অশোক ভট্টাচার্য। —ফাইল চিত্র।
গত ১০ বছরে যা সম্ভব হয়নি, ভোটের আগে হয়ে গেল মাত্র ২৪ ঘণ্টায়। পুরসভার দাবিদাওয়া নিয়ে পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গে দেখা করার ইচ্ছা প্রকাশ করতেই সাক্ষাতের সুযোগ পেয়ে গেলেন শিলিগুড়ি প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারপার্সন অশোক ভট্টাচার্য।
রবিবার মাটিগাড়ার উত্তরায়ণ উপনগরীর বিলাসবহুল হোটেলে দু’জনের দেখা হল। কথাও হল পুরসভার নানা দাবিদাওয়া নিয়ে। আজ সোমবার ফের গাঁধী-মূর্তির উন্মোচনে এক মঞ্চে থাকার কথা অশোক-ফিরহাদের। এ দিন পুর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকের আগে এসজেডিএ কর্তাদের সঙ্গেও বৈঠক করেন পুরমন্ত্রী। তাঁর কাছে উত্তরবঙ্গের ৬০টি প্রকল্পে ৪৪ কোটি টাকা চেয়েছে এসজেডিএ।
এ দিন অশোকবাবু জানান, তৃণমূলের ১০ বছরের শাসনকালে শিলিগুড়ি পুরসভার দাবিদাওয়া নিয়ে পুরমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছেন অন্তত ৪০ বার। সাক্ষাৎ প্রার্থনা করেছেন। শেষবার কবে পুরমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর বৈঠক হয়েছে, তাও ঠিক করে মনে করে বলতে পারছেন না। কিন্তু শিলিগুড়িতে গাঁধী মুর্তির উদ্বোধনে থাকার কথা বামেদের তরফেই তাঁকে জানানো হয়েছিল পুর মন্ত্রীকে। আজ সোমবার শিলিগুড়ি প্রধান ডাকঘরের সামনে সেই মূর্তি উদ্বোধনে থাকার কথা দু’জনের একসঙ্গেই। দাবিদাওয়ার জন্য সাক্ষাৎ বা গাঁধী মূর্তির উন্মোচনে কোনও সিপিএম-তৃণমূল নেই বলেই দাবি করেন তাঁরা।
এ দিন ওই হোটেলে ফিরহাদ বলেন, ‘‘সিপিএমের সঙ্গে মঞ্চভাগ তৃণমূল আগেও কলকাতায় করেছে। গাঁধীকে নিয়ে সিপিএম-তৃণমূল কিছু নেই।’’ ওদিকে অশোকবাবুর পাল্টা বক্তব্য, ‘‘দীর্ঘদিন থেকেই পুরসভার দাবিগুলি পড়ে রয়েছে বলে কালই জানিয়েছিলাম। তাই আজ দেখা করলেন। মূর্তি উন্মোচনে পুরমন্ত্রীর সঙ্গে বোর্ডের চেয়ারপার্সন হিসেবে অনুষ্ঠানে থাকব।’’ এ দিন বৈঠকে শিলিগুড়ি জন্য বিকল্প জল প্রকল্প, পাট্টাবিলি সলিড ওয়েস্ট, কর্মসংস্থান মিলিয়ে ১৫ দফা দাবির মধ্যে করোনায় বিশেষ তহবিলের দাবিও ছিল।
অশোকবাবুর দাবি, কয়েকটি অনুমোদনের আশ্বাসও দিয়েছেন ফিরহাদ। এরকম সাক্ষাৎ এবং প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ আদায় করতে গত পাঁচ বছরেও বেশ কয়েকবার কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে বামেদের। বিক্ষোভে কলকাতায় অনশনেও বসেছিলেন তাঁরা।
বিজেপির উত্তরবঙ্গের নেতারা বারবারই অভিযোগ তুলেছেন, শিলিগুড়িতে সিপিএম-তৃণমূল আদপে বাইরে লড়াই করলেও বিজেপিকে ঠেকাতে সবসময় গোপন আঁতাঁতে এক ছাতার তলায় ছিল। উত্তরবঙ্গের নেতা তথা দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক রথীন বসু বলেন, ‘‘বাইরে বিরোধী বিরোধী খেললেও সিপিএম তৃণমূলের বি-টিম হিসেবেই রয়েছে। সেটা ভোটের আগে আরও বেশি করে টের পাওয়া যাচ্ছে।’’ দলের নেতাদের দাবি, এসব করে সিপিএম এবং তৃণমূল থেকে নেতা-মন্ত্রীদের বিজেপিতে আসা ঠেকানো যাবে না।
এসজেডিএর চেয়ারম্যান বিজয় বর্মণ জানান, বিভিন্ন প্রকল্পে টাকা না পাওয়া গেলে কাজ এগনো যাচ্ছে না। সেগুলির মধ্য বেশ কিছু প্রকল্পে অবিলম্বে টাকা প্রয়োজন তা না হলে সমস্যা হচ্ছে। তীিনি বলেন, ‘‘মন্ত্রী অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে প্রকল্পের টাকা অনুমোদনের আশ্বাস দিয়েছেন।’’