলাকায়। ভানুকুমারী-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের অঞ্চল সভাপতি সুজিত ঘোষের বিরুদ্ধে সম্প্রতি তোলাবাজির অভিযোগ উঠেছিল। জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব তাকে শোকজ করে। দায়িত্ব থেকেও সরানো হয়। অস্থায়ী ভাবে সাংগঠনিক কাজ চালানোর জন্য ওই অঞ্চলের আহ্বায়কের দায়িত্ব দেওয়া হয় বিশ্বজিৎকে। দায়িত্ব পাওয়ার কয়েকদিনের মধ্যেই এ বার বিশ্বজিতের বিরুদ্ধে তোলাবাজির অভিযোগ উঠল।
অভিযোগ, ওই এলাকায় প্রত্যেকটি ট্রাক পিছু মাসিক ১০,৫০০ টাকা নেওয়া হয়। এই অডিয়ো ভাইরাল হওয়ার ফলে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা এলাকায়। স্থানীয় বাসিন্দা তপন বর্মন বলেন, ‘‘বিশ্বজিৎ, গোবিন্দ বর্মন, তাপস অধিকারী, রকুলউদ্দিন মিয়াঁ এই চারজন মিলে তোলাবাজির জন্য সাহারা এন্টারপ্রাইজ নামে একটি সিন্ডিকেট তৈরি করেছিল। বালাকুঠি এলাকা দিয়ে যে সমস্ত ওভারলোড পাথরের গাড়ি যায় সেই সমস্ত গাড়িগুলি থেকে অবৈধভাবে টাকা নিচ্ছে তারা। প্রতি মাসে অগ্রিম সেই টাকা নেওয়া হয়। তার বিনিময় সাহারা এন্টারপ্রাইজ-এর একটি ‘কার্ড’ দেওয়া হয় চালকদের হাতে। সেই কার্ড থাকলেই ছেড়ে দেওয়া হয় বেআইনি পাথর বোঝাই গাড়ি। তিনি বলেন, ‘‘এই চারজন ব্লক সভাপতি ধনেশ্বর বর্মন এর অনুগামী।
এই বিষয়ে বিশ্বজিৎ বলেন, ‘‘ভানুকুমারী-২ অঞ্চলের অঞ্চল সভাপতি সুজিত ঘোষ এতদিন এই সিন্ডিকেটটি চালাতেন। দল তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার পর তিনি আমাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলছেন। উনি এত দিন কিছু বলেননি। এখন তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার পর তিনি এই ধরনের অভিযোগ করছে। আমরা শীঘ্রই সাংবাদিক সম্মেলন করে তাঁর কুকীর্তি ফাঁস করব।’’ তিনি যে টেলিফোন কল নেটমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে, তার কোনও সত্যতা নেই। কোচবিহার জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক রাহুল রায় বলেন, ‘‘বিষয়টি আমাদের জানা নেই। তবে খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।’’