ফাইল চিত্র।
উত্তরবঙ্গে যখন বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তি মাথা তুলতে পারে বলে প্রশাসনের একটি অংশে আশঙ্কা করা হচ্ছে, সেই সময়ে পাহাড়বাসীদের সতর্ক থাকতে বললেন অনীত থাপা। জিটিএ-র প্রাক্তন চেয়ারম্যান এবং বিনয়পন্থী মোর্চার সম্পাদক অনীত মঙ্গলবার পাহাড়বাসীদের উদ্দেশে বার্তা দেন, পাহাড়কে অশান্ত করার চক্রান্ত থেকে সজাগ ও সতর্ক থাকুন।
সদ্য সোমবার জিটিএ-র বিশেষ অডিট করানোর জন্য সিএজি-কে নিয়োগের কথা বলেছেন রাজ্যপাল। তার পরেই মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেছেন, যাঁরা বাংলাকে ভাগের চেষ্টা করছেন, তাঁদের সঙ্গে দেখা করেছেন রাজ্যপাল। রাজ্যপাল অবশ্য এই দাবি মানতে চাননি। তবে অনীত জানান, অনেক চেষ্টার পর পাহাড়ে শান্তি ফিরছে। সেটাকে নষ্ট করার চক্রান্ত চলছে। পাহাড়ে আন্দোলনের ময়দান তৈরি করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এটাকেই রুখতেই হবে।
অনীত এ দিন বলেন, ‘‘এত দিনে রাজ্যপাল পাহাড়ের জন্য ভাবতে শুরু করেছেন। ভাল কথা। জিটিএ অডিটের কথা বলেছেন। আমরা স্বাগত জানাচ্ছি। কিন্তু অনেক কিছু বিষয় রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেই মনে হচ্ছে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘এখানে অনেক ধরনের চক্রান্তই হচ্ছে। কিন্তু পাহাড়কে অশান্ত আর করা যাবে না।’’
জট বেঁধেছে সিএজি-কে দিয়ে বিশেষ অডিট করানোর নির্দেশেও। মঙ্গলবার রাজ্যপাল টুইট বার্তায় জানান, জিটিএ আইনের ৫৫ (১০) ধারা অনুসারে রাজ্যপাল জিটিএ কাজকর্মের রিপোর্ট চাইতেই পারেন। যে রিপোর্ট প্রতি বছর বিধানসভায় পেশ করা হবে। আর জিটিএ ৫৫ (৯) ধারায় সরকারকে সিএজি দিয়ে অডিট করানোর কথা বলা রয়েছে।
শাসকদলের নেতাদের পাল্টা বক্তব্য, বিধানসভায় জমা পড়া প্রতি বছরের জিটিএ-র কাজকর্মের রিপোর্ট আর অডিট করানোর নির্দেশ এক কথা নয়। জিটিএ সংক্রান্ত যে রিপোর্ট বিধানসভায় থাকে তা রাজ্যপাল দেখে নিতেই পারে। জিটিএ রাজ্য আইনের আওতায় তৈরি, ষষ্ঠ তফসিলের আওতায় নয়। তাই রাজ্যপাল রাজ্যকে পরামর্শ দিতে পারেন বা রাজ্য মন্ত্রিসভার নির্দেশ মেনে কাজ করতে পারেন। কিন্তু নিজে থেকে পাহাড়ে গিয়ে অডিট করানো নির্দেশ দিতে পারেন না, বক্তব্য ওই সব নেতার।
রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী গৌতম দেবের কথায়, ‘‘উনি একটা দলের হয়ে কাজ করতে করতে সংবিধানটা হয়তো ভুলে গিয়েছেন। সরকারকে পরামর্শ দেওয়া ছাড়া উনি কী করতে পারেন?’’
একই সঙ্গে করোনার বিধিনিষেধ চলাকালীন বাড়তি লোক নিয়ে পাহাড় সফরেও প্রশ্ন উঠেছে। পুলিশ সূত্রে খবর রাজ্যপাল সোমবার ফিরে গেলেও এখনও দার্জিলিং রাজভবনে তাঁর স্ত্রী, আত্মীয়, অন্য অতিথিরা রয়েছেন। ৪ জুলাই তাঁদের ফেরার কথা। তৃণমূল নেতারা প্রশ্ন তুলেছেন, যেখানে প্রধানমন্ত্রীও কোভিড বিধি মেনে চলেন, সেখানে রাজ্যপাল কি তার ঊর্ধ্বে?