অশোক ভট্টাচার্য। ফাইল চিত্র
জ্বর হলেই গুজব ছড়িয়ে পড়ছে। অনেকক্ষেত্রেই অসুস্থ ব্যক্তির পরিবারকে একঘরে করে দেওয়ার অভিযোগ উঠছে। এ বার তা নিয়ে মুখ খুললেন শিলিগুড়ির বিধায়ক ও পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান অশোক ভট্টাচার্য। তিনি জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছেন বলে জানাচ্ছেন তিনি।
গত কয়েকদিন ধরে জ্বরে ভুগছেন শিলিগুড়ি পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান অশোক ভট্টাচার্য। বাড়িতে চিকিৎসা শুরু হয়েছে। লালারস পরীক্ষা করে রবিবার রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। অশোকের স্ত্রীরও লালারস পরীক্ষা হয়েছে। তাঁরও সংক্রমণ মেলেনি। অশোকের কথায়, তাঁর জ্বর হয়েছে শোনার পর থেকেই বাড়ির কাজের লোক দিন চারেক ধরে আসছেন না। এলাকার অনেকে তাঁকে খুব ভালবাসেন। কিছু হলেই তাঁরা খোঁজ নেন। কিন্তু এ বার জ্বর হয়েছে শুনে এখনও কেউ আসেননি। অনেকে ফোনেও কথা বলতে পর্যন্ত চাইছেন না বলে তিনি জানান। অশোক বলেন, ‘‘রটে গিয়েছে আমি করোনা আক্রান্ত। ডাক্তাররা কাছে আসছেন না। ফোনেই পরামর্শ দিচ্ছেন। এতো কার্যত একপ্রকার সামাজিক বয়কটের মুখে পড়তে হচ্ছে। এ ভাবে অচ্ছ্যুৎ ও অস্পৃশ্য ভাবা ভুল।’’ তাঁর দাবি অনেকেই এউ পরিস্থিতির শিকার। অথচ ফোনের ‘কলার টিউন’ থেকে নানা ভাবে বারবার প্রচার করা হচ্ছে ‘রোগকে ভয়। রোগীকে নয়।’
শহরের বাসিন্দা পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেবের কথায়, ‘‘মানুষের মনস্তত্ত্ব সে নিজেকে ভালবাসে, বাঁচাতে চায়। এরকম রোগ থেকে ভয়, শঙ্কা কাজ করছে। এটা প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যানের বিষয় বলে কোনও ব্যাপার নয়। আমার ক্ষেত্রেও হতে পারে। এটা কাম্য নয়।’’ গৌতম জানান, অশোক এতদিনের জনপ্রতিনিধি তাই মানুষ তাঁর খোঁজ নেবেন আশা করা স্বাভাবিক। এখন নেগেটিভ রিপোর্ট জেনে অনেকে হয়তো আসবেন, তাও অনেকের মনে ভয়ে থাকবে বলেই মনে করেন মন্ত্রী। জেলা তৃণমূলের সভাপতি রঞ্জন সরকার বলেন, ‘‘মেয়রের স্বাস্থ্যের খবর নিচ্ছি। আতঙ্ক ছড়ানো ঠিক নয়। কারও উপসর্গ, জ্বর থাকলে সাবধান হতে হবে। বাড়িতে থেকে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে চলা উচিত।’’
করোনা নিয়ে মানুষের এই ধরনের মানসিকতার বিষয়টি তুলে ধরে এ দিন সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান একটি লেখা পোস্ট করেছেন। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের চিকিৎসক নির্মল বেরা বলেন, ‘‘করোনা নিয়ে মানুষ ভয়ে রয়েছেন। এটা একেবারে অমূলক নয়। যত দিন যাবে ক্রমশ কাটবে বলে আশাবাদী।’’