ফাইল চিত্র।
দার্জিলিঙের গরিমা, মুকুট বিজেপি সরকার বিক্রি করে দিতে চাইছে বলে অভিযোগ তুলল অনীত থাপার নেতৃত্বাধীন মোর্চা। বৃহস্পতিবার দুপুরে টয়ট্রেন এবং দার্জিলিং হিমালয়ান রেলেওয়ের সম্পত্তি বেসরকারিকরণের প্রতিবাদে কর্মসূচি ঘোষণা করা হল।
দলের কেন্দ্রীয় কমিটির মুখপাত্র কেশবরাজ পোখরেল জানিয়ে দিলেন, অনীত থাপার নেতৃত্বে আন্দোলন হবে। আজ, সুকনা থেকে দার্জিলিং প্রতিটি স্টেশনে প্রতিবাদ দেখানো হবে। পাহাড়ের কোনও একটি স্টেশনে অনীত থাকতে পারেন। কেশব বলেন, ‘‘এই কর্মসূচিতে কোনও রাজনীতি রং বা পতাকা থাকবে না, পাহাড়ের সব মানুষকে আমরা এতে যোগ দিতে অনুরোধ করছি। গণস্বাক্ষর
অভিযানও হবে।’’
এ দিন দলীয় অফিস নয়, দার্জিলিং স্টেশনে দাঁড়িয়েও কেশব প্রতিবাদের কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন।
মোর্চা নেতারা জানান, টয় ট্রেন রাজ্যের শুধু নয়, দেশের গর্ব। ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের তকমাকে এ ভাবে বেসরকারি সংস্থার হাতে তুলে দেওয়া কাম্য নয়। কেশব আরও জানান, আজ, শুক্রবার সকাল ১১টা থেকে সুকনা, রংটং, তিনধারিয়া, ঘুম, দার্জিলিং, কার্শিয়াং প্রতিটি স্টেশনে প্রতিবাদ জানানো হবে।
সম্প্রতি দেশের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ অন্যান্য বেশ কিছু সংস্থার সঙ্গে টয় ট্রেনও বেসরকারি পথে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন। টয় ট্রেনের টিকিট বিক্রি থেকে শুরু করে বিপণন, বিজ্ঞাপন, স্টেশন এবং রেলের জায়গা ব্যবহারের কথাও বলেছেন অর্থমন্ত্রী। কেশব বলেন, ‘‘টয় ট্রেনের লাইন ও স্টেশনের পাশে বহু মানুষ বছরের পর বছর বসবাস করছেন। এদের উচ্ছেদের বা সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হলে আমরা ছেড়ে কথা বলব না। প্রয়োজনে প্রতিরোধ হবে।’’
কেন্দ্রীয় সরকারের এই ঘোষণার পর থেকে পাহাড়ে বিজেপি নেতারা কিছুটা ব্যাকফুটে। টয় ট্রেনের মতো আন্তর্জাতিক ঐতিহ্য এবং পাহাড়ের আবেগকে নিয়ে অধিকাংশ নেতাই মন্তব্য করছেন না। রেলের বিভিন্ন শ্রমিক, কর্মী সংগঠন থেকে শুরু করে পর্যটন সংগঠন, ব্যবসায়ীরা সরকারি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সরব। সিদ্ধান্ত বিবেচনার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে চিঠিও পাঠানো হয়েছে।
এ দিন বিকেলের পর অবশ্য মুখ খোলেন দার্জিলিঙের বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তা। তাঁর দাবি, ‘‘বেসরকারিকরণ এবং লিজ় দেওয়ার মধ্যে যাঁরা পার্থক্য বোঝেন না, তাঁরা চেঁচাচ্ছেন। এখানে সম্পত্তি বিক্রি হচ্ছে না। এর বাণিজ্যিক লাভের ব্যবস্থা হচ্ছে। টয় ট্রেনের গরিমা, হেরিটেজ তকমায় কোনও আঁচ পড়বে না।’’
রাজু বিস্তা এ দিন পাল্টা কটাক্ষ করেন— পাহাড়ে সরকারি চা বাগান বিক্রি, মেট্রো ডেয়ারি বা গ্রেট ইস্টার্ন হোটেল যে ভাবে রাজ্য সরকার বিক্রি করেছিল, তা পাহাড়ের বন্ধুদের ভুললে চলবে না।