বিজেপির বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র।
দলে যোগ দিতে অস্বীকার করায় এক বধূকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল প্রার্থীর বিরুদ্ধে। শনিবার রাতে শিলিগুড়ির ২০ নম্বর ওয়ার্ডের চিত্তরঞ্জন কলোনির বাসিন্দা এক মহিলা ও তাঁর ভাইকে ওই ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী রঞ্জন সরকারের নেতৃত্বে তৃণমূল কর্মীরা মারধর করেন বলে পুলিশের কাছে অভিযোগ করা হয়েছে। অভিযোগ, শুক্রবার রাতে ওই বধূকে ডেকে সপরিবারে তৃণমূলে যোগ দিতে বলা হয়। তাঁকে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার টোপও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। প্রার্থীর প্রস্তাবে ওই বধূ রাজি না হলে, তাঁকে মারধর করা হয় বলে দাবি।
রঞ্জনবাবুর পাল্টা দাবি, “যিনি অভিযোগ করেছেন তিনি সিপিএমের সমর্থক। গণতন্ত্রে সকলের কাছেই ভোট চাইতে যেতে হয়। তাই তাঁর বাড়িতে গিয়েছিলাম। দলে যোগ দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া এবং চাকরি পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।” তিনি দাবি করেন, মারধর করা হয়নি। তৃণমূলের অভিযোগ, রাতের বেলায় ওই এলাকায় মদের আসর বসিয়েছিল বিজেপি সমর্থক এক দল যুবক। সেখানে ওই মহিলাও উপস্থিত ছিলেন। প্রতিবাদ করলে তৃণমূল সমর্থকদের মারধর করে পতাকা, ব্যানার ছিঁড়ে দেওয়া হয় বলে তাঁদের দাবি। ওই ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে সিপিএম এবং বিজেপি যৌথ ভাবে তৃণমূল প্রার্থীর বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ করেছে বলে শাসক দলের দাবি। এই ঘটনায় তৃণমূল, সিপিএম এবং বিজেপি তিন দলই অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ করেছে। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা বলেন, “অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এলাকায় পুলিশি টহল বাড়াতে বলা হয়েছে।”
তবে ওই মহিলার ভাই বিজেপির সমর্থক। অভিযোগ, শনিবার সকালে ওই মহিলাকে ফোন করে তৃণমূল প্রার্থীর বাড়িতেও ডেকে পাঠানো হয়। ওই মহিলা দুই মেয়েকে নিয়ে বাপের বাড়িতেই থাকেন। তিনি বলেন, “আমরা বরাবর সিপিএমের সমর্থক। তৃণমূলে যোগ দেওয়ার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তৃণমূলের সমর্থকরা আমাকে মারধর করেছে। আমার হাতে এবং কাঁধে চোট লেগেছে। আমাকে বাঁচাতে গিয়ে আমার ভাই ও ওর বন্ধুরা জখম হয়েছে।” রবিবার দুপুরে দার্জিলিং জেলা সিপিএম সম্পাদক জীবেশ সরকার এবং বামেদের মেয়র পদপ্রার্থী প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য তাঁর বাড়িতে গিয়ে দেখা করেন। অশোকবাবু বলেন, “এ রাজ্যের মা-বোনেরা যে আর নিরাপদ নন, এই ঘটনাই তার প্রমাণ।” এ দিন সন্ধ্যায় এলাকায় প্রতিবাদ মিছিলও করে সিপিএম।