প্রচারে প্রতিদ্বন্দ্বীর সমর্থনও চাইলেন অশোক

প্রচারে বেরিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর কাছেই সমর্থন চাইলেন প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য। প্রতি নমস্কার জানিয়ে হাসিমুখে সৌজন্য জানালেন তৃণমূল প্রার্থী অরূপরতন ঘোষ। বুধবার দুপুরে হিলকার্ট রোডে দুই প্রার্থীর মুখোমুখি দেখা হয়ে যায়। পোস্টার-দেওয়াল লিখনে বিরোধী দলের বিরুদ্ধে অভিযোগ-আক্রমণ থাকলেও, দুই প্রার্থীকে মুখোমুখি সৌজন্য বিনিয়ম করতেই দেখলে বাসিন্দা-পথচারীর সহ দু’দলের কর্মী সমর্থকরা।

Advertisement

অনির্বাণ রায়

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০১৫ ০৪:৫২
Share:

প্রচারে অশোক।—নিজস্ব চিত্র।

প্রচারে বেরিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর কাছেই সমর্থন চাইলেন প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য। প্রতি নমস্কার জানিয়ে হাসিমুখে সৌজন্য জানালেন তৃণমূল প্রার্থী অরূপরতন ঘোষ। বুধবার দুপুরে হিলকার্ট রোডে দুই প্রার্থীর মুখোমুখি দেখা হয়ে যায়। পোস্টার-দেওয়াল লিখনে বিরোধী দলের বিরুদ্ধে অভিযোগ-আক্রমণ থাকলেও, দুই প্রার্থীকে মুখোমুখি সৌজন্য বিনিয়ম করতেই দেখলে বাসিন্দা-পথচারীর সহ দু’দলের কর্মী সমর্থকরা। পরে তৃণমূল প্রার্থীর ব্যক্তিগত প্রশংসাও করলেন প্রাক্তন পুরমন্ত্রী।

Advertisement

এবারের পুরভোটে বামেদের ‘মুখ’ প্রাক্তন নগরোয়ন্নয়ন মন্ত্রী অশোকবাবুর ৬ নম্বর ওয়ার্ড থেকে ভোটে লড়ছেন। তৃণমূলের অরূপরতনবাবু অশোকবাবুর অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী। শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডেই বাম প্রার্থী, কর্মী-সমর্থকরা অশোকবাবুকে প্রচারে ডাকছেন, সেই সঙ্গে নিজের ওয়ার্ডেও প্রতিদিন-ই জনসংযোগ, কর্মিসভা করছেন অশোকবাবু। বুধবার দুপুরেও হাসমি চক এলাকায় হিলকার্ট রোড লাগোয়া ৬ নম্বর ওয়ার্ডে বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার চালান তিনি। সে সময়েই ফুটপাথ ধরে এগোনোর সময় দুই বিরোধী প্রার্থীর মুখোমুখি হয়ে পড়ে। চায়ের দোকানে দাঁড়ানো কয়েকজন যুবকের সঙ্গে আলাপচারিতার পরে, এগোতেই সামনে দাঁড়িয়ে থাকা অরূপরতনবাবুর সঙ্গে মুখোমুখি হয়ে পড়েন অশোকবাবু। হাসিমুখে এগিয়ে অশোকবাবু বলেন, “এবার সমর্থন চাই কিন্তু।” প্রতিদ্বন্দ্বীর কাছেই সমর্থন চেয়ে বসায় প্রথমটায় বিব্রত হয়ে পড়েন সঙ্গে থাকা কর্মী সমর্থকরা। বিড়ম্বনায় পড়ে যান অরূপরতনবাবুও। অস্বস্তি এড়াতে অশোকবাবু নিজেই হেসে পেলে কুশল বিনিময় করেন। পাল্টা নমস্কারে হাসি মুখে সৌজন্য ফেরান তৃণমূল প্রার্থীও।

পরে অবশ্য অশোকবাবু দাবি করেন, প্রথম বার দেখে অরূপরতনবাবুকে তিনি চিনতে পারেননি। অশোকবাবু বলেন, “অরূপ বেশির ভাগ সময়ে টুপি পড়ে। এ দিন ওঁর মাথায় টুপি না থাকায় প্রথমে চিনতে পারিনি। পর মুহূর্তে চিনতে পেরে কুশল বিনিময় হয়েছে। রাজনৈতিক লড়াই যাই হোক না কেন, সৌজন্য তো থাকবেই। স্বচ্ছ শিলিগুড়ি গড়তে সকলের কাছেই সমর্থন চাইছি।” প্রতিদ্বন্দ্বীর প্রশংসা করে অশোকবাবু বলেন, “অরূপকে অনেকদিন ধরে চিনি। খেলা নিয়ে আমাদের আলোচনাও হয়। ও ভাল ছেলে।” অরূপবাবুর প্রতিক্রিয়া, “দেখা হলে কুশল বিনিময় হতেই পারে। এ দিনও তাই হয়েছে।” অশোকবাবুর সমর্থন চেয়ে আবেদনের উত্তরে সৌজন্যসূচক হেসেছেন তিনি। পরে অবশ্য বলেছেন, “সৌজন্য তো আবশ্যই থাকবে। তবে মানুষের সমর্থন যে আমাদের সঙ্গে রয়েছে তা ইভিএম খুললেই জানা যাবে।”

Advertisement

কাউন্সিলর হওয়ার পরে সব সময়ে অশোকবাবুকে কাছে পাওয়া যাবে কিনা তা নিয়ে এ দিন প্রশ্ন করেন এক বাসিন্দা। ডাঙ্গিপাড়া লাগোয়া এলাকার বাড়ি বাড়িতে প্রচার চালানোর সময়ে অনুভা সেন অশোকবাবুর কাছে জানতে চান, “আপনি মন্ত্রী ছিলেন। কত উঁচু জায়গায় ছিলেন। আপনি আমাদের ওয়ার্ডে আসায় খুশি হয়েছি। তবে সব সময়ে আপনাকে পাওয়া যাবে তো?” প্রাক্তন মন্ত্রী বলেন, “মানুষের জন্য কাজ করতে চাইলে উঁচু-নীচু বলে কিছু হয় না। মন্ত্রী থাকার সময়েও, সকলের সুখ-দুঃখে পাশে থাকার চেষ্টা করেছি। কাউন্সিলর হিসেবেও সবসময়েই আপনারা কাছে পাবেন।” বর্ষার সময়ে এলাকায় জল জমে যায় বলে অভিযোগ তুলে এলাকার বাসিন্দা লিলি সেন, মৃণালকান্তি রায়ে’রা অশোকবাবুর কাছে অভিযোগ জানান। প্রাক্তন পুরমন্ত্রী তাঁদের আশ্বাস দেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement