অনন্ত মহারাজ।
বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রাজ্যসভার সাংসদ পদে গ্রেটার নেতা অনন্ত রায়ের (মহারাজ) জয় নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া কোচবিহারে। গেরুয়া শিবিরের দাবি, রাজবংশী সমাজের প্রতি ‘সম্মান’ জানানোর যে প্রক্রিয়া অনন্তকে প্রার্থী ঘোষণার মাধ্যমে শুরু হয়েছিল, সে বৃত্ত সম্পূর্ণ হল। তৃণমূল গোটা বিষয়টিকে বিজেপির ‘দ্বিচারিতা’ হিসাবে দেখছে। সেই সঙ্গে বাংলাভাগ বা কোচবিহারকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ঘোষণা করা নিয়ে অনন্তের পাশাপাশি বিজেপি নেতৃত্বের অবস্থান স্পষ্ট করার দাবিও তুলেছে তারা। বামেদের বক্তব্য, তৃণমূল-বিজেপির ‘দ্বন্দ্বের ফায়দা’ নিলেন অনন্ত। শনিবার অনন্ত অবশ্য বলেন, “আমার বিরুদ্ধে যাঁরা বলছেন, তাঁরা সন্মাননীয়। যাঁর যেমন জ্ঞান, তিনি সে রকম বলছেন।”
রাজ্যসভায় সাংসদ পদে নির্বাচিত হওয়ার মাধ্যমে দলীয় রাজনীতির শুরুর প্রসঙ্গে অনন্তের বক্তব্য, “দলীয় রাজনীতিতে আসব ভাবিনি। বিজেপি আমায় মনোনীত করল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ-সহ বিজেপির বাকিদের কাছে এ জন্য আমি কৃতজ্ঞ।” রাজ্যসভায় তিনি কোন বিষয় নিয়ে সরব হতে চাইছেন? অনন্তের জবাব, “রাজ্যসভা তো লোকসভার মতো নয়। লোকসভায় যা পাশ হবে, তা রাজ্যসভায় আসবে। এ ক্ষেত্রে দলের নির্দেশ মেনেই কাজ করতে হবে।”
বিজেপি নেতাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা থাকলেও মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখেছিলেন অনন্ত। বিজেপির তরফে রাজ্যসভা সাংসদ হওয়ার পরে তাঁর প্রতিক্রিয়া, “আমি তৃণমূলের কোনও ক্ষতি করিনি। তৃণমূলের কোনও নেতাকে গালি দিইনি। ওদের সঙ্গে আমার কোনও শত্রুতা নেই।”
তৃণমূলের রাজ্য মুখপাত্র পার্থপ্রতিম রায় অবশ্য বলেন, “উনি বাংলা ভাগের পক্ষে না বিপক্ষে, সেটা আগে স্পষ্ট করুন। দ্বিচারিতা না করে বিজেপিরও ওই অবস্থান স্পষ্ট করা উচিত। ভোট পেতে বিজেপি নানা সময়ে নানা কিছু করে। এটা তেমনই।” বাংলা ভাগ নিয়ে বিতর্কে সরাসরি না ঢুকে বিজেপির কোচবিহার জেলা সভাপতি সুকুমার রায়ের মন্তব্য, ‘‘ও সব কিছুই কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বিষয়।” অনন্ত বলেছেন, “ভারত সরকার যা ভাল বুঝবে, সেটা করবে।”
সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদক অনন্ত রায় অবশ্য বলেন, “ওঁকে (অনন্ত) নিয়ে তৃণমূল-বিজেপি দুই দলের দড়ি টানাটানির সুযোগ নিয়েছেন অনন্ত। যাঁর মুখে নানা সময়ে বাংলা ভাগ, কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের কথা শোনা গিয়েছে। উনি রাজবংশী জনজাতির সবার নেতা নন, তাই কোচবিহার তো বটেই, উত্তরবঙ্গের কোন জেলাতেই ওঁর রাজ্যসভার সাংসদ হওয়ার সামান্যতম প্রভাব পড়বে না।”