ধৃত: সূরজ হোসেন
মাজিদ আনসারি হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্তদের আরও এক জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। এই ঘটনায় সব মিলিয়ে গ্রেফতারের সংখ্যা দাঁড়াল তিন।
বৃহস্পতিবার তিন জনকেই কোচবিহার মুখ্য বিচারবিভাগীয় আদালতে হাজির করানো হয়। এদের মধ্যে বুধবার বাংলাদেশ সীমান্ত অঞ্চল শীতলখুচি থেকে ধৃত সূরজ হোসেন ওরফে ‘স্পিডবয়ে’র সাতদিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। আগেই ধৃত মহম্মদ কলিম খান এবং জামিরুল হককে আগামী ২৮ অগস্ট পর্য়ন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ২৯ অগস্ট তাদের ফের আদালতে তোলা হবে। ওই ঘটনায় অধরা আরও রয়েছে আরও পাঁচ অভিযুক্ত। তাদের মধ্যে গুলি চালানোয় অভিযুক্তও রয়েছে। তাদের গ্রেফতারিরও দাবি উঠেছে। কোচবিহারের পুলিশ সুপার ভোলানাথ পাণ্ডে বলেন, “বাকি অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। শীঘ্রই তাদের গ্রেফতার করা হবে।”
গত ১৩ জুলাই কোচবিহার স্টেশন মোড় সংলগ্ন এলাকায় রাস্তায় আটকে কোচবিহারের কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মাজিদ আনসারিকে গুলি করে একদল যুবক। মাজিদ টিএমসিপির ওই কলেজ ইউনিটের আহ্বায়ক ছিলেন। যাদের বিরুদ্ধে গুলি করার অভিযোগ ওঠে তারাও টিএমসিপি কর্মী বলে পরিচিত। ২৫ জুলাই শিলিগুড়ির একটি নার্সিংহোমে মাজিদের মৃত্যু হয়। ওই সময়ের মধ্যে একজন অভিযুক্ত গ্রেফতার না হওয়ায় উত্তাল হয়ে ওঠে কোচবিহার। ২৬ জুলাই মাজিদের দেহ কোচবিহারে নিয়ে আসা হলে ক্ষুব্ধ জনতাদের একটি অংশ ওই ঘটনায় ষড়যন্ত্রে অভিযুক্ত তৃণমূলের কোচবিহার জেলা কোর কমিটির নেতা মুন্না খানের বাড়িতে হামলা চালায়। রাতে পুলিশ মুন্না খানকে গ্রেফতার করে। এই অবস্থায় বাকি অভিযুক্তদের গ্রেফতারে জেলায় টানা আন্দোলন সংগঠিত করে তৃণমূলের একটি গোষ্ঠী।
দিন কয়েক আগে অসম সীমানার শিলখাগড়ি থেকে জামিরুল হককে গ্রেফতার করে পুলিশ। বুধবার শীতলখুচি থেকে গ্রেফতার করা হয় সূরজ হোসেন নামে অভিযুক্তকে। তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, সেখানে এক আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিল ওই অভিযুক্ত। অন্য অভিযুক্তরা জেলারই কোথাও গা ঢাকা দিয়ে থাকতে পারে বলে সন্দেহ করছে তদন্তকারী পুলিশ অফিসারেরা। তদন্তকারী এক অফিসার বলেন, “ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে বেশ কিছু তথ্য আমরা হাতে পেয়েছি। কেউই গ্রেফতারি এড়াতে পারবে না।”
প্রশ্ন উঠেছে, তিন জনকে গ্রেফতারের পরেও কেন পুলিশ খুনে ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র বা যে বাইকে চেপে ঘটনাস্থল থেকে অভিযুক্তরা পালিয়ে যায় তা উদ্ধার করতে পারছে না। বিরোধীরা অভিযোগ তুলেছেন, অভিযুক্তরা কোথায় লুকিয়ে আছে সব আগে থেকে জেনেও পুলিশ এতদিন কাউকে গ্রেফতার করেনি। জেলা পুলিশ কর্তারা অবশ্য ওই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন।