জলপাইগুড়িতে রাত থেকে ১৩৬ মিলিমিটার বৃষ্টি। বিপদসীমার কাছাকাছি বইছে করলা নদী রবিবার। ছবি - সন্দীপ পাল।
সমতলে প্রবল বৃষ্টি সঙ্গে পাহাড় থেকে হুড়মুড়িয়ে নামা জলে ফের বন্যা পরিস্থিতি জলপাইগুড়ি জেলা জুড়ে। করলা নদীর জল ঢুকল জলপাইগুড়ি শহরে। জলপাইগুড়ির একাধিক এলাকা জলমগ্ন। বাসিন্দাদের উদ্ধার করে পুরসভা ত্রাণ শিবিরে রেখেছে। জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া দোমহানী থেকে বাংলাদেশ পর্যন্ত তিস্তার অসংরক্ষিত এলাকায় ‘হলুদ সতর্কতা’ জারি হয়েছে। মেখলিগঞ্জে তিস্তায় ‘লাল সতর্কতা’ জারি রয়েছে। জলঢাকায় জারি হয়েছে ‘লাল সতর্কতা’। তিস্তার জল বিপদসীমা ছুঁয়ে বইছে।
গজলডোবা ব্যারাজ থেকে রবিবার সকালে ৩১০০ কিউমেক (জল বয়ে যাওয়ার একক) জল ছাড়া হয়। তার জেরে তিস্তা-সহ শাখা নদীতে জল বেড়েছে। দুপুরের পরে জল ছাড়ার পরিমাণ কিছুটা কমেছে। যদিও তিস্তা সেচ দফতর সূত্রের দাবি, পাহাড় থেকে জল নেমে আসার পরিমাণ বাড়ছে, ব্যারাজ থেকে জল বেশি পরিমাণে ছাড়া হতে পারে। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের পুর্বাভাস, আগামী ২৪ ঘণ্টায় ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। সতর্ক করা হয়েছে তিস্তা নদীর দু’পাড়ের বাসিন্দাদের। জল বেড়ে যাওয়ায় সেবক লাগোয়া এলাকা থেকে বাংলাদেশ পর্যন্ত তিস্তা বাঁধে নতুন করে ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কাও রয়েছে। সেচ দফতরের দাবি, যে এলাকাগুলিতে তিস্তা গতিপথ বদলেছে সেখানে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
শনিবার রাত থেকে টানা বৃষ্টি চলেছে জলপাইগুড়ি জেরে। জলপাইগুড়ি শহরে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৩৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে, গজলডোবায় ১২৪ মিলিমিটার, ঝালঙে ১৬৫ মিলিমিটার, নেওড়ায় ১২৯ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। টানা বৃষ্টি এবং পাহাড় থেকে নেমে আসা বৃষ্টির জলে জলপাইগুড়ি শহরের ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে নীচমাঠ এলাকা প্লাবিত হয়েছে, ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইন্দিরা কলোনিতেও জল ঢুকেছে। জলপাইগুড়ি পুরসভার উপ পুরপ্রধান সৈকত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “দুই এলাকার বাসিন্দাদের উদ্ধার করে ত্রাণ শিবিরে রাখা হয়েছে। পানীয় জলের ট্যাঙ্ক রাখা হয়েছে। খাবারের বন্দোবস্ত করা হয়েছে। শহরের অন্যান্য নীচু এলাকাতেও ত্রাণ শিবিরের বন্দোবস্ত করা হয়েছে।” করলা নদী কানায় কানায় ভরে রয়েছে। নদীর জল বের হওয়ার পথ পাচ্ছে না বলে দাবি। এমনিতেই তিস্তার নদীখাত উঁচু হয়েছে গত বছরের সিকিমের বিপর্যয়ে৷ এ দিন তিস্তা বিপদসীমা ছুঁয়ে বইছে। তার ফলে করলার জল তিস্তা দিয়ে পুরোপুরি বের হতে পারছে না, ভরা করলা ঢুকে পড়ছে শহরে। রবিবার দুপুর থেকে করলা নদীতে জল বাড়তে শুরু করেছে।