প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
পঞ্চায়েত সদস্যের সামনে সালিশি সভায় আদিবাসী এক মহিলাকে বিবস্ত্র করে মারধরের অভিযোগ উঠল শিলিগুড়ির বাগডোগরা এলাকায়। ওই ঘটনার পর রবিবার বাগডোগরা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন নির্যাতিতা মহিলা। ঘটনার তদন্তে নেমে বাগডোগরা থানার পুলিশ চার জনকে গ্রেফতার করেছে। ধৃতদের মধ্যে রয়েছেন দুই মহিলাও। ধৃতদের নাম শিবা বাল্মীকি, প্রদীপ সরকার, ললিতা বাল্মীকি এবং গৌরী সরকার। তাঁরা প্রত্যেকেই বাগডোগরার ভুজিয়াপানির বাসিন্দা। যদিও পুলিশ জানিয়েছে, বিষয়টি যে ভাবে বলা হচ্ছে তা ঠিক নয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নির্যাতিতার স্বামী বিশেষ ভাবে সক্ষম এক জন ব্যক্তি। স্বামী এবং তিন শিশুকে নিয়ে দিনমজুরি করে সংসার চালান তিনি। ঘটনার সূত্রপাত ১৯ জুলাই। স্থানীয় বাসিন্দা তথা ওই কাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত প্রদীপের সঙ্গে এলাকার এক মহিলার বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে এই অভিযোগে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সালিশি সভা বসে। সেই সময় প্রদীপের স্ত্রী গৌরী সরকারের সঙ্গে হাতাহাতি শুরু হয়ে যায়। দু’পক্ষকে থামাতে গিয়ে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন নির্যাতিতাও। ওই ঘটনার পর দিন আবার সালিশি ডাকা হয়। অভিযোগ, সেখানে নির্যাতিতা উপস্থিত হতেই তাঁর উপর চড়াও হয় লোকজন। তাঁকে বিবস্ত্র করে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। ছিঁড়ে দেওয়া হয় তাঁর পরনের পোশাক। সেই সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য বুলবুলি সিংহ।
এর পর নির্যাতিতা রবিবার বাগডোগরা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। পরে পাল্টা অভিযোগও দায়ের হয় ৷ নির্যাতিতা মহিলা বলেন, ‘‘আমাকে বিবস্ত্র করে বেধড়ক মারধর করা হয়েছে। সালিশি সভায় উপস্থিত বেশ কয়েক জন পুরুষও আমাকে মারধর করেছে। এখন অভিযোগ করার পর আমাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হচ্ছে।’’
পঞ্চায়েত সদস্য বুলবুলি সিংহ বলেন, ‘‘মারধর বা হাতাহাতি হয়েছে ঠিকই। তবে বিবস্ত্র করে মারধর করা হয়নি। বাকিটা পুলিশ তদন্ত করে দেখুক।’’
শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের অতিরিক্ত ডিসি শুভেন্দ্র কুমার বলেন, ‘‘যেমনটা বলা হচ্ছে তেমনটা নয়। মহিলাকে বিবস্ত্র করে মারধর করা হয়নি। আমরা তদন্ত করছি। দু’টি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তার ভিত্তিতে চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে দু’জন পুরুষ এবং দু’জন মহিলা। তাঁরা আপাতত বিচার বিভাগীয় হেফাজতে রয়েছেন।’’