অনীত থাপা। ফাইল চিত্র।
শিলিগুড়ির নার্সিংহোমগুলিকে নিয়ে এ বার সরব হলেন পাহাড়ের বিনয় তামাংপন্থী মোর্চার সচিব নেতা তথা প্রাক্তন জিটিএ চেয়ারম্যান অনীত থাপা। সম্প্রতি জিটিএ-র এক গাড়ি চালকের করোনা চিকিৎসা নিয়ে দু’টি নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে। পাহাড়ে চিকিৎসা পরিষেবার অপ্রতুলতা সামনে আসে। সেখানে চিকিৎসার নামে শিলিগুড়ির নার্সিংহোমগুলি যা করছে, তা সঠিক নয় বলে প্রাক্তন জিটিএ চেয়ারম্যান জানিয়ে দিয়েছেন।
অনীত বলেছেন, ‘‘অতিমারিকে সামনে রেখে এটা ব্যবসা করার সময় নয়। নার্সিংহোমগুলির মানুষের জীবন বাঁচানো, সেবা এবং সুস্বাস্থ্যের জন্য তৈরি হয়েছে। এটাই তাঁদের প্রথম কর্তব্য। মানুষের জীবনকে নিয়ে মুনাফা করাটা নয়।’’
সম্প্রতি মাটিগাড়ার একটি নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে ভুয়ো বিল করে মোটা টাকা নেওয়ার অভিযোগ তোলেন পাহাড়ের বাসিন্দারা। ওই রোগী জিটিএ’র এক পদস্থ আধিকারিকের গাড়ির চালকের স্ত্রী। বিষয়টি রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষকর্তাদের জানানো হলে তাঁদের পরামর্শ মেনে পুলিশে অভিযোগও জানানো হয়। বিলে নানা অনিয়ম করা হয় বলে অভিযোগ। অ্যাম্বুল্যান্স চালকও মোটা টাকা নিয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে। অনীত ওই পরিবারের পাশে থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার আশ্বাস দেন।
কিছুদিন ধরেই শিলিগুড়ি শহরের নার্সিংহোমগুলির বিরুদ্ধে করোনা চিকিৎসার নামে লক্ষ লক্ষ টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠছে। একাধিক রোগীর পরিবার পুলিশ ও স্বাস্থ্য দফতরের কাছে অভিযোগও করেছেন। কিন্তু সাধারণ মানুষ এখনও দুর্ভোগেই। নার্সিংহোমগুলির বিরুদ্ধে করোনা চলাকালীন ব্যবস্থা নিতে কোনও অসুবিধা হলে করোনা চিকিৎসার বিভিন্ন খরচ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টাও হচ্ছে না বলে অভিযোগ। ভুক্তভোগী বাসিন্দাদের অভিযোগ, জনদরদি সরকার শিলিগুড়িতে কেন চুপ করে বসে রয়েছে তা স্পষ্ট নয়। আবার একাংশ বাসিন্দার অভিযোগ, কোনও বোঝাপড়ার কারণেও হয়তো নার্সিংহোমগুলিকে কিছু করার সাহস স্বাস্থ্য দফতরের নেই।
এর মধ্যে সমতলের পাশাপাশি ভুক্তভোগী পাহাড়বাসীরও। বিশেষ করে পাহাড়ে চিকিৎসা ব্যবস্থার নানা সমস্যা রয়েছে। করোনা চিকিৎসায় বুকের পরিস্থিতি জানার জন্য একটি সিটিস্ক্যান মেশিন পাহাড়ে নেই। এতেই দার্জিলিং বা কালিম্পঙের মানুষ কিছু টাকা জোগাড় করতে পারলেই সমতলে নেমে আসেন। বহু পাহাড়বাসী নিয়মিত বেসরকারি নার্সিংহোমের চিকিৎসার উপরেই নির্ভরশীল। নিয়মিত ডায়ালিসিস, ক্যানসার বা রক্তের সমস্যাজনিত রোগীদের পাহাড় থেকে শিলিগুড়িতে গাড়িতে আনা-নেওয়া করা হয়। সামান্য সিটি স্ক্যানের জন্য রোগীকে শিলিগুড়িতে আনতে হয়। সেই সময় করোনা চিকিৎসার নামে টাকা আদায়ের অভিযোগ মানতে পারছেন না অনেকেই। মোর্চা নেতারা বলছেন, চিকিৎসার উপযুক্ত খরচ শিলিগুড়ির নার্সিংহোমগুলি নিক। কিন্তু চিকিৎসক না দেখেই বিল, অযথা গাদা গাদা টেস্ট করানো, ভর্তির সময় মোটা টাকা দাবি করা, ওষুধের লাগামছাড়া বিল এসব দায়িত্বপ্রাপ্তরা কেন দেখছেন না তা পরিষ্কার নয়।