রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল চত্বরে পড়ে রয়েছেন অসুস্থ ব্যক্তি। ছবি: গৌর আচার্য।
ডান পায়ে জড়ানো ব্যান্ডেজ ঘিরে উড়ছে বহু মাছি। শুক্রবার সকাল থেকে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল চত্বরে এমন এক ব্যক্তিকে পড়ে থাকতে দেখা যায়। তিনি যেখানে পড়েছিলেন, সেখান থেকে একশো মিটারের মধ্যে জরুরি বিভাগ, বহির্বিভাগ-সহ বিভিন্ন ওয়ার্ডে ঢোকার প্রধান দুটি গেট। এ ছাড়া, চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী ও রোগীর পরিবারের লোকেদের যাতায়াতের রাস্তাও। তা-ও এ দিন কেন মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষ বা কর্মীরা অসুস্থ ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করলেন না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
সূত্রের দাবি, বুধবার রাতে রায়গঞ্জ শহরের উত্তর কলেজপাড়া এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ ওই ব্যক্তিকে অসুস্থ অবস্থায় মেডিক্যালে ভর্তি করান। এ দিন ওই ব্যক্তির মেডিক্যাল চত্বরে পড়ে থাকার খবর পেয়ে সেখানে পৌঁছন তাঁদের কয়েক জন। তাঁদের মধ্যে রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক স্তরের ছাত্রী ঋষিতা সরকারের অভিযোগ, তাঁরা ওই ব্যক্তিকে মেডিক্যালে ভর্তি করানোর পরে, তাঁর কোনও চিকিৎসা হয়নি। ভর্তি করানোর সময়ে ওই ব্যক্তির পায়ে যে ছেঁড়া ‘ব্যান্ডেজ’ ছিল, তা খোলা হয়নি। ওই ব্যক্তির ডান পায়ের সংক্রমণের জায়গা পরিষ্কার করে ওষুধ লাগিয়ে দেওয়া হয়নি।
বিষয়টি নিয়ে শোরগোল শুরু হতেই এ দিন দুপুরে মেডিক্যালের সহকারী সুপার বিপ্লব হালদারের সামনে মেডিক্যালের নিরাপত্তা রক্ষীরা ওই ব্যক্তিকে সেখান থেকে ‘স্ট্রেচার’-এ তুলে মেডিক্যালের চার তলায় পুরুষ সার্জিক্যাল ওয়ার্ডে ভর্তি করান। তিনি নিজের নাম চণ্ডী বলে জানান। তবে পদবি বা ঠিকানা বলতে পারেননি। তাঁর অভিযোগ, এ দিন সকালে পুরুষ সার্জিক্যাল ওয়ার্ডে কয়েক জন তাঁকে জোর করে ওয়ার্ড থেকে বার করে দেন। যদিও অভিযোগ মানতে চাননি মেডিক্যালের সহকারী সুপার। তাঁর দাবি, ‘‘ওই ব্যক্তি মানসিক ভারসাম্যহীন ও ভবঘুরে। তিনি কিছুতেই ওয়ার্ডে থাকতে চাইছিলেন না। তিনি জোর করে বাইরে বেরিয়ে আসেন।” ঋষিতা সরকারের দাবি, “ভদ্রলোক ভবঘুরে ও মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় তাঁকে এ দিন মেডিক্যালের কর্মীরা ওয়ার্ড থেকে বার করে দেন। তিনি দীর্ঘক্ষণ মেডিক্যাল চত্বরে পড়ে থাকলেও, তাঁকে মেডিক্যালের কেউ ওয়ার্ডে নিয়ে না গিয়ে অমানবিকতার নজির গড়লেন। আমরা পুরো বিষয়টি নিয়ে মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষকে জানানোর পরে, তাঁকে ওয়ার্ডে ফেরানো হয়।” যদি ওয়ার্ডে ওই ব্যক্তির চিকিৎসা না হওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিপ্লব।