আরামে: রামসাইয়ে মূর্তি নদীতে গন্ডার। ছবি: দীপঙ্কর ঘটক
স্নান যেন আজ শেষ হতেই চাইছিল না। মূর্তি নদী তে সেই যে শুয়েছে ওরা আর উঠে আসতে যেন মন নেই! তীব্র গরমে এমনই অবস্থা গরুমারা পিলখানার হাতিদের।
‘‘ওদের যত্ন নেবার জন্যে তবু মাহুত ও পাতাওয়ালারা রয়েছে কিন্তু যারা জঙ্গলে থাকে সেই সব বুনো হাতিরা এই গরমে ঠিকঠাক আছে তো?’’ হাতিদের স্নান দেখতে দেখতে মূর্তির পাড় থেকে এমন প্রশ্নই অস্ফুটে করলেন পর্যটকেরা। তাঁদের অনেকের উদ্বেগ, তেষ্টা মেটানোর জন্যে জল, ঠাণ্ডা ঝোরার জলে গা ভেজানোর সুযোগ পাচ্ছে তো বুনো হাতিরা?
রবিবার দুপুরেই মালবাজার শহরে পারদ ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে ৩৮ ডিগ্রির দিকে চলে যায়। জলপাইগুড়ির একটি পরিবেশপ্রেমী সংস্থার সচিব শ্যামাপ্রসাদ পাণ্ডে বলেন, “এই গরমে জঙ্গলে বুনোদের জীবনযাত্রার ওপর বিরাট প্রভাব পড়ছে। হাতিরা দিনের বেলাতে হাঁটাচলা একপ্রকার বন্ধ করে দিয়ে সাধারণত ছায়াতেই বেশি থাকে।” উন্নয়নের নামে গাছ কেটে ফেলে আখেরে পরিবেশেরই ক্ষতি হচ্ছে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি।
তবে জঙ্গলের প্রাণীদের কাছে এই গরম অস্বাভাবিক কোনও বার্তা নিয়ে আসে না বলেই জানাচ্ছেন ডুয়ার্সের বনাধিকারিক বিমল দেবনাথ। তিনি বলেন “ভাদ্র মাসে জঙ্গলে এমন কাঠফাটা গরম নতুন কোনও ঘটনা নয়, বুনোরা গাছের ছায়ায় আশ্রয় নিয়েই তাই সন্ধ্যা হবার অপেক্ষা করছে।” একটি পূর্ণবয়স্ক হাতি ৩০০ লিটার জল সারাদিনে খায়। তীব্র গরমে সেই যথেষ্ট জলের যোগান জঙ্গলের ভেতর দিয়ে বয়ে যাওয়া নদী বা ঝোরা গুলোর আছে কি না তা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করছেন বাসিন্দারা। বনাধিকারিকরা অবশ্য পরিবেশপ্রেমীদের জলের যোগান নিয়ে আশ্বস্ত করেছেন। পাহাড়ি এলাকাতে ভাল বৃষ্টি হওয়ায় নদী ও ঝোরাগুলোতে প্রচুর জল রয়েছে বলেই দাবি তাদের।