এত অস্ত্র কেন?

কিন্তু এত অস্ত্র আসছে কোথা থেকে, তা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে।

Advertisement

অভিজিৎ সাহা

মানিকচক শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৩:১৪
Share:

থমথমে: মানিকচকে গুলিবিদ্ধ শিশুর বাড়ির সামনে পুলিশ প্রহরা। ছবি:তথাগত সেন শর্মা

তিন দিনের ব্যবধান। মালদহের মানিকচকের গোপালপুর ও রামনগর গ্রামে চলল গুলি, বোমা। গোপালপুরের ঘটনায় গুলিতে নিহত হয়েছেন দু’জন। বোমায় আহত হয়েছে বছর তিনেকের শিশু। রামনগর গ্রামের ঘটনাতেও গুলিবিদ্ধ হয়েছে তিন বছরের শিশু মৃণাল। পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন নিয়ে হিংসা এই অঞ্চলে কোথাও কোথাও ঘরের অন্দরে ঢুকে পড়েছে।

Advertisement

অভিযোগ, কালিয়াচকের মতো মানিকচকেও মজুত রয়েছে আগ্নেয়াস্ত্র। ফলে, দুষ্কৃতীদের হাতে হাতে ঘুরছে সেই অস্ত্র। কিন্তু এত অস্ত্র আসছে কোথা থেকে, তা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। যদিও মালদহের পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষ বলেন, ‘‘নদী পথে তল্লাশি থেকে শুরু করে নাকা চেকিং করা হয়। আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারে অভিযানও চালানো হয়।’’

মালদহ সদর থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরে মানিকচক ব্লক। ফুলহার ও গঙ্গা নদীর পারে ব্লকটি অবস্থিত। গঙ্গার ওপারেই ঝাড়খণ্ড। নদী পথে দু’রাজ্যের মানুষ নিয়মিত যাতায়াত করেন। তেমন কড়া নজরদারি নেই বলেই স্থানীয় সূত্রে দাবি করা হয়েছে। অভিযোগ, সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সক্রিয় হয়ে উঠেছে দুষ্কৃতী চক্র। জানা গিয়েছে, দুষ্কৃতীরা মালদহে ঢুকতে মানিকচকই বেশি ব্যবহার করে। সম্প্রতি, ইংরেজবাজারের শোভানগরে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনায় মানিকচকের পাশাপাশি ঝাড়খণ্ডের দুষ্কৃতীদের যোগসাজশও পাওয়া গিয়েছে। এ ছাড়া, গত ২৪ এপ্রিল মানিকচকে ২০ রাউন্ড কার্তুজ, একটি পাইপগান সহ ঝাড়খণ্ডের সাহেবগঞ্জের বাসিন্দা এক দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, গত জানুয়ারি থেকে অগস্ট পর্যন্ত মানিকচকে প্রায় ১৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। ঝাড়খণ্ডের দুষ্কৃতী সহ প্রায় ১৪ জন গ্রেফতারও হয়েছে।

Advertisement

এলাকাবাসীদের কয়েক জন জানান, ৫-৬ হাজার টাকা খরচ করলেই পাওয়া যায় দেশি পিস্তল। তাঁরাই জানান, ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা খরচ করলেই হাতে মিলবে সেভেন এমএম থেকে নাইন এমএম পিস্তল। ঝাড়খণ্ডের রাজমহল, সাহেবগঞ্জ থেকে তা মালদহে ঢোকে বলে সন্দেহ এলাকাবাসীর। তাই নৌকোয় নজরদারি শুরু করেছে পুলিশ। বর্ষায় নদী ফুলে ফেঁপে ওঠায় নজরদারি চালাতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে পুলিশকে। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সক্রিয় হয়ে উঠেছে দুষ্কৃতীরা।

মালদহের নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন মানিকচকের গুলিবিদ্ধ শিশু মৃণাল মণ্ডল। নিজস্ব চিত্র

তৃণমূলের অন্দরের খবর, মানিকচকে এখন তৃণমূলের দুটি গোষ্ঠীর দ্বন্দ্ব মেটেনি। তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্বও সমস্যা পুরোপুরি মেটাতে পারেননি বলে দাবি দলের নিচু তলার কর্মীদের। তাঁদের দাবি, প্রকাশ্যে দ্বন্দ্ব মিটলেও দুপক্ষের কর্মী সমর্থকদের মধ্যে দ্বন্দ্ব মিটছে না। যদিও দুজনেরই বক্তব্য, ‘‘ব্লকে, দলে কোনও দ্বন্দ্ব নেই।’’

কিন্তু তৃণমূল সূত্রেই খবর, গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের সুযোগ নিয়ে মানিকচকে বাড়ছে বিজেপি। এবারে ব্লকের তিনটি পঞ্চায়েত একক ভাবে বিজেপি দখল করেছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement