কর্তব্য: ওই দম্পতিকে মধ্যাহ্নভোজন করাচ্ছে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র।
বয়স তাঁর ৯২ বছর। কিন্তু বয়সের পরোয়া করেননি যখন জানতে পারেন যে স্ত্রীকে উপহার দেওয়া সোনার হার ছিনতাই হয়ে গিয়েছে। পরনের ধুতির কুঁচিটা ধরে দুষ্কৃতীর পিছনে ছুট দেন অমলেন্দু সুর। কিছুটা দূরে গিয়ে ধরেও ফেলেন দুষ্কৃতীকে। কলার ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেন দুষ্কৃতীকে। নবতিপর বৃদ্ধের এ হেন সাহসিকতাকে কুর্নিশ জানাল শিলিগুড়ি পুলিশ। পরে থানায় অভিযোগ জানাতে এলে থানার ঘরে বসিয়ে ওই দম্পতিকে মধ্যাহ্নভোজন করিয়ে গাড়িতে করে বাড়িতে ছেড়ে আসে পুলিশ।
মঙ্গলবার সকালে কাছারি রোডে প্যান কার্ড আনতে গিয়েছিলেন ডাঙ্গিপাড়ার বাসিন্দা অমলেন্দু সুর ও শিল্পীরানি সুর। শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের কাছে শৌচালয়ে গিয়েছিলেন অমলেন্দুবাবু। সেই সময় বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলেন শিল্পীদেবী। অভিযোগ, ওই সময় এক যুবক এসে কথার ছলে তাঁর সোনার হার ছিনতাই করে নিয়ে যায়। শৌচালয় থেকে বেরিয়ে সে-কথা জানতে পারামাত্রই দুষ্কৃতীর খোঁজে ছুট দেন। ছুটতে ছুটতে হাশমি চকের কাছে ধরে ফেলেন দুষ্কৃতীকে। সেখানেই পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
এর পর লিখিত অভিযোগ জানাতে থানায় হাজির হন বৃদ্ধ দম্পতি। তাঁরা থানায় পৌঁছতেই সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ আধিকারিকেরা ঘরে বসান তাঁদের। ধৃত দুষ্কৃতীর কাছ থেকে সোনার হার উদ্ধার করা হয়। এর পর দম্পতির বিভিন্ন অসুবিধার কথাও শোনেন থানার আইসি সুদীপ চক্রবর্তী। দম্পতির ওষুধের প্রয়োজন রয়েছে বলে জানতে পেরেই তাঁদের জন্য ওষুধ আনিয়ে দেন আইসি।
অনেক দুপুর হয়ে যাওয়ায় তাঁদের থানার ক্যান্টিনে নিয়ে গিয়ে মাছ-ভাত সহযোগে মধ্যাহ্নভোজন করান। এর পর থানার গাড়িতেই দম্পতিকে বাড়ি ছেড়ে আসা হয়। এ দিন থানায় বসে অমলেন্দু সুর বলেন, “স্ত্রীয়ের সোনার হার ছিনতাই হয়েছে জানার পর পিছু নিয়েছিলাম দুষ্কৃতীর। কিছু দূর যেতেই ধরে ফেলি। অনেকেই মারতে গিয়েছিল। কিন্তু পুলিশ ডেকে তাঁকে ধরিয়ে দিই। পুলিশ যেটা ঠিক বুঝবে সেটাই করবে।”